সারাবিশ্ব ব্যাপি মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধের লক্ষে সারা দেশের ন্যায় সিরাজগঞ্জেও চলছে কঠোর লকডাউন। লকডাউনে সবকিছুই স্বাভাবিক থাকলেও সিরাজগঞ্জের অভ্যন্তরীণ সব রুটের সকল পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরিবহন শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট পেশার সঙ্গে জড়িত প্রায় ৫ থেকে ৭ হাজার। বাস, মিনিবাস শ্রমিকদের দিন কাটছে অর্ধাহারে খেয়ে না খেয়ে। সহায়তা মিলছেনা কোন উৎস থেকে। গত পনের দিন লকডাউন শেষ হতে না হতেই আবারও ৭দিন লকডাউন বর্ধিত করা হয়েছে। রাস্তার চিত্র দেখে বোঝার উপায় নেই দেশে যান চলাচলে এমন বিধিনিষেধ চলছে। সব স্থানে সিএনজি,অটো,চার্জার ভ্যান,রিকশা, ব্যক্তিগত গাড়ীসহ সকল যানবাহন চলাচল করছে। কঠোর বিধি নিষেধের জন্য গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বাসচালক,হেলপার,সুপার ভাইজারসহ সংশ্লিষ্ট পেশায় জড়িতরা পরিবার- পরিজন নিয়ে মানবেতর জিবন যাপন করছেন। কর্মহীন এ শ্রমিকদের কপালে জোটেনি কোন প্রকার সাহায্য- সহযোগিতা। সরকার,পরিবহন মালিক, শ্রমিক ইউনিয়ন কেউ পরিবহন শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ায়নি এখন পর্যন্ত। এসব বেকার হওয়া হাজার হাজার শ্রমিক মালিক সমিতি কিংবা শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে পাচ্ছে না কোন সহায়তা। তাই সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত আর্থিক সহায়তা প্রদানের দাবি কর্মহীন গণপরিহন শ্রমিকদের। সরেজমিন বাস¯ট্যান্ড গুলিতে ঘুরে দেখা যায়,শুয়ে-বসে অলস সময় পার করছে শ্রমিকরা। চালক ও সুপার ভাইজার হেলপারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,গত বছরের লকডাউনে সাহায্যে সহযোগীতা কিছুটা দেখা গেলেও এবারের চলমান লকডাউনে এখন পর্যন্ত কেউ সাহায্যে সহযোগিতার হাত বাড়ায়নি। কেউ আমাদের খবর নেয় না,আমাদের দিন কেমন করে যাচ্ছে। জেলার বাস-মিনিবাস শ্রমিক এখন অভাব-অনটনের মধ্যে জীবনযাপন করছেন। বাসের চাকা ঘুরলে আমাদের আয় হয়,লকডাউনে সড়কে বাসও চলছে না, আমাদের রোজগারও হচ্ছে না। শ্রমিকরা জানান, করোনার জন্য পরিবহন বন্ধ রাখা হলেও সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়নি পরিবহন শ্রমিকদের জন্য। অনেক দিন যাবত কর্মহীন হয়ে কষ্টে দিন যাপন করতে হচ্ছে। ঘরে পুঁজি নেই কাজ না করে কিছুদিন চলবে। কেউ খোঁজ নেয়নি আমাদের মতো শ্রমিকদের। রাস্তায় ছোট ছোট অনেক পরিবহণ চলছে,শুধু বাস চলতে দেয়া হচ্ছে না। তাই খাদ্য সহায়তারও দাবী জানান তারা। চালা রেন্ট-এ কার মাইক্রোবাস চালক রনি,হোসেন,রুহুল আমিন জানায়, অনেক দিন ধরে গাড়ী বন্ধ থাকায় আয়ের পথও বন্ধ। রাস্তায় গাড়ী বের করতে পারছিনা। পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে জীবন যাপন করছি। বেলকুচি এনায়েতপুর আঞ্চলিক রোডে চলাচল করা বাস হেলপার রহিজ উদ্দিন,হোছেন জানায়,করোনা ঝুঁকির মধ্যে সবচেয়ে অসহায় ও মানবেতর জীবনযাপন করছে পরিবহন শ্রমিকরা। প্রায় অনেক দিন কর্মহীন থাকলেও কেউ ত্রাণ কিংবা সহায়তা দেয়নি। পরিবার নিয়ে তারা চরম উৎকণ্ঠা ও হতাশার মধ্যে দিন পার করছেন। সিরাজগঞ্জ জেলা মটর শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সদস্য ফারুক সিকদারের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান,শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছে এবং কিছু শ্রমিকের তালিকাও নিয়েছে তবে এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা মটর শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সুলতান মাহমুদ প্রতিবেদকে জানান,শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ হতে কোন সহায়তার ব্যবস্থা নেই। তবে প্রধান মন্ত্রী ঘোষিত শ্রমিকদের সহায়তার জন্য কিছু তালিকা দেয়া হয়েছে পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং সিরাজগঞ্জ সদরের কিছু শ্রমিকে ডিসি মহোদয় সহায়তা করবে বলে তিনি জানান।