শীতলক্ষ্যা নদীতে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবিতে ৩৫ জন নিহতের ঘটনায় অভিযুক্ত কার্গো জাহাজ এসকেএল-৩ এর ১৪ স্টাফকে আটক করেছে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া কোস্টগার্ডের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে গজারিয়ার মেঘনা নদী থেকে তাদের আটক করা হয়। পরে আটক ১৪ জনকে নারায়ণগঞ্জ নৌ-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুর ২ টার দিকে জাহাজটি জব্দ ও স্টাফদের আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন গজারিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, গজারিয়ার মেঘনা নদী থেকে কোস্টগার্ডের সদস্যরা কার্গো জাহাজটি জব্দ করে। এসময় কার্গোতে থাকা ১৪ জন স্টাফকেও আটক করেন তারা। পরে জাহাজটি নৌপুলিশকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকে খবর দেওয়া হয়েছে। এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, পাগলা কোস্টগার্ড স্টেশনের সদস্যরা গজারিয়া থেকে কার্গো জাহাজটি আটক করেছে বলে জানতে পেরেছি। বেশ কয়েকজন স্টাফকেও আটক করা হয়েছে। মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থেকে ১৪ জন স্টাফসহ এসকেএল-৩ নামের কোস্টার কার্গোটিকে আটক করা হয়। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড সদর দফতরের মিডিয়া কর্মকর্তা লে. কমান্ডার আমিরুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। লে. কমান্ডার আমিরুল হক বলেন, ‘কোথাও কোনো দুর্ঘটনা, ডাকাতি বা দস্যুতার ঘটনা ঘটলেই আমাদের টহল টিমগুলোর সক্রিয় থাকে। লঞ্চডুবি ও হতাহতের ওই ঘটনায় কোস্ট গার্ডের টহল টিম নজরদারি বৃদ্ধি করে।’ প্রসঙ্গত, গত ৪ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে সৈয়দপুর কয়লাঘাট এলাকায় কার্গো জাহাজ ধাক্কা দিয়ে ‘সাবিত আল হাসান’ নামের লঞ্চটি অর্ধশতাধিক যাত্রীসহ ডুবিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কোস্ট গার্ড টিম জানতে পারে যে, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় এলাকায় ঘাতক কার্গোটি লুকিয়ে রাখা হয়েছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে দ্রুত টহল টিম গজারিয়ায় পৌঁছে। কিন্তু দেখা যায় যে, ওই কার্গোটির রঙ পরিবর্তন করা হয়েছে। দুর্ঘটনার সময় কার্গোটি যে রঙ ছিল অভিযানের সময়কার কার্গোর রঙয়ের অনেক পরিবর্তন। ভালো করে লক্ষ্য করলে স্পষ্ট হয় যে, কার্গোটির গায়ের রঙ সম্প্রতি লাগানো।’ লঞ্চডুবির ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত শিশুসহ ৩৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক। এদিকে লঞ্চডুবির ঘটনায় জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত কাজ শুরু করেছে। এতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরী ববির নেতৃত্বে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বি আইডব্লিউটিএ টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি সাবিত আল হাসানকে শহরের কয়লাঘাট এলাকায় কার্গো জাহাজ এসকেএল-৩ পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে লঞ্চটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় কেউ কেউ সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও নিখোঁজ থাকেন অনেকে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও বি আইডব্লিউটিএ দুটি তদন্ত কমিটি করেছে।