গাজার ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা উত্তরা লের জাবালিয়া উদ্বাস্তু শিবিরে ‘ফাইটিং কম্পাউন্ড’ প্রতিষ্ঠা করেছে। এর ফলে তারা ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিভিন্ন ভবনের মধ্য দিয়ে দ্রুত এবং নিরাপদে চলাচল করতে পারছে। এতে করে আগের মতো তাদেরকে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে না। আর রাস্তায় তাদের দেখামাত্র ইসরাইলি হামলার যে শিকার হতো, তা থেকেও রক্ষা পাচ্ছে। যুদ্ধ পর্যবেক্ষকেরা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইসরাইলি বাহিনী ১১ মে থেকে জাবালিয়ায় যুদ্ধ করছে। তারা জানিয়েছে, এই এলাকার ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা গাজার অন্যান্য অংশের চেয়ে অনেক বেশি ‘সাহসী’ আর তারা এখন পর্যন্ত যুদ্ধে ‘সবচেয়ে সহিংস’ভাবে লড়াই করছে। ইনস্টিটিউট ফর দি স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ) এবং ক্রিটিক্যাল থ্রেটস প্রজেক্ট (সিটিপি) তাদের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিরক্ষা থিঙ্ক ট্যাঙ্ক জানিয়েছে, জাবালিয়া দখল করার জন্য দুই সপ্তাহ ধরে চলা যুদ্ধে দেখা যাচ্ছে যে হামাস ‘সেখানে পরিকল্পিত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে’ এবং ইসরাইলি বাহিনীর ওপর তাদের ‘অস্বাভাবিক উচ্চ মাত্রার আক্রমণ’ প্রমাণ করেছ যে হামাস এখনো তাদের ’যুদ্ধ ক্ষমতা কার্যকর’ রাখতে পেরেছে। এমনকি অক্টোবরে তাদের জাবালিয়া কমান্ডার নিহত হওয়া সত্ত্বেও তারা দুর্বল হয়নি। আইএসডব্লিউ/সিটিপি জানায়, ‘হামাস তার সামরিক শাখাকে প্রচলিত সামরিক বাহিনীর মতো সঙ্ঘবদ্ধ করেছে এবং তা পরিচালনার জন্য অভিজ্ঞ সামরিক কমান্ডারদের ব্যাপক বিকল্প তৈরী করেছে।’ তারা জানায়, ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর তীব্র চাপ সত্ত্বেও অব্যাহতভাবে যুদ্ধ করার জন্য হামাস এই প্রচলিত সামরিক কাঠামো ব্যবহার করছে।
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) আদেশ মানা বাধ্যতামূলক এবং সকল পক্ষ অবশ্যই তা মেনে চলবে।
জাতিসঙ্ঘ শীর্ষ আদালত রাফায় ইসরাইলি অভিযান বন্ধ করার নির্দেশ দেয়ার পর শুক্রবার গুতেরেস এ কথা বলেছেন বলে তার মুখপাত্র জানিয়েছেন।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, আদালতের আদেশ মানা বাধ্যতামূলক এবং তিনি বিশ্বাস করেন সকল পক্ষই আদালতের এ রায় মেনে চলবে।
লেবানন থেকে ইসরাইলে ২০টি রকেট নিক্ষেপ: দক্ষিণ লেবানন থেকে উত্তর ইসরাইলের উচ্চ গ্যালিলি এলাকায় প্রায় ২০টি রকেট নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। গতকাল শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, রকেট নিক্ষেপের কারণে ইসরাইলের ডোভেভ এবং মানারা এলাকায় বেশ কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা শনাক্ত করা হয়েছে। তবে এতে কোনো নিহত বা আহত হয়নি বলেও জানানো হয়েছে। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে- তারা লেবানন থেকে নিক্ষেপ করা রকেটের উৎসগুলোতে আঘাত করেছে।
সামরিক বাহিনী যোগ করেছে, ইসরাইলি যুদ্ধবিমান দক্ষিণ লেবাননের সোয়ানেহ এবং রামিয়েহ এলাকায় বেশ কয়েকটি ‘হিজবুল্লাহ সামরিক কাঠামো’, ইয়ারুন এলাকায় ‘হিজবুল্লাহ সন্ত্রাসী অবকাঠামো’ এবং হানাইন এলাকায় ‘হিজবুল্লাহ সন্ত্রাসীদের’ আঘাত করেছে। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরাইলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ৩৫ হাজার ৭০৯ জনে পৌঁছেছে। তাদের মধ্যে অন্তত ১৫ হাজার শিশু রয়েছে। সূত্র : আল জাজিরা, এএফপি