রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন

পর্যটন ব্যবসার আড়ালে শুকর পাচারের অভিযোগ: হুমকীর মুখে বন্য প্রাণী

মনির আহমদ কক্সবাজার
  • আপডেট সময় শনিবার, ৬ জুলাই, ২০২৪

বন্য প্রাণীদের অভয়ারণ্যে পর্যটন কেন্দ্র করে পর্যটন ব্যবসার আড়ালে বন্য শুকর শিকার, হত্যা, আপ্যায়ন ও পাচারের অভিযোগ উঠেছে এসএআরপিভি’র পর্যটন কেন্দ্রের কেয়ার টেকার ও এক সিজিপি সদস্যের বিরোদ্ধে। পর্যটন কর্তা অস্বীকার করলেও ঘটনার সত্যতা মিলেছে অভিযুক্তদের বক্তব্যে। জনৈক প্রত্যক্ষদর্শী হত্যা করা শুকরের ছবি তুলে প্রকাশের জেরে শুরু হয় তোলপাড়। ঘটনাস্থল কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফাসিয়াখালী রেঞ্জের রিংভং বনবিটের রিজার্ভ সংলগ্ন লামা বনবিভাগের ইয়াংছা বনবিটের আড়াইমাইলের এসএআরবি পর্যটন স্পট। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে শুক্রবার বিকালে পৌঁছি ৩ সাংবাদিক জানতে পারি পর্যটন স্পটটির মালিক এনজিও এসএআরপিভি (ঝঅজচঠ)। ঘনাস্থল লামা বনবিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন হলেও সংযুক্ত কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের রিংভং সংলগ্ন বন্যপ্রাণীর বিচরনভুমি এটি। অভিযুক্ত ও এলাকাবাসীর দেয়া তথ্যমতে জালের ফাঁদ বসিয়ে বন্য শুকর ধরে পাচার করেন তারা। চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে এনজিও এসএআরপিভি (ঝঅজচঠ)’র পর্যটন কেন্দ্রের কেয়ার টেকার অনিল চাকমা এবং রিংভং বনবিটের সিজিপি সদস্য কামালের বক্তব্যে। পর্যটন কেন্দ্রের কেয়ার টেকার অনিল কুমার নিজেকে জড়িত নয় দাবী করে বলেন, প্রতিবেশী কামাল উদ্দিন রিংভং বনবিটের একজন সিজিপি সদস্য। সে-ই কোথাও থেকে দুইটি শুকর ধরে এনে তার পর্যটন অফিসে এনেছিল। কিন্তু দুইজনকে মুখোমুখি একে অপরের বিরোদ্ধে দোষ চাপালেও নিকটস্থ ফাসিয়াখালী রেঞ্জের রিংভং বিটের উচিতার বিল সংলগ্ন এলাকা থেকে জালের ফাঁদ বসিয়ে একটি বাচ্চা সহ মা শুকরকে ধৃত করে মা শুকরকে পিটিয়ে হত্যা এবং বাচ্চা শুকরটিকে খাগড়াছড়ি থেকে আসা কিছু ব্যক্তির কাছে বিক্রীর চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রমান পাওয়া যায়। পর্যটন কেন্দ্রের মালিক এসএআরপিভি (ঝঅজচঠ)’র চকরিয়া শাখার আঞ্চলিক পরিচালক কাজী মকসুদুল আলম মুহিদ। এ ব্যাপারে আঞ্চলিক পরিচালক কাজী মকসুদুল আলম মুহিদকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়। নিয়মিত টহলে এসেছেন দাবী করে কেয়ার টেকার অনিল চাকমার পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, তার কেয়ার টেকার কখনো এ কাজ করতে পারেন না। হয়তো কেউ অন্যখান থেকে মেরে এনে কেয়ার টেকার অনিলের উপর দোষ চাপাচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, ফাসিয়াখালী রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মেহেরাজ উদ্দিন জানতে চেয়েছেন। কিন্তু সত্যতা পাননি। রিংভং বনবিট কর্মকর্তা খাইরুল আমিন প্রকাশ খসরুল আমিন বলেন, আমি শুনে তদন্ত করেছি এবং অভিযুক্ত অনিল ও কামালকে রেঞ্জ অফিসে নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছি কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোন তথ্য আমরা পাইনি। যদি হয়ও ওটা লামার ঘটনা বলে দায়সারা জবাব দেন ওই বিট কর্মকর্তা। এলাকা সংশ্লিষ্ট লোকজন জানান, অনিল এবং কামাল দুইজনই পরস্পর ঘনিষ্ঠ। প্রায়শ: বন্য শুকর মেরে মোটা টাকার বিনিময়ে পর্যটকদের আপ্যায়ন করেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে। রেঞ্জার মেহেরাজ উদ্দিনকে বার বার ফোন দিয়ে ও পাওয়া না যাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নাই। ঘটনা ধামাচাপা দিতে পর্যটন কর্তৃপক্ষ ও ফাসিয়াখালী রেঞ্জ কর্তৃপক্ষের দৌঁড়ঝাপ চলছে বলে সুত্রে জানা গেছে। দুই পক্ষের কর্তাদ্বয়ের অস্বীকার এবং ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চকরিয়া-লামা দুই বনবিভাগের বন্যপ্রাণী হুমকীর মুখে পড়েছে। বন্য শুকর হত্যা ও পাচার কারীদের বিরোদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী করেছেন সচেতন মহল। সচেতন মহলের মতে অভিযুক্ত শিকারী অনিল চাকমা ও কামালের বক্তব্যে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল হুমকীর মুখে ফেলানো অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানান তারা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com