আর্টেশিয়ান নলকূপের মাধ্যমে কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ ছাড়াই মাটির নিচের পানি ভূপৃষ্ঠে উঠে আসে। গত পাঁচ বছরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের পাহাড়ি অঞ্চলে ৩৩টি নলকূপ স্থাপন করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। এসব নলকূপের পানি দিয়ে সবজি, ধান ও লেবু চাষ করছেন স্থানীয়রা। পাহাড়ি অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ কঠিন হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে সেচ ব্যবস্থাপনায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে এসব নলকূপ। বিএডিসি সূত্রে জানা গেছে, শুষ্ক মৌসুমে ফসল উৎপাদন বাড়াতে করেরহাট ইউনিয়নের কয়লা রহমতপুর, ইসলামাবাদ, সোনাই, কয়লা বাজারসহ এর আশপাশের এলাকায় ৩৩টি আর্টেশিয়ান নলকূপ স্থাপন করে বিএডিসি। এর মধ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বসানো হয়েছে ২০টি নলকূপ। এর বৈশিষ্ট্য হলো স্থাপনের পর ভূগর্ভস্থ পানি স্বয়ংক্রিয়ভাবে উঠে আসে। পানি তুলতে বিদ্যুৎ কিংবা জেনারেটরের প্রয়োজন হয় না। এটি মাটির প্রায় ১ হাজার ফুট গভীরে স্থাপন করা হয়। তবে সব পাহাড়ি অঞ্চলে এটি স্থাপন করা যায় না। ভৌগোলিকভাবে যেসব পাহাড়ি অঞ্চলে স্প্রিং লেয়ার (নিচ থেকে পানির চাপ থাকা) রয়েছে সেসব অঞ্চলে আর্টেশিয়ান নলকূপ স্থাপন করা হয়। ভৌগোলিকভাবে মিরসরাই উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের কয়লা এলাকার রহমতপুর, ইসলামবাদ, কয়লা বাজার, সোনাইসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মাটিতে স্প্রিং লেয়ার থাকায় আর্টেশিয়ান নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরসরাই বিএডিসির উপসহকারী প্রকৌশলী জাহেদ হাসান বলেন, ‘পাহাড়ি অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে চাষাবাদ করা কঠিন। তাই বিএডিসির উদ্যোগে উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নে পাঁচ বছরে ৩৩টি আর্টেশিয়ান নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এসব নলকূপের পানি দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে চাষাবাদ করছেন স্থানীয় কৃষকরা।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ নলকূপের বৈশিষ্ট্য হলো এটি স্থাপনের পর ভূগর্ভস্থ পানি বিদ্যুৎ কিংবা জেনেরেটরের সাহায্য ছাড়া আপনাআপনি উঠে আসে। এতে কোনো খরচের প্রয়োজন পড়ে না। তবে এটি সব পাহাড়ি এলাকায় স্থাপন করা যায় না। যেসব পাহাড়ি এলাকার পাদদেশে স্প্রিং লেয়ার রয়েছে শুধু ওসব এলাকায় স্থাপন করা যায়। মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, করেরহাট ইউনিয়নের কয়লা এলাকার রহমতপুর গ্রামে শুষ্ক মৌসুমে ৩০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়। এর মধ্যে ২০ হেক্টরে জমি চাষ হয় আর্টেশিয়ান নলকূপের পানি দিয়ে। বাকি ১০ হেক্টর জমির চাষাবাদ হয় স্থানীয় ছড়ার পানি দিয়ে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, করেরহাট ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় আর্টেশিয়ান নলকূপ স্থাপন করায় চাষাবাদ বেড়েছে। কোনো খরচ না থাকায় স্থানীয় কৃষকরা চাষাবাদে মনোযোগী হচ্ছে। ওই অঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ২০ হেক্টর জমিতে আর্টেশিয়ান নলকূপের পানি দিয়ে চাষাবাদ হয়।