অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তেজগাঁওয়ে সরকারপ্রধানের জন্য নির্ধারিত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অফিস করবেন। সরকারপ্রধানের জন্য নির্ধারিত এ স্থাপনা ব্যবহারযোগ্য করতে দিনরাত কাজ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে কার্যালয়টি প্রস্তুত রয়েছে। আগামী রোববার থেকে অফিস করতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা। দায়িত্বশীল একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধান নির্বাহী তথা সরকারপ্রধান অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি কার্যালয়। ১৯৯০ সাল থেকে দেশের রাজধানী ঢাকা শহরের তেজগাঁওয়ে পুরোনো জাতীয় সংসদ ভবনটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সাধারণত এখানে প্রতিদিন সরকারি কার্যাবলী সম্পাদন করেন এবং এখানেই মন্ত্রিপরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গঠিত বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার গঠিত হয়। সরকার গঠনের পর থেকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অফিস করছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ক্ষমতাচ্যুত সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের দিন (৫ আগস্ট) আন্দোলনরত জনতার একটি অংশ ঢুকে পড়ে এ স্থাপনায়। ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ফলে অনেকটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে জোরেশোরে কাজ শুরু হয়। বর্তমানে কার্যালয়টি প্রস্তুত রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সকালে বিভিন্ন সংস্থার পদস্থ কর্মকর্তারা কার্যালয়টি পরিদর্শন করেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে রোববার থেকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তেজগাঁওয়ে অফিস করবেন।
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীত্ব ছেড়ে বোনকে নিয়ে দেশ ছাড়ার পর কার্যালয়ে ঢুকে পড়ে হাজারো মানুষ। সেখানে বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুরের পাশাপাশি বিভিন্ন জিনিসপত্রও নিয়ে যায় লোকজন। কার্যালয়ের অভ্যর্থনা কক্ষ, হলরুম, সম্মেলনকক্ষসহ বিভিন্ন কক্ষে প্রবেশ করে ব্যাপক কাচ ভাঙচুর করে। হলরুমে সাউন্ড সিস্টেম ভাঙচুর করাসহ চেয়ার, টেবিল, সোফা, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মনিটর, বিভিন্ন ধরনের বাতি, ফুলদানিসহ ভেতরে যা ছিল মোটামুটি সবই নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনার পর ১২ আগস্ট এ স্থাপনাটি মেরামত ও সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়। তখন সেখানে গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা প্রবেশ করেন। পরিস্থিতি ভয়াবহতা দেখে অল্প সময় তা মেরামত করা কঠিন মনে হলেও দুই শতাধিক লোকজনকে দিয়ে দিনরাত কাজ করিয়ে তা ১২-১৩ দিনের মধ্যে ব্যবহার উপযোগী করা হয়। সেখানে পূর্তকাজ, ফার্নিচার এবং ইলেক্ট্রোমেকানিক্যালসহ ব্যয় কমপক্ষে একশ কোটি টাকার মতো খরচ হয়েছে বলে জানা যায়।