করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে নারায়ণগঞ্জের ১০ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। মূলত বন্দর উপজেলার এক নারী রোগীর মাধ্যমেই এই সংক্রমণের শুরু হয়। বুধবার (১৫ এপ্রিল) বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা সিভিল সার্জনের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী ডা. ইকবাল বাহার চৌধুরী।
তিনি জানান, গত ২৯ মার্চ শহরের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভিক্টোরিয়ায়) জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন করোনা আক্রান্ত এক নারী। তাকে চিকিৎসা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসকসহ তিন স্বাস্থ্যকর্মী। এছাড়া উপসর্গ গোপন করে আরেক রোগীর চিকিৎসা নিতে আসে জেনারেল হাসপাতালে। ওই রোগীর সংস্পর্শে এসে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আরেক চিকিৎসক সংক্রমিত হন।
জেনারেল হাসপাতালে ওই চিকিৎসকের সঙ্গে বিভিন্ন সভা ও সেমিনারে সংস্পর্শে আসেন নারায়ণগঞ্জের সাবেক সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান। তারা দুই জনেই পরে করোনা শনাক্ত হন। এছাড়া খানপুর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের ডাক্তার মিনারা সিকদার আরেক রোগীর সংস্পর্শে এসে করোনায় সংক্রমিত হন। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ বিএমএ এর সাবেক সভাপতি ডাক্তার শাহনেওয়াজসহ তার পরিবারের চার ডাক্তার সদস্য করোনা পজেটিভ হয়েছেন।
এদিকে একাধিক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হওয়ায় শহরের ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিকে রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। ডাক্তারদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগ ডাক্তারের চেম্বারে ঝুলছে তালা। এই পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা।
নারায়ণগঞ্জের সাবেক সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ জানান প্রথমদিকে সারাদেশের মতো নারায়ণগঞ্জে পার্সোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই) পর্যাপ্ত ছিল না। পিপিই ছাড়াই সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। তাই এই সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।
নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জনের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী ডা. ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, বর্তমানে জেলায় চিকিৎসকদের পিপিই এর কোনও সমস্যা নেই। ডাক্তারদের চাহিদার তুলনায় বর্তমানে বেশি পিপিই সরবরাহ করা হচ্ছে।
এমআইপি/প্রিন্স/খবরপত্র