কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহালের প্রতিবাদ ও শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের সময় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম শহরে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। গত বৃহস্পতিবার এক যৌথ প্রতিবাদ বার্তায় কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের চলমান যৌক্তিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি পালনের সময় পুলিশ অন্যায়ভাবে বাধা প্রদান করে। একপর্যায়ে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশ মেধাবী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলিতে প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক আহত হন। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ সারাদেশের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামলে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বাধা দেয়। আমরা মেধাবী শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর এই ন্যক্কারজনক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
প্রতিবাদ বার্তায় আরো বলেন, ‘যেকোনো ন্যায্য দাবিতে আন্দোলন করা জনগণের সাংবিধানিক অধিকার। সাধারণ শিক্ষার্থীরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিনা উস্কানিতে পুলিশ তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। কার স্বার্থে এবং কেন জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পরিচালিত পুলিশ বাহিনী এই ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে, আমরা তা জানতে চাই।’
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ‘কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের দোহাই দেয়া অবৈধ এই সরকার অযৌক্তিক কোটা প্রথাকে সমর্থন দিয়ে দেশের বেশিরভাগ মেধাবীদের বঞ্চিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যা কখনোই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কিংবা সংবিধানের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। এমনকি মুক্তিযোদ্ধারাও এই অন্যায্য কোটা প্রথার বিরুদ্ধে কথা বলছেন। বর্তমান অবৈধ সরকার যেকোনো আন্দোলনকেই ভয় পায়। তাই রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে তাদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করে জনগণের ওপর লেলিয়ে দেয়। আমরা মনে করি, অবৈধ সরকারের প্রত্যক্ষ মদদেই শিক্ষার্থীদের ওপর এমন লজ্জাজনক হামলা চালানো হয়েছে। ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তব্য সেটাই প্রমাণ করে। আমরা উদ্বেগের সাথে আরো লক্ষ করছি, পুলিশের পাশাপাশি সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের বাধা প্রদান ও তাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।’
তারা আরো বলেন, ‘আমরা পুলিশ ও ছাত্রলীগের এই হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদের পাশাপাশি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসার জোর দাবি জানাচ্ছি। সেইসাথে অতি দ্রুত শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে তাদেরকে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। অন্যথায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে দাঁড়ালে সৃষ্ট যেকোনো ভয়াবহ পরিস্থিতির দায় সরকার ও তাদের লাঠিয়াল বাহিনীকেই নিতে হবে।’-প্রেস বিজ্ঞপ্তি