শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

জাজিরায় কোর্টের আদেশ অমান্য করে ফসলী জমিতে খাল খনন

শরীয়তপুর প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ মার্চ, ২০২১

জাজিরা উপজেলার পালের চর জোড়া ব্রীজ থেকে আহাদ্দি মাদবর কান্দি পর্যন্ত একটি বিশাল এলাকায় বোরো ধানের স্বত্ব দখলীয় এবং মালিকানা জমিতে একটি স্বার্থাম্বেষী মহল ষড়যন্ত্র করে উঠতি বোরো ফসল বিন্ষ্ট করে খাল খননের পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন জমির মালিকগন। ফলে ফুসে উঠেছে কৃষককুল। তারাতাদের ফসলী জমি রক্ষার জন্য বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। কৃষকের দাবী এ জমিতে উচ্চ আদালত থেকে নির্দেশনা ও নিম্ম আদালত থেকে স্থিতি বজায় রাখার নির্দেশ থাকার পরেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পুলিশের ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক ফসল বিনষ্ট করে মালিকানা জমিতে খাল খননের চেষ্টা করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছেন ১ বছর পূর্বেই এ খাল খননের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। বর্ষার পানির জন্য খনন করতে পারেনি। এবার খননের শুরুতে কৃষক বাধা দিচ্ছে। আমরা কোর্টের নিষেধাজ্ঞার কাগজ হাতে পাইনি। পাইলে আইনী লড়াই করবো। জাজিরা পৌর এলাকার আহাদ্দি মাদবর কান্দি গ্রামের সিরাজ হাওলাদার, ইছুব মুন্সি, দানেশ মুন্সি রং মালা ও সেলিনা জানান, শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড জাজিরা উপজেলার পালেরচর জোড়া ব্রীজ থেকে কীর্তিনাশা কাজিরহাট রিভার ভায়া বাদশা মুন্সির বাড়ি পর্যন্ত আহাদ্দি মাদবর কান্দি, লখাই কাজি কান্দি ও দাইমদ্দি হাজী কান্দি গ্রামের বেশ কিছু জমিতে ২০২০ সালের শেষের দিকে ৫কিঃ মিঃ খাল খননের জন্য সরকারী ভাবে ১কোটি ২৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সবুজে ঘেরা এ ফসলের মাঠে একটি স্বার্থাম্বেষী মহলেরর প্ররোচনায় প্রকল্প গ্রহন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড গত বছর দরপত্র আহবান করে সার্বিক ইন্টারন্য্যাশনাল (মাদারীপুর)নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়। এ প্রকল্পের সম্পূর্ন জমিই ব্যক্তি মালিকানা ও বোরো ফসলী জমি। এখানে নকশায় কোন খাল বা নদী নেই। এ জমিতে চলতি বোরো মৌসুমে কালি বোরো ধান রোপন করা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে ভেকু মেশিন দিয়ে খাল খনন করতে গেলে জমির মালিক কৃষকেরা বাধা দেয়। এ সময় হট্রগোল বাধে। এরপর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জাজিরা থানা থেকে পুলিশ নিয়ে কৃষকের উপর চাপ প্রয়োগ করে খাল খননের চেষ্টা করে। ইতোমধ্যে ফসল বিনষ্ট করে প্রায় ৩০০ ফুট খাল খনন করে ফেলে। ফলে বাধ্য হয়ে তারা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জমির এক মালিক রফিক হাওলাদার জাজিরা উপজেলার অর্ন্তগত ৪৯ আহাদ্দি মাদবর কান্দি মৌজার ১৩৩ নং খতিয়ান ভুক্ত বিআরএস ২৯ নং দাগের ৮ শতাংশ ২৮ নং দাগের ১২ শতাংশ জমি উল্লেখ করে ১৪৪/১৪৫ ধারামতে মিসপিটিশন করে। যার মিসপিটিশন নং ১১৫/২১। আদালত নালিশি জমিতে স্থিতি অবস্থা বজায় রাখার জন্য ওসি জাজিরা থানাকে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে নির্দেশ দেয়। পুলিশ উভয় পক্ষকে নোটিশ জারি করেছে। এরপরে ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সার্বিক ইন্টারন্যাশনালের মালিক তা মানছেনা। তারা জোর করে কিছু জমির ফসল বিনষ্ট করে মাটি খনন করেছে। বাকি জমি কাটার পায়তার করছে।অপর দিকে জমির মালিক আবদুস সাত্তার মাল ও তার অংশীদার আরো ৬জন উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করেছে। যার ভিসি রিট পিটিশন নং-২৩১/২০। এ মামলায় একই উপজেলার দাইমদ্দি হাজী কান্দি গ্রামের বিআরএস জরিপের ১৩৯, ১৪০, ১৪১, ১৪২, ১৪৩, ১৪৪, ১৪৫, ১৫০ ও ১৫১ দাগের মালিকানাধীন জমিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী/খাল পুনঃখননের পায়তার করছে বলে উল্লেখ করেছেন। আরো উল্লেখ করেন যে ঃযব ঢ়ড়ৎঃং অপঃ ১৯০৮ এর ধারা ১০ ও ১২ এবং ইধহমষধফবংয ডধঃবৎ উবাষড়ঢ়সবহঃ ইড়ধৎফ অপঃ ২০০০ ও ওহষধহফ ডধঃবৎ ঞৎধহংঢ়ড়ৎঃ অঁঃযড়ৎরঃু জঁষবং ১৯৫৯ সহ অন্যান্য আইনের বিভিন্ন ধারা ও বিধি এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রিট পিটিশন নং-৩৫০৩/২০০৯ এর রায়ের আলোকে প্রদত্ত নির্দেশনার পরিপন্থি। এ মামলায় উচ্চ আদালত গত ২৫ ফেব্রুয়ারী শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক/জেলা নদী রক্ষা কমিশনের আহবায়ককে কাগজ প্রাপ্তির ৬০ দিনের মধ্যে আইনানুগ ভাবে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। এ খবর জানার পরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এ প্রকল্পের কাজ বন্ধ করছেন না। বরং আহাদ্দি মাদবর কান্দি মৌজার ২৮, ২৯, ২৬, ২৫, ১৫, ১৭, ১৮নং দাগসহ আরো অর্ধশতাধিক দাগের জমির ফসল বিনষ্ট করে খাল খনন করার পায়তারা করছে। এ খাল খনন বন্ধ করার জন্য ইতোমধ্যে শত শত নারী পুরুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। তাদের দাবী সিএস, আরএস ও এসএ রেকর্ডে নকশায় কোন নদী বা খাল উল্লেখ নেই। এগুলো তাদের রেকর্ডিয় জমি। যেখানে খাল বা নদী আছে সেখানে খনন করলে তাদের কোন অভিযোগ নেই।ফসলি জমি কেটে নিয়ে গেলে তারা না খেয়ে মরবে। এ ব্যাপারে কৃষক দিদার মাল বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড পালেরচর জোড়া ব্রীজ থেকে কীর্তিনাশা কাজিরহাট রিভার ভায়া বাদশা মুন্সির বাড়ি পর্যন্ত খাল খননের জন্য যে প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তাতে কোন নদী /খাল বলে সিএস, আর এস বা এসএস রেকর্ড নেই। মালিকানা ও ফসলী জমিতে স্বার্থাম্বেষী মহলের প্ররোচনায় তারা কৃষকের ক্ষতি করে এ খাল খননের পায়তারা করছে। আমরা আদালতের আশ্রয় নিয়েছি।আদালতের নির্দশনা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ড মানছেনা। আমরা প্রতিকার চাই। জাজিরা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জমির মালিক ওসমান গনি বলেন, আমাদের মালিকানা ও বোরো ফসলী জমিতে আমরা ধান রোপন করেছি। কয়েকদিনের মধ্যে এ ফসল ঘরে আসবে। এ অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ডও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জোর করে ফসল নষ্ট করে ভেকু দিয়ে খাল খনন করার পায়তারা করছে। আমরা আদালতে মামলা করেছি। আদালত স্থিতি বজায় রাখতে নোটিশ জারি করেছে। নোটিশ প্রাপ্তির পরেও তারা মানছেনা। জোর করে পুলিশের ভয় দেখিয়ে খাল খনন করতে চেষ্টা করছে। বাদশা মুন্সি, নজরুল মাদবর, সামচেল মুন্সি, সাত্তার মুন্সি, রফিক হাওলাদার নোয়াব আলী মুন্সি াালম হাওলাদার মোসলেম হাওলাদার সহ শত শত লোক অভিযোগ করে বলেন, আমাদের মালিকানা ফসলী জমি জোর করে কেটে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা কৃষক। জমির উপর নির্ভরশীল। এ জমি নিয়ে গেলে আমরা ছেলে মেয়ে নিয়ে কিভাকে বাচবো। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার বাবু বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড দরপত্র আহবান করেছে। আমরা টেন্ডারে কাজ পেয়ে কাজ করতে গেলে কিছু লোকের স্বার্থের ব্যাঘাত হওয়ায় কাজে বাধা দেয়।আমরা কাজ চালিয়ে নিতে প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়েছি। জাজিরা থানার ওসি মোঃ কবিরুল ইসলাম বলেন, খাল খনন করতে কৃষকরা বাধা দিয়েছে বলে আমাকে জানায় আমি আইন শৃংখলা রক্ষার্থে সেখানে গিয়েছি। এরপর আদালত নোটিশ পাঠালে তা উভয় পক্ষের মধ্যে জারি করে দিয়েছি। এখানে আমার কোন স্বার্থ নেই। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম আহসান হাবীব বলেন, এখানে বিআরএস জরিপে খাল আছে। গত বছর জাজিরা উপজেলার পালেরচর জোড়া ব্রীজ থেকে কীর্তিনাশা কাজিরহাট রিভার ভায়া বাদশা মুন্সির বাড়ি পর্যন্ত একটি খাল খনন প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। বর্ষার পানির জন্য গত বছর খাল খনন করতে পারিনি। চলতি মৌসুমে কাজ শুরু করতে গেলে কৃষকেরা বাধা দেয়। আমরা আদালতের কোন কাগজ পাইন। পাইলে আইনী ভাবে লড়াই করবো।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com