সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। পবিত্র কাবা শরিফের পর এটিই সবচেয়ে বড় ইফতার আয়োজন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। প্রতিদিন প্রায় দশ হাজার রোজাদার এখানে একসঙ্গে ইফতার করেন। ১৯৩৫ সালে খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লাহ (রাঃ) নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এ মাহফিলের আয়োজন শুরু হয়। তার মৃত্যুর পরও মিশন কর্তৃপক্ষ এই ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। ইফতার মাহফিলের পরিধি ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়ে আজ বিশাল আকার ধারণ করেছে। শাহ সুফি খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লাহর (রাঃ) রওজা প্রাঙ্গণে প্রতিদিনের এই ইফতার আয়োজনে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা ছুটে আসেন। বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা পেতে অস্থায়ী টিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। ছয় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক ইফতার ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত রয়েছেন। ইফতারির মধ্যে খেজুর, ছোলা, সিঙ্গাড়া, ফিন্নি, চিড়া, কলা ও ডিম পরিবেশন করা হয়। পার্শ্ববর্তী ১৫-২০টি মসজিদেও ইফতার সরবরাহ করা হয়। প্রতিদিন ১৬ মণ দুধ দিয়ে ফিন্নি, ১০ হাজার সিদ্ধ ডিম এবং বিপুল পরিমাণ সিঙ্গাড়া তৈরি করা হয়। স্বেচ্ছাসেবকরা বিকেল ৪টা থেকে ইফতার বিতরণ শুরু করেন। আয়োজকদের মতে, প্রতিদিন প্রায় দেড় লাখ টাকা ব্যয় হয়, যা ভক্তদের দানের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়। পুরো রমজানে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ব্যয় হয়, তবে কখনো কোনো ঘাটতি হয় না। নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনের নির্বাহী সদস্য ও ইফতার মাহফিলের তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল আনোয়ার রঞ্জু জানান, প্রতিদিন প্রায় দশ হাজার প্লেট ইফতার প্রস্তুত করা হয় এবং অতিথিরা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হন না। সাতক্ষীরা জেলার পুলিশ সুপার বলেন, হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে ইফতার করা বিশেষ সৌভাগ্যের বিষয়। এটি আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে। এভাবেই প্রতি বছর রমজানজুড়ে চলতে থাকে নলতার এই ব্যতিক্রমী ও বৃহৎ ইফতার আয়োজন, যা বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছে।