শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন

সদরঘাটে চাঁদাবাজি-অনিয়ম বন্ধ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দেশের অন্যতম বৃহৎ নদীবন্দর সদরঘাটকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি, মাদকের কারবার, জুয়া খেলা, কুলিদের বেপরোয়া কার্যক্রমসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। তবে সরকার পতনের পর পাল্টে গেছে সদরঘাটের চিত্র। এখন অনেকটা স্বস্তিতেই রয়েছেন যাত্রীসহ আশপাশের সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা। তবে বর্তমানে যাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম বলে জানা গেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সদরঘাটে আশেপাশের দোকানগুলোতে কিছু কিছু জিনিসপত্রের দাম কমেছে। খাবারের পরিমাণেও পরিবর্তন এসেছে। আগে নৌকাঘাটে চাঁদা তুলতো একটি প্রভাবশালী চক্র, এখন সেটা বন্ধ। একসময় কুলিদের লাল-নীল-হলুদ বাহিনীর সদস্যরা অভিনব কৌশলে যাত্রীদের জিম্মি করে চাঁদা আদায় করতেন। কিন্তু সেই নানা রঙের বাহিনীর সদস্যদের আর সদরঘাটে দেখা যাচ্ছে না। সদরঘাটের আশেপাশে প্রকাশ্যে মাদকদ্রব্য কারবারি চলতো, এখন সেটাও বন্ধ। তবে গোপনে মাদক কারবারি চলছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। এমভি সোনার তরী-৩ এর কর্মচারী বলেন, সদরঘাটের এমন চিত্র বিরল। এর আগে কখনো এমন শৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখার সুযোগ হয়নি। আশেপাশে টোকাইরা মাদকদ্রব্য সেবন ও বিক্রি করতো। এখন তাদের আর দেখা যায় না। লে র ভাড়া এখন সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দামে নেওয়া হচ্ছে। অন্যায়ের কোনো সুযোগ নেই।
ফল বিক্রেতা আব্দুল করিম বলেন, এখন আমরা অনেক ভালো আছি। লাভের অংশের অনেকটা চাঁদাবাজদের দখলে চলে যেত। এখানে প্রত্যেক দোকান থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা নিত। সদরঘাটে প্রবেশ করা থেকে শুরু করে বের হওয়া পর্যন্ত চাঁদাবাজীর সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে এখন এমন কোনো কিছুই নেই। বউ বাচ্চা নিয়ে সুখে আছি। লাভের অংশে আর কেউ ভাগ বসাতে পারছে না।
জারিফ হাসান নামে সদরঘাটের এক খাবারের দোকানের ম্যানেজার বলেন, জিনিসপত্রের অতিরিক্ত দাম, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কারণে আমাদের খাবারের দাম বেশি রাখতে হয়েছে। এখনো দেশে জিনিসপত্রের দাম তেমন কমেনি, কিন্তু চাঁদাবাজী কমেছে। চাঁদাবাজীর কারণে লাভের একটা বড় অংশ চলে যেত। এখন চাঁদাবাজী না থাকায় প্রতি প্লেটে খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছি। জিনিসপত্রের দাম কমলে খাবারের দামও কমবে।
হাসান মিয়া একজন সাধারণ যাত্রী। ব্যবসায়িক কাজে প্রায়ই সদরঘাটে যাওয়া আসা। তিনি বলেন, আগে সদরঘাটে বলতেই সবার আগে মাথায় আসতো দুর্নীতি, চাঁদাবাজ। তবে এখন এমন কোনো কিছুই আর দেখছি না। ভাড়াতেও এখন তেমন দুর্নীতি নেই। চাঁদাবাজরা সাধারণ মানুষদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছিল। এখন চাঁদাবাজীর কোনো সুযোগ নেই।
কাপড় ব্যবসায়ী তরিকুল ইসলাম বলেন, আমার কাছে ছাত্রলীগের পোলাপানরা এসে জোর করে চাঁদা তুলতো, না দিলে ভয়ভীতি দেখাতো। কিন্তু বর্তমানে কেউ চাঁদা তুলতে আসে না। আমরা এখন খুব স্বস্তিতে আছি। এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সোলেমান বলেন, সদরঘাটের চাঁদাবাজিসহ অন্যান্য অনিয়ম বন্ধের জন্য আমরা আগে থেকেই কাজ করছি। এ ধারাবাহিকতা আমাদের চলমান থাকবে। বর্তমানে পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য পরবর্তীতে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হয়, করবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com