পেকুয়া উপকুলে দীর্ঘ চার বছরে শেষ হতে চলেছে ২০ কিলোমিটার ব্লকের উপকুল রক্ষা বেড়ী বাঁধ। বাঁধটির কাজ সম্পন্ন হলে ঘুর্ণিঝড় -জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পাবে দেড় হাজার জনবসতি ও জানমাল। কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলাটি ২০০২ সালের ২৩ এপ্রিল ১৩৯.৬৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তন নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন বৃহত্তর চকরিয়া উপজেলার ২৫ ইউনিয়নের ০৭টি ইউনিয়নকে আলাদা করে গঠিত হয় পেকুয়া উপজেলা। পেকুয়া উপজেলার পশ্চিমে কুতুবদিয়া উপজেলা, দক্ষিণে মহেশখালী উপজেলা, পূর্বে চকরিয়া উপজেলা এবং উত্তরে বাশঁখালী উপজেলা অবস্থিত। সমুদ্র উপকুলের এ উপজেলাটির ১২০ কিঃমিটার রয়েছে ঘুর্ণি উপদ্রুত এলাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পেকুয়া উপজেলার ১২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে অধিক ক্ষতিগ্রস্থ ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে মগনামা, উজানটিয়া ও রাজাখালী ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশের শতভাগ ক্ষতিগ্রস্থ ২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও ব্লক স্থাপনের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনালকে কার্যাদেশ দিয়েছিল ২০১৭ সালে। কাজ বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ করা হয় ১’শ ৯০ কোটি টাকা। চারটি প্যাকেজে কাজ শুরু করলেও ইতিমধ্যে ২৯ ও ৩০ নং প্যাকেজের কাজ সম্পুর্ণ এবং বাকী ডাব্লিও ১ এবং ডাব্লিও ১৫ প্যাকেজ দুইটির কাজ ও ৯৫% ভাগ শেষ হয়েছে। ইতিমধ্যে অভিযোগ উঠেছে, পাউবো’র বেড়িবাঁধের শত কোটি টাকার উন্নয়ন কাজে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, পাউবো’র তদারকি ছাড়া ঠিকাদারের লোকজন শিডিউল বহির্ভূতভ দায়সারাভাবে ব্লক তৈয়ার করেছেন। দেশীয় বালির সাথে সিলেটের বালী দিয়ে ব্লক তৈরীর কথা সিডিউলে থাকলেও সিলেটের বালি আদৌ ব্যবহার করছে না। তদারককারী কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতিতে চলমান কাজের স্থায়ীত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, কার্যাদেশ পাওয়ার পর ঠিকাদারের লোকজন পেকুয়া উপজেলার ‘দক্ষিণ মগনামা কাকপাড়া থেকে শরৎঘোনা’ পর্যন্ত মাটি ভরাটের কাজে অনিয়ম-দূর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। বেড়িবাঁধের অতি সন্নিনিকট থেকে মাটি কেটে গর্ত সৃষ্টি করে বেড়িবাঁধ ভরাট করেছেন। পাউবোর শিডিউল অনুযায়ী মাটি ভরাট করেনি। সিলেটি পাথর ও বালির পরিবর্তে ব্লক তৈরীতে বেশি ব্যবহার করা হয়েছে পার্বত্য বান্দরবানের লামা-আলীকদমের নিম্নমানের পাথর! পাউবো” কর্মকতা-কর্মচারীদের কাজ তদারকীতে অবহেলা অনিয়ম-দূর্নীতির কারণে ২০১৭ সালে শুরু হওয়া কাজ শেষ হচ্ছে চার বছরে। মগনামা ইউনিয়নের লঞ্চঘাটের উত্তর দিকে গিয়ে সরেজমিনে উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনালের প্রকল্প কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিনের উপস্থিতিতে ৪টি স্কেভেটর গাড়ি দিয়ে বেশ তড়িগড়ি করেই বেড়িবাঁধের ব্লক বসানের কাজ করা হচ্ছে।তবে এসময় পাউবো”র কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি। তদরকীর দায়িদ্বপ্রাপ্ত পাউবোর শাখা কর্মকর্তা (এসও) মো: গিয়াস উদ্দিনের ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনালের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মো: নেজাম উদ্দিন বলেন,চারটি প্যাকেজে কাজ শুরু করলেও ইতিমধ্যে ২৯ ও ৩০ নং প্যাকেজের কাজ সম্পুর্ণ এবং বাকী ডাব্লিও ১ এবং ডাব্লিও ১৫ প্যাকেজ দুইটির কাজ ও ৯৫% ভাগ শেষ হয়েছে। কিন্তু কিছু কুচক্রী মহল তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে দাবী করে বলেন বেড়িবাঁধের মাটি ভরাট থেকে শুরু করে ব্লক বসানোর সম্পূর্ণ কাজ পাউবোর শিউিডল মোতাবেক করা হয়েছে। শিডিউলের বাইরে কোন কাজ করা হয়নি। বাঁধটির কাজ সম্পন্ন হলে পেকুয়ার ৩ ইউনিয়ন উজানটিয়া, মগনামা ও রাজাখালীর দেড়হাজার জনবসতি ও সম্পদ ঘুর্ণিঝড় -জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পাবে।