শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন

জয়-টিউলিপের সহায়তায় রূপপুর থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাৎ হাসিনার

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৪

ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় এবং ভাগ্নি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের সহায়তায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প থেকে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি আত্মসাৎ করেছেন সদ্যসাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত শনিবার (১৭ আগস্ট) গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে নিজস্ব অনুসন্ধানের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে গ্লোবাল ডিফেন্স করপোরেশন। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প নামে পোর্টালটি ২০১৮ সালে চালু হয়। বিভিন্ন দেশের সামরিক ও প্রতিরক্ষা খাতে দুর্নীতির অনুসন্ধান করে থাকে তারা।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাট্রম মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এ অর্থ আত্মসাতের সুযোগ করে দেয়, যাতে মধ্যস্থতা করেন জয় ও টিউলিপ। প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল প্রকল্প রূপপুরের পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র।
এতে আরো বলা হয়, রাশিয়ার সহযোগিতায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটির নির্মাণে খরচ ধরা হয় ১ হাজার ২৬৫ কোটি ডলার। প্রয়োজনের তুলনায় যা অনেক বেশি। মালয়েশিয়ার একটি ব্যাংকের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে এই বাজেট থেকে ৫০০ কোটি ডলার আত্মসাতের সুযোগ করে দেয় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা রোসাট্রম। নিজের ভাগ্নি (শেখ রেহানার মেয়ে) টিউলিপ সিদ্দিকের মধ্যস্থতায় রাশিয়ার সাথে এ চুক্তি করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর এ মধ্যস্থতার বিনিময়ে পাচার করা অর্থের ৩০ শতাংশ পেয়েছেন টিউলিপ, শেখ রেহানা ও পরিবারের কয়েকজন সদস্য।
২০১৩ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে শেখ হাসিনার সাক্ষাতের সময় সঙ্গী ছিলেন টিউলিপ সিদ্দিক। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্পের দাবি, সে সময় ঢাকা-মস্কোর বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তির মধ্যস্থতাও করেন তিনি।
২০০৯ সালে ‘প্রচ্ছায়া লিমিটেড’ নামে একটি ভুয়া কোম্পানি চালু করেন টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা ও চাচা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক। যুক্তরাষ্ট্রেও জুমানা ইনভেস্টমেন্ট নামে একটি কোম্পানি রয়েছে তাদের। গ্লোবাল ডিফেন্স কর্প বলছে, এ কোম্পানির মাধ্যমেই বিভিন্ন দেশের অফশোর অ্যাকাউন্টে অর্থ পাচার করতেন শেখ হাসিনা। তাদের এ কোম্পানিটি ডেসটিনি গ্রুপ নামে একটি চিটিং ফান্ড কোম্পানির সাথে যুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। রাশিয়ার সহযোগিতায় পাবনার রূপপুরে নির্মাণ হচ্ছে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। এটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। এটি তৈরি হলে এর দুটি ইউনিট থেকে পাওয়া যাবে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। প্রকল্পটির ৯০ ভাগ অর্থায়ন হচ্ছে রাশিয়ার ঋণে। ১০ ভাগের জোগান দিচ্ছে সরকার। প্রকল্পটিতে ভিভিইআর প্রযুক্তির তৃতীয় প্রজন্মের পরমাণু চুল্লি ব্যবহৃত হচ্ছে। যার প্রত্যেকটির উৎপাদন সক্ষমতা ১২০০ মেগাওয়াট করে। চলতি বছর প্রথম ইউনিট এবং ২০২৫ সালে দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের প্রথম ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়ামের প্রথম চালান দেশে আসে। পরে তা আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে রাশিয়া। এদিকে, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি বলেছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছুটা দেরি হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার সকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো: তৌহিদ হোসেনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের পর একথা জানান তিনি। রুশ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে কিছুটা দেরি হতে পারে। তবে তা কঠিন কিছু নয়।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com