বিএনপি’র নেতৃত্বে বৃহত্তর জোট গঠনের কাজ চলছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বৃহত্তর জোট গঠনের অগ্রগতি পর্যালোচনা করছে বিএনপি। কিন্তু অগ্রগতি কত দূর তা জানা যায়নি। গত শনিবার (২২ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা করেন বিএনপি নেতারা।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, জমির উদ্দিন সরকার, মঈন খান, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা, জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ, অফিসিয়াল সিক্রেটস আইনের মামলায় সাংবাদিক গ্রেফতার, গণমাধ্যমের ওপর ‘সরকারের নির্যাতন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘দুর্নীতি’, চীন ও রাশিয়া থেকে করোনা টিকা পেতে দেরি, বাংলাদেশকে টিকা দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘সুপারিশে’র জন্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ-এ সব বিষয়ে বিএনপি নেতারা আলোচনা করেন। এছাড়াও চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বৃহত্তর জোট গঠন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করেন বিএনপির নীতিনির্ধারণী ফোরামের সদস্যরা। পাশাপাশি বিএনপির স্থায়ী মিডিয়া সেল গঠন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলা, লক্ষ্মীপুর-২, সিলেট-৩, ঢাকা-১৪, কুমিল্লা-৫ আসনে উপ-নির্বাচনে করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
মাওলানা ইকবালের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত চায় বিএনপি: কারাবন্দি অবস্থায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা হেফাজতে ইসলামের সহসভাপতি ও খেলাফত মজলিসের উপজেলা সভাপতি মাওলানা ইকবাল হোসেনের মৃত্যুতে গভীর উদ্বেগ ও শোক প্রকাশ করেছে বিএনপি। এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এ ধরনের ভয়ানক ঘটনা ঘটতে থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য কোনো তদন্ত বা সন্তোষজনক বক্তব্য নেই।’
গত শনিবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে কারাগারে থাকা অবস্থায় মৃত্যুর ঘটনা একের পর এক ঘটেই চলেছে। বিশেষ করে বিরোধী বা ভিন্নমতের মানুষের ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটছে। এর দায় অবশ্যই সরকারকেই নিতে হবে।’
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘কারাগারে মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর এবং মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এর আগে বিএনপির সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক এমপি নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু, লেখক মুস্তাক আহমেদসহ অসংখ্য ভিন্নমতাবলম্বী মানুষের কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় রহস্যজনকভাবে মৃত্যু ঘটেছে।’ গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মাওলানা ইকবাল মারা যান। পুলিশ বলছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন। গত ১১ এপ্রিল বিকেলে ঢাকার জুরাইন রেলগেট বাজার মসজিদের সামনে থেকে ইকবাল হোসেনসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। সোনারগাঁ থানার চারটি মামলার মধ্যে দুটি মামলার প্রধান আসামি ইকবাল হোসেন। পরে ইকবাল হোসেন সোনারগাঁ থানার দুই মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। গত ১১ মে ইকবাল হোসেনকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে তাকে গত ১৫ মে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করা হয়। তাতেও শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হলে ১৮ মে তাঁকে আগারগাঁওয়ের নিউরোসাইয়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখান থেকেও তাঁকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই তিনি মারা যান।