ইনিংসের ১৯তম ওভারে প্যাট কামিন্সের বলে দুই ছক্কা মেরে দলকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন আব্দুল সামাদ। তবে আন্দ্রে রাসেলের করা ২০তম ওভারে সুবিধা করতে পারেননি সামাদ ও মানিশ পান্ডে। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ২২ রানের প্রয়োজন হলেও এই দুই ব্যাটসম্যান নিতে পেরেছেন মাত্র ১১ রান। ফলে ১০ রানের জয় দিয়ে শিরোপার মিশন শুরু করলো কলকাতা নাইট রাইডার্স।
জয়ের জন্য ১৮৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি হায়দরাবাদের। ইনিংসের প্রথম ওভারেই হরভজন সিংয়ের বলে শূন্য রানে থাকা ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ ছাড়েন কামিন্স ।তবে জীবন পেয়েও সেটি কাজে লাগাতে পারেননি হায়দরাবাদের অধিনায়ক। পরের ওভারেই প্রসিধ কৃষ্ণার বলে কার্তিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪ বলে ৩ রান করা ওয়ার্নার। ভালো শুরুর আভাস দিলেও সেটা ধরে রাখতে পারেননি ঋদ্ধিমান সাহা। নিজের প্রথম ওভার করতে এসে প্রথম বলেই ৭ রান করা সাহাকে বোল্ড আউট করেন সাকিব আল হাসান। সেই ওভারে মাত্র এক রান দেন তিনি। তবে পরের ওভারে এসে ১২ রান দেন সাকিব। মাত্র ১০ রানে ২ উইকেট হারানো হায়দরাবাদের শুরুর বিপর্যয় সামাল দেন জনি বেয়ারস্টো ও মানিশ।
শুরুর বিপর্যয় সামাল দেয়ার সঙ্গে দ্রুতগতিতে রান তুলতে থাকেন তাঁরা দুজন। বরুণ চক্রবর্তীকে ছক্কা মেরে ৩২ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ফর্মে থাকা বেয়ারস্টো। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি এই ইংলিশ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। কামিন্সের আউট সাইড অফ স্টাম্পের বল খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা নীতিশের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৪০ বলে ৫৫ রান বেয়ারস্টো। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর ভাঙে তাঁদের দুজনের ৯২ রানের জুটি। এরপর ইনিংস বড় করতে পারেননি মোহাম্মদ নবিও। কৃষ্ণার বলে ইয়ান মরগানের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ১১ বলে ১৪ রান করা এই আফগান অলরাউন্ডার।
৩৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিলেও শেষ পর্যন্ত দলকে জেতাতে পারেননি মানিশ। ১১ রান করে বিজয় শঙ্কর ফেরার পর কামিন্সের এক ওভারে দুই ছক্কা মেরে হায়দরাবাদকে ম্যাচে ফিরিয়েছিলেন সামাদ। তবে ম্যাচ জেতাতে পারেননি সামাদ ও মানিশ। শেষ পর্যন্ত নির্ধারতি ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে হায়দরাবাদ থামে ১৭৭ রানে। মানিশ অপরাজিত ছিলেন ৬১ রানে আর সামাদ ৮ বলে ১৯ রান করে। এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে কলকাতাকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন দুই ওপেনার শুভমান গিল ও নীতিশ রানা। এই দুজনের উদ্বোধনী জুটি থেকে আসে ৫৩ রান। ১৫ রান করা গিলকে ফিরিয়ে এই দুজনের ওপেনিং জুটি ভেঙেছেন রশিদ খান। গিল বিদায় নিলেও দলের রানের চাকা সচল রাখেন নীতিশ ও তিনে নামা রাহুল ত্রিপাটি। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৯৩ তুলে দলকে বড় সংগ্রহের পথ দেখান এই দুই ব্যাটসম্যান। এই সময়ের মাঝে দুজনই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। ২৯ বলে ৫৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে রাহুল ফিরলে ভাঙে তাঁদের দুজনের এই জুটি। এদিন থিতু হতে পারেননি আন্দ্রে রাসেল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই অলরাউন্ডারকে সাজঘরে ফিরিয়েছেন রশিদ। ৫ বলে ৫ রান করে মানিশের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাসেল। এরপর সাজঘরে ফেরেন দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে থাকা নীতিশ। নবির বলে ক্যাচ আউট ফেরার আগে খেলেন ৫৬ বলে ৮০ রানের ইনিংস। নীতিশের বিদায়ের পর এদিন থিতু হতে পারেন ইয়ান মরগানও। ৩ বলে মাত্র ২ রান করে নবির বলে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়খ মরগান। শেষদিকে কার্তিক এবং সাকিব মিলে কলকাতার সংগ্রহটাকে ১৮৭ রান পর্যন্ত নিয়ে যান। সাকিব ৫ বলে ৩ রান করে ফিরলেও কার্তিক অপরাজিত ছিলেন ২২ রানে।