সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের সব অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় একসঙ্গে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে চীন ও মিশর। গতকাল শুক্রবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংকট মোকাবিলায় কায়রোর সঙ্গে কাজ করবে বেইজিং। মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফেরাতে উভয় দেশের আলোচনা জারি রাখা উচিত বলে মনে করেন ওয়াং ই। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এতে বলা হয়, শুক্রবার বেইজিংয়ে মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেলাত্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ওয়াং ই। উভয় দেশই সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন বলে জানানো হয়েছে। বৈঠকে সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখ-তার প্রতি সম্মান জানানোর আহ্বান জানিয়েছে উভয় দেশ। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহের রোববার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক দখলের মাধ্যমে সিরিয়াকে আসাদ মুক্ত বলে ঘোষণা দেন বিদ্রোহীরা। ওই দিন রাশিয়ার সহায়তায় সিরিয়া থেকে পালিয়ে মস্কোতে রাজনৈতিক আশ্রয় পান দেশটির স্বৈরশাসক বাশার আল আসাদ ও তার পরিবার। এর মাধ্যমে দেশটিতে আসাদ পরিবারের টানা ৫০ বছরের বেশি সময়ের ক্ষমতার অবসান ঘটেছে। মাত্র ১২ দিনের মাথায় আসাদের পতন নিশ্চিত করেছেন বিদ্রোহীরা। ইতিমধ্যেই দেশটিতে অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন মোহাম্মেদ আল বশির।
অন্যদিকে আসাদের পতনের পর পরই গোলান মালভূমির বাফার জোনে (নিরাপদ অঞ্চল) সৈন্য মোতায়েন করেছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এছাড়া সিরিয়ার শত শত সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়ে তা পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে তেল আবিব। এছাড়া আসাদ সরকার পতনে নেতৃত্ব দেয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শামকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ধারণা করা হচ্ছে এই সংগঠনটি সিরিয়ার নেতৃত্ব নিতে পারে। তাই সিরিয়া নিয়ে বেশ উদ্বেগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সিরিয়ার এমন পরিস্থিতিতে চীন ও মিশরের ওই বৈঠক বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদেলাত্তি বলেছেন, সিরিয়ার রাজনৈতিক এবং বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে আলাপ করেছে কায়রো। সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ সাম্প্রদায়িক, ধর্মীয় এবং জাতিগত বিদ্বেষ নিয়ে আলোচনা করেছে উভয়ই দেশই। এছাড়া ইসরাইল ও লেবানন প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, লেবানন ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানায় বেইজিং ও কায়রো। নিয়ম মেনে উভয় দেশ এই চুক্তি কার্যকর করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তারা। মধ্যপ্রাচ্যে একটি টেকসই নিরাপত্তা কাঠামোর উপর জোর দিয়েছেন চীনের শীর্ষ ওই কূটনীতিক। এক্ষেত্রে সৌদি আরব এবং ইরানকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।