চলতি বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে ৪০ টাকা কেজি দরে সেদ্ধ চাল এবং ২৭ টাকা কেজি দরে ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সিরাজগঞ্জ জেলায় এ বছর ১৯ হাজার ৩৭৬ টন ধান এবং ২১ হাজার ৯৩৬ টন চাল ক্রয় করা হবে। জেলায় চালের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৯৬ হাজার ৬৫৫ টন এবং ধানের উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৯৪ হাজার ৯৮২ টন। চাল ক্রয়ের জন্য জেলা খাদ্য বিভাগ এরই মধ্যে জেলার ৪৬৪ জন চালকল মালিকের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে চাল সরবরাহ করার কথা। চালের এ দর পেয়ে সিরাজগঞ্জের চাল ব্যবসায়ীরা খুশি হলেও খুশি হতে পারছেন না কৃষকরা। কারণ হিসেবে কৃষকরা বলছেন, জেলায় যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হবে, তার সামান্য পরিমাণ ক্রয় করবে সরকার। ফলে কৃষক তার সমুদয় উৎপাদিত ধানের নায্যমূল্য পাবেন না। তাই ধানের দাম বৃদ্ধি করলেও কৃষক খুব একটা লাভবান হতে পারবেন না। তাই সরকারিভাবে ধান ও চালের দর বৃদ্ধিতে খুব একটা খুশি হতে পারছেন না জেলার কৃষক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, এ বছর বোরো মৌসুমে দেশে ১০ লাখ টন সেদ্ধ চাল সংগ্রহ করা হবে। প্রতি কেজি চাল ৪০ টাকা দরে কেনা হবে। ৭ মে থেকে চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। সংগ্রহ শেষ হবে আগামী ৩১ আগস্ট। গত বোরো মৌসুমে চাল প্রতি কেজি ৩৭ টাকা এবং ধান ২৬ টাকা দর ছিল। এবার চালের দাম ৩ টাকা ও ধান ১ টাকা বেশি দরে ক্রয় করবে সরকার। জেলার তাড়াশ উপজেলার সগুনা এলাকার ইসমাইল হোসেন বলেন, কৃষক নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও ধান উৎপাদন করেন। কিন্তু বিক্রির সময় ক্রেতার ইচ্ছামাফিক দামে ধান বিক্রি করতে হয়। যার কারণে কৃষক ধানের ন্যায্যমূল্য পান না। তিনি আরো বলেন, সরকার যে দামে ধান ক্রয় করছে, সেই দরটা ভালো। কিন্তু এ দামে সরকার কৃষকদের সব ধান কিনে নিতে পারছেন না। ফলে কৃষকের ধান বিক্রির জন্য বাজারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। এতে আগের মতো সেই ক্ষতির মধ্যেই পড়তে হচ্ছে। তাই সরকারিভাবে ক্রয়ে ধান-চালের দাম বৃদ্ধি করলেও এখানে কৃষকের খুশি হওয়ার কিছু নেই। জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের আল আমিন বলেন, কৃষকের উৎপাদিত ধানের সামান্য অংশ ক্রয় করবে সরকার। বাকি ধান বাজার দর অনুযায়ী বিক্রি করতে হবে। সিরাজগঞ্জ চাতাল মালিক সমিতির সভাপতি আবু তালেব বলেন, সরকারি দরে আমরা কিছুটা খুশি। কেননা এর আগে ব্যবসায়ীরা অনেক লোকসানে চাল সরকারকে দিয়েছিলেন। এবার সেটা কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবে। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মাহবুবুর রহমান বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ধান-চাল ক্রয়ে করা হবে। আমাদের এর বেশি বা কম সংগ্রহ করার সুযোগ নেই।