রাফায় ইসরাইলের হামলার জবাবে নতুন করে জরুরি ব্যবস্থা নিতে দক্ষিণ আফ্রিকা জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) আবেদন জানিয়েছে। এই আবেদনের ওপর শুনানি হবে আজ বৃহস্পতি ও আগামীকাল শুক্রবার। আদালতকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। এতে আরও বলা হয়, জানুয়ারিতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা আইসিজেতে গণহত্যার অভিযোগে মামলা করে। সেই মামলা এখনো চলমান। তারই অংশ হিসেবে ইসরাইলের বিরুদ্ধে নতুন করে জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এই মামলায় আনুষ্ঠানিকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে মিশর, তুরস্ক ও কলম্বিয়া। ওদিকে বিশ্বনেতাদের সতর্কতাকে উপেক্ষা করে গাজায় নির্বিচারে সামরিক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। তারা নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে সোমবার দিবাগত রাতে যুদ্ধবিমান থেকে বোমা হামলা করেছে। এতে মধ্য গাজায় এই শরণার্থী শিবিরে শিশুসহ কমপক্ষে ১৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার উত্তরে ‘ইভাকুয়েটিং জোন’ এবং জাবালিয়ার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো ঘিরে রেখেছে ইসরাইলি ট্যাংক, বুলডোজার এবং সাঁজোয়া গাড়ি।
এ অবস্থায় তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেছেন- আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে ক্রমাগত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে ইসরাইল। তিনি রাজধানী আঙ্কারায় সংবাদ সম্মেলনে বলেন, গাজা উপত্যকায় ইসরাইল যে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে তা গণহত্যা। আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারকে পদদলিত করছে ইসরাইল। রাফায় তাদের আগ্রাসন বন্ধে আরও একবার ব্যর্থ হয়েছে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা। এ মাসের শুরুর দিকে আইসিজেতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা গণহত্যার অভিযোগে করা মামলায় তুরস্কের যোগ দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) বলেছে, রোববার থেকে তারা রাফা ইন্দোনেশিয়ান ফিল্ড হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। ইসরাইলি হামলার প্রেক্ষিতে তারা এ পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়। এক বিবৃতিতে এমএসএফ বলেছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে বেসামরিক অবকাঠামো এবং মেডিকেল স্থাপনার বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমিক হামলা দেখে আসছে এমএসএফ। এর প্রেক্ষিতে যেহেতু নতুন করে হামলা আসন্ন, তাই রাফা ইন্দোনেশিয়ান ফিল্ড হাসপাতাল ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। ওই হাসপাতালে থাকা ২২ জন রোগীকে তারা অন্য স্থাপনাগুলোতে স্থানান্তর করেছে। কারণ, তাদের আর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছিল না এমএসএফ।
এক্সে আলাদা এক পোস্টে তারা বলেছে, গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কমপক্ষে ১২টি স্বাস্থ্য বিষয়ক স্থাপনা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে তারা। এসব স্থাপনায় সহিংস ২৬টি হামলা হয়েছে। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্র সহ ঘনিষ্ঠ প্রায় সব মিত্র সমর্থন না করলেও দক্ষিণ গাজায় সামরিক অভিযান বিস্তৃত করছে ইসরাইলি বাহিনী। তারা রাফার পূর্বা লে অনেক গভীরে প্রবেশ করেছে। ৭ই অক্টোবর থেকে ইসরাইলের হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩৫ হাজার ১৭৩ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন ৭৯ হাজার ৬১ জন।