বাংলাদেশে রান্নার একটি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন কলকাতার সঞ্চালক-অভিনেত্রী সুদীপা চ্যাটার্জি। এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের অভিনেত্রী তারিন জাহানের পাশে দাঁড়িয়ে গরুর মাংস রান্না করতে দেখেন সুদীপা। এরপর হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের রোষানলে পড়েন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্ষণ ও খুনেরও হুমকি পাচ্ছেন। ভয়ে নিজের ছেলেকে স্কুলেও পাঠাতে পারছেন না।
এদিকে অভিনেত্রী সুদীপা চ্যাটার্জির ভক্তরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, যারা ধর্মের কথা বলে আবার ধর্ষণের হুমকি দেয়, তারা আসলে ধর্মকে ব্যবহার উগ্রবাদ ও সহিংসতা ছড়িয়ে ভারতবর্ষের ধর্মনিরপেক্ষ ইমেজ নষ্ট করার জন্য। ওরা হিন্দু নয়, ধার্মিকও নয়। ওদের পরিচয় উগ্রবাদী সন্ত্রাসী। রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া। প্রকৃত হিন্দুরা বিশ^াস করেন, সবার ওপর মানুষ সত্য, তার ওপরে নেই। তাদের যাকে একজন মানুষের জীবনের মুল্য অন্য যেকোন প্রাণীর জীবনের চেয়ে বেশী। একজন প্রকৃত হিন্দু কখনো খুনী , ধর্ষক হতে পারে না।
বর্তমান পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে সুদীপা বলেন, ‘ভালো থাকার চেষ্টা করছি। এতদিন হয়ে গেল আজও আমার ছেলেটাকে স্কুলে পাঠাতে পারিনি। কিছু দিন পর হয়তো পাঠাতে পারব। পুলিশ খুব সাহায্য করছে। ওরা জানিয়েছে, নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টা করবে।’ এর আগে নেটিজেনদের রোষানল পড়ে ফেসবুক লাইভে এসে ক্ষমা চান সুদীপা। তার ভাষায়— ‘আমি ক্ষমাপ্রার্থী আবেগে আঘাত দেওয়ার জন্য। আগামী দিনে মাথায় রেখে চলব। আমার না সত্যি মাথায় আসেনি এটা হতে পারে।’ নিজের অবস্থান পরিষ্কার করে সুদীপা চ্যাটার্জি বলেন, ‘অনেক মানুষ বিতর্ক জন্ম দিতে ভালোবাসেন। এর আগেও এটা দেখেছি। তবে তারা কেউই সত্যিটাকে জানতে চায় না। কেউই দেখেনি নিজের চোখে। যতজন এই নিয়ে বিদ্বেষমূলক পোস্ট করেছে, তারা জানেই না পুরো ব্যাপারটা। আমি না গরুর মাংস খেয়েছি, না গরুর মাংস রান্না করেছি।’ ‘কোরবানির ঈদ উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে গিয়েছিলাম। তাদের দেশের জাতীয় খাদ্যের মধ্যে পড়ে গরুর মাংস। কারো ধর্মীয় রুচিতে বাধা দেওয়া আমার শিক্ষার মধ্যে নেই। আমি যদি নিজের ধর্মকে সম্মান করি, তাহলে অন্যের ধর্মাচরণে বাধা দিতে পারি না, এটা আমার মত।’ বলেন সুদীপা চ্যাটার্জি।