মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বরিশালে তীব্র গরমে নাভিশ্বাস বিপাকে নি¤œ আয়ের মানুষ ঈদুল ফিতর ও নববর্ষের ছুটিতে চায়ের রাজ্যে রেকর্ড সংখ্যক পর্যটক বরিশাল বিএনপি দলীয় কার্যালয়ে দোয়া-মোনাজাত ও স্মরণ সভা নগরকান্দায় মাই টিভির ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন গজারিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, চেয়ারম্যান পদে ৫, ভাইস চেয়ারম্যান পুরুষ ৪, মহিলা-৪, মারাত্মক ঝুকিপুর্ণ ২২ রশি জমিদার বাড়ি, যেকোন সময় ঘটতে পারে ভয়াবহ দুর্ঘটনা শিবগঞ্জে সরকারি সম্পত্তি দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করার জন্য ভূমি সহকারী কমিশনার অফিসে আবেদন নাজিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ৪ জন সহ মোট ১২ প্রার্থীর মনোনয়ন দাখিল আনন্দপূর্ণ উৎসবমুখর পরিবেশে মনসুর আহমেদ জিন্নার মনোনয়নপত্র জমা আজ মঙ্গলবার হোসেনপুরে অষ্টমী স্নানোৎসব

আমাদেরকে কোনো বাধা আটকাতে পারবে না: বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বরিশালে সমাবেশ

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা কি এই দেশ দেখার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম? যে দেশে সাধারণ মানুষকে গুম, খুন, হত্যা, অন্যায় অবিচারের শিকার হতে হয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মতো একজন প্রকৃত সৈনিকের খেতাব বাতিল করতে চায় কিছু লোক। এই স্বাধীন দেশে আমরা এটা কখনো হতে দিব না। ঢাকা সিটি উত্তর করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, দিন দিন জালিম সরকার স্বাভাবিক নির্বাচন হতে দিচ্ছে না। কোন নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিতে পারছে না।’ ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আছি। আমাদেরকে কোনো বাধা আটকাতে পারবেনা।’
গতকাল বৃহস্পতিবার বরিশাল মহানগরের সাবেক মেয়র মজিবুর সারোয়ারের সভাপতিত্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বরিশাল মহানগরীতে দলটির বিশাল সমাবেশে বিএনপি নেতারা এ কথা বলেছেন। বরিশাল জিলা স্কুল সমাবেশে জনতার ঢল নেমেছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় বরিশাল জিলা স্কুল মাঠে এ সমাবেশ শুরু হয়। গতকাল দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা ১১টা থেকেই নেতাকর্মীরা সমাবেশে আসা শুরু করেন। তবে রাস্তায় পুলিশ তাদের সমাবেশে আসতে বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর হাফিজউদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম)। এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, চেয়ারপার্সন এর উপদেষ্টা হাবিব উর রহমান হাবিব, ছয় সিটি করপোরেশন নজরুল ইসলাম মঞ্জু, মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন, তাবিথ আওয়াল, মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান,বযুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি মোস্তাফিজুল কবির বাদরু, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের
সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মামুন খান, যুগ্ম সম্পাদক এবিএম মাহমুদ আলম সর্দার, সহ সাধারন সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সিরাজ, কেএম সাখওয়াত হোসাইন, এজাজ শাহ, বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক হুমায়ুন কবির, সিনিয়র সহ সভাপতি তরিকুল ইসলাম তরিক, ঢাকা মহানগর দক্ষিন শ্রমিক দলের সিনিয়র সহ সভাপতি সুমন ভঁইয়া, ছাত্রদল নেতা সালেহ আদনান, মোঃ রুবেল (আদিব), বরিশাল জেলা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা ফরিদ জোমাদার প্রমুখ।
মেজর হাফিজ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা হবে জিয়াউর রহমানের মতো। যার একটা বাড়ি নেই, গাড়ি নেই ও ব্যাংক ব্যালেন্স নেই। আমরা কি তার সেই আদর্শ ধরে রাখতে পেরেছি আজকে? নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন। আমরা জিয়াউর রহমানের আদর্শ ধারণ করি কিনা? আমাদের মধ্যে দেশপ্রেম সততা আছে কিনা। তিনি বলেন, পার্শবর্তী দেশ মায়ানমারে সামরিক শাসকরা ক্ষমতা দখল করেছে। দেড় লক্ষ মানুষ রাস্তায় নেমে এসে আন্দোলন করছে। আওয়ামী লীগের শাসন তো সামরিক শাসনের চাইতেও খারাপ। আমরা কয়জন রাজপথে নেমে এসেছি? মিয়ানমারের তত্ত্বের লক্ষ মানুষ রাজপথে নেমে এসেছে। কালকে বিবিসিতে আরেকটি সংবাদ দেখলাম, মিয়ানমারে আন্দোলনরতদের সমর্থন দিয়ে জার্সি পরিবর্তন করে জনতার কাতারে মিশে গিয়েছে। আমাদের পুলিশ ভাইয়েরা কি করেছেন? সেনাবাহিনীর প্রধানের সমালোচনা করে মেজর হাফিজ বলেন, সেনা প্রধানের ভাই আলজাজিরাতে কি বলেছেন? আমার আর আমার আর গুন্ডার দরকার নাই পুলিশের তো গু-ার দরকার নেই। পুলিশইতো আমার বড় গু-া। লজ্জা হয় না আপনাদের ইউনিফর্ম পরতে কিসের দেশ কোন দেশে চাকুরী করছেন। এই দেশ আমরা রক্ত দিয়ে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন করেছি। জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছি।
মেজর হাফিজ বলেন, এখানে যারা এসেছেন তারা নিজ নিজ এলাকায় বযাপক জনপ্রিয়, আমি দেখেছি। তাদের যে জনপ্রিয়তা তা আমরা দেখেছি। এজন্য আজকে তাদের সমাবেশ করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমাদের ভোটাধিকারের মূল্য নাই সেই মূল্য প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করেছি। যারা যারা শরণার্থী ছিল তারা এসে বাংলাদেশ দখল করে সেখান থেকে হারিয়ে গিয়েছে স্বরনার্থী ছিলো তারা এসে বাংলাদেশ দখল করেছে। আর মুক্তিযোদ্ধারা হারিয়ে গেছে। এই হলো আজকের বাংলাদেশ। এখানে মুক্তিযোদ্ধা হওয়া খুব সোজা। একটা কালো কোর্ট পরলেই মুক্তিযোদ্ধা হওয়া যায়। তাদের আমাদের মত কামান গুলি খেতে হয়না।
হাফিজ বলেন, এই সরকারের ১৫-১৬ জন সচিব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রমাণিত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সরকার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তিনি বলেন, আমরা একটি নিকৃষ্ট সরকারের অধীনে বসবাস করছি। এখানে আমাদের কোন অধিকার নেই। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের অনেক বক্তব্য আমরা শুনেছি। এই সেনাবাহিনী আমরা গঠন করেছিলাম মাত্র ২৫ জন সেনা পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে বিদ্রোহ করে। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। প্রত্যেক বাঙালীর কাছে অত্যন্ত প্রিয় এই সেনাবাহিনী। এসময় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, এখানে স্লোগান দেয়ার জন্য আসবেন না। স্লোগান দিয়ে আমাদের মিটিং নষ্ট করবেন না। স্লোগান দেয়ার জন্য রাজপথ। আর যদি প্রতিরোধ করতে হয় রাজপাথে গিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনীকে প্রতিরোধ করুন। আগুন জ্বালাতে হলে শেখ হাসিনার গদিতে আগুন জ্বালান। আমাদের এখানে আগুন জ্বালিয়ে সমাবেশ নষ্ট করার দরকার নেই।
সমাবেশে তরুণ ছাত্রদের উদ্দেশ করে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্লোগান দেওয়ার জন্য এখানে আসবেন না। স্লোগান দেওয়ার জন্য রাজপথ। স্লোগান দিয়ে আমাদের মিটিং নষ্ট করবেন না। আর যদি প্রতিরোধ করতে হয় তাহলে রাজপথে গিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনীকে প্রতিরোধ করুন। আগুন জ্বালাতে হলে শেখ হাসিনার গদিতে আগুন জ্বালান। আমাদের মঞ্চে আগুন জ্বালাবেন না। মঞ্চে আগুন জ্বালানোর কোনো প্রয়োজন নাই। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারতীয় বাহিনী না আসলেও আমরা এই দেশকে স্বাধীন করতে পারতাম। প্রতিবেশী রাষ্ট্র যখন দেখেছে বিজয় নিশ্চিত, মুক্তিবাহিনী বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে- তখন তারা কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য শেষ দিকে এসে যোগদান করেছে। তাদেরকে ছাড়াও আমরা এই দেশকে স্বাধীন করতে পারতাম। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেন বলেন, আজকে আমরা সমাবেশ করছি, একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে। এই সমাবেশ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানাই। এই সরকারের অধিনেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। আজ বরিশাল থেকেই আমরা এই আন্দোলন শুরু করলাম। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিএনপির মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, আন্দোলনের জন্য আমরা এখানে একত্রিত হয়েছি। আর জনগণের দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকবো। আর আমরা আমাদের দাবি আদায় করেই ছাড়বো।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি আদায় করতে হবে। এজন্য বিএনপিকে একদফার আন্দোলন নিয়ে রাজপথে নামতে হবে। দেশব্যাপী নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে গত সিটি কর্পোরেশন ভোটে দলের মনোনীত মেয়রপ্রার্থীদের নেতৃত্বে বরিশাল মহানগর বিএনপির এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশকে কেন্দ্র করে বরিশাল মহানগরের প্রতিটি মোড়ে মোড়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তারা সমাবেশে দিকে যাওয়া প্রতিটি গাড়িও তল্লাশি করে। সমাবেশের শুরুতে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। পরে বিকেল ৩টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মধ্যেদিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
উল্লেখ্য,এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে রাজপথের আন্দোলনের অংশ হিসেবে ছয় মহানগরে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে দলটি।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com