গত বছরের মার্চ থেকে বেতন পাচ্ছেন না রাজধানীর হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা। বেতনের দাবিতে এবার আন্দোলনে নেমেছেন তারা। শনিবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে কলেজে অবস্থান নিয়েছিলেন তারা। পরে গতকাল মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) কলেজে থেকে বেরিয়ে শিক্ষকরা রাস্তায় নেমেছেন দাবি আদায়ে।
বেতন নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে দেন-দরবারের পর মঙ্গলবার কলেজটির গভর্নিং বডি বৈঠকে জরুরি বৈঠকে বসে। অধ্যক্ষ অসুস্থ বলে বৈঠকে অংশ নেননি। গতকাল মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আন্দোলন চলাকালে কলেজিটির গভর্নিং বডির সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শক বিভাগের অধ্যাপক ড. শাজাহান মিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আন্দোলন কোনও সমাধান নয়, তাই জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছিলাম। কিন্তু অধ্যক্ষ অসুস্থ এবং অনেকে অনলাইনেও কানেক্ট হতে পারেনিনি। তাই কোরাম না হওয়ায় বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। শিগগিরই আমরা আবার বৈঠকে বসবো। আমি চাই না কোনও শিক্ষক সমস্যার মধ্যে থাকুক।’ সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাতে কলেজের মার্কেটিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আজিম উদ্দিন সরকার বলেন, ‘আমরা গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানের অনুরোধে কলেজে অবস্থান নেওয়া প্রত্যাহার করি আজ রাতে। কারণ মঙ্গলবার সকালে গভর্নিং বডির জরুরি বৈঠকে আমাদের বিষয়টি সমাধান করা হবে। আমরা শিক্ষকরা মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে কলেজে অবস্থান নেবো। যদি সমাধান না হয় তাহলে আবার আন্দোলনে ফিরবো। ‘ গতকাল মঙ্গলবার গভর্নিং বডির বৈঠক বাতিল হওয়ার পর আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষকরা রাস্তায় নেমে বেতন-ভাতার দাবি জানাতে থাকেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে কলেজে অবস্থান নেন শিক্ষকরা। পরের দিন রবিবার (৩১ জানুয়ারি) আন্দোলনরত শিক্ষকরা অধ্যক্ষের কক্ষ অবরুদ্ধ করেন। কলেজে শিক্ষকদের অবস্থান নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গভর্নিং বডি বৈঠক আহ্বান করেন। মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে জরুরি বৈঠকে অধ্যক্ষ সভায় অংশ না নেওয়ায় সভাপতি বাতিল করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষক কলেজের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, ‘গভর্নিং বডির সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শক বিভাগের অধ্যাপক ড. শাজাহান মিয়া বৈঠক করার জন্য কলেজে আসেন আজ সকালে সকালে। কিন্তু কলেজের অধ্যক্ষ অসুস্থার কথা বলে বৈঠকে উপস্থিত হননি। সভাপতি চলে গেছেন। আমরা এখন দাবি আদায়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছি।’
আন্দোলনকারী শিক্ষকরা জানান, তাদের দাবি কলেজের গভর্নিং বডির কাছে তুলে ধরা হয়েছে। দাবি মানা না পর্যন্ত তাদের এই অবস্থান কর্মসূচি চলবে। কলেজে ১৪৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। তাদের মধ্যে মাত্র ২৫ জন এমপিভুক্ত। বাকিরা মূলত কলেজের আয় থেকে বেতন পান। তবে তাদের ১০ মাসের বেতন না দেওয়া হলেও গত দুই মাস ধরে থোক বরাদ্দ থেকে কিছু টাকা দেওয়া হচ্ছে। কলেজে নন-এমপিও শিক্ষকদের বেতন না হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সাহা বলেন, ‘অধ্যক্ষ ও প্রশাসিনিক কর্মকর্তার দুর্নীতির কারলে আমাদের এই পরিস্থিতি হয়েছে। অধ্যক্ষ কলেজে লুটপাটারে রাজত্ব কায়েম করেছেন।’ অধ্যক্ষ ড. আব্দুল জব্বার মিয়া সাংবাদিকদের বলে আসছেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে এগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বানোয়াট।’