মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

প্রবীণদের টপকে তৃণমূলে মমতার ভাইপোর অভিষেক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
  • আপডেট সময় বুধবার, ৯ জুন, ২০২১

ভাইপো অভিষেককে এবার দলের সাধারণ সম্পাদক করলেন মমতা। তিনি এতদিন ছিলেন যুব তৃণমূলের সভাপতি। এবার সেখান থেকে তাকে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বস্তুত, সংগঠনে মুখ্যমন্ত্রীর পরেই এখন ভাইপো অভিষেকের স্থান।

সংগঠনের বিষয় তিনি তো দেখবেনই, তার ওপর তাকে বিশেষ দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, অন্য রাজ্যে দলকে তৈরি করে ভোটে আসন জেতার। দলের প্রচুর প্রবীণ নেতাকে টপকে অভিষেককে এই গুরুত্ব দিয়ে মমতা বুঝিয়ে দিয়েছেন, আর কোনো রাখঢাক না করে, এই তরুণ নেতাকে তিনি উত্তরাধিকারী হিসাবে চিহ্নিত করতে চান। তাই এই নতুন দায়িত্ব। এতদিন সংগঠনে মমতার পরেই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন সাবেক সাংসদ সুব্রত বক্সী। তার আগে ছিলেন মুকুল রায়। যতদিন দলে ছিলেন ততদিন সংগঠনে গুরুত্ব পেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়া পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সৌগত রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়সহ একঝাঁক প্রবীণ নেতাকে টপকে অভিষেককে নতুন দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা। সাধারণত, এই ধরনের এক নেতা বা নেত্রী-শাসিত দলগুলিতে এরকমই হয়। তবে অভিষেক সূচনাটা করেছেন খুবই নম্রভাবে। যে ভুল কংগ্রেসে রাহুল গান্ধী করেছিলেন, সেটা অভিষেক করেননি বা করছেন না। তিনি প্রথমেই সব প্রবীণ নেতার সাথে দেখা করে তাদের প্রণাম করে আশীর্বাদ নিচ্ছেন। সুব্রত বক্সী, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে তিনি ইতোমধ্যেই দেখা করেছেন। এবার যাবেন সৌগত রায় ও অন্যদের কাছে। প্রবীণ নেতারাও সৌজন্যে আপ্লুত। সুব্রত বক্সী বলেছেন, ‘যা জানি সব তোকে শিখিয়ে দেব।’ তবে অতীতে মুকুল রায় ও শুভেন্দু অধিকারীরা বলেছিলেন, অভিষেককে প্রাধান্য দিতে গিয়ে তাদেরকে অবহেলা করা হচ্ছিল। বর্তমান প্রবীণ নেতাদের মনেও যে এই ভাবনাটা নেই তা নয়। কিন্তু তারা মুখ বুজে আছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর তাদের মধ্যেও ক্ষোভ-বিক্ষোভ যথেষ্ট। অভিষেক খুব একটা হাকডাক করছেন না। বরং ভোট পরবর্তী হিংসা থেকে শুরু করে অন্য সব বিষয়ে ‘লড়কে লেঙ্গে’ মনোভাব দেখাচ্ছেন না। তিনি তার কাজও শুরু করে দিয়েছেন। তিনি ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্তদের সাথে দেখা করেছেন। সোমবার রাজ্যে বাজ পড়ে ২৭ জন মারা গেছেন। অভিষেক তাদের বাড়ি যাবেন। সাধারণ মানুষের পাশে থাকার বার্তা দেবেন।
মমতা সরকারি বিষয়ে ব্যস্ত থাকায় এতদিন এই কাজটা সেভাবে হতো না। সেই কাজটাই করার চেষ্টা করছেন অভিষেক। এবার বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনিই মূলত ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর বা পিকেকে নিয়ে এসেছিলেন। খুব কাছ থেকে তিনি পিকের কার্যশৈলী দেখেছেন। প্রচুর আলোচনা করেছেন। এরপর তৃণমূলের যুবরাজ ভেবেচিন্তে মাপা পা ফেলছেন।
প্রবীণ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্র মনে করেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে একটা নতুন মোড় এসেছে। ভোটের আগে সিপিএমও বেশ কিছু তরুণ নেতাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রার্থী করেছে। এখন অভিষেককে সামনে নিয়ে এলেন মমতা। অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে তিনি যুব তৃণমূলের দায়িত্ব দিয়েছেন। একসময় প্রমোদ দাশগুপ্ত, বিমান বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যদের তুলে এনেছিলেন। তারপর সেই প্রয়াস থমকে গিয়েছিল। এখন আবার তা শুরু হয়েছে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে অভিষেকের ঘটনাটা ইতিবাচক।
অভিষেকের বয়স এখন ৩৪। সাত বছর ধরে তিনি সাংসদ। আগের তুলনায় নিজেকে বদল করেছেন। ভাষণ দেয়ার ধরণ বদল করেছেন। ভেবেচিন্তে কথা বলছেন। ওজন কমিয়েছেন। সবমিলিয়ে নিজেকে নতুন করে তুলে ধরার একটা চেষ্টা আছে তার। যে কোনো দলে তরুণদের তুলে আনতেই হয়। না হলে কংগ্রেসের মতো ধারভারহীন সুযোগসন্ধানী প্রবীণে দল ভরে যাবে এবং শেষ পর্যন্ত ভরাডুবি হবে। ফলে অভিষেকদের দায়িত্ব দিয়ে পাদপ্রদীপের আলোয় তুলে আনার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে না। প্রশ্ন হলো, তিনি এই দায়িত্ব কতটা ভালোভাবে পালন করবেন বা তার সেই যোগ্যতা আছে তো? না কি, পারিবারিক শাসনের ধারা বজায় রাখতে তার এই উত্থান? অভিষেক এখন মমতার ছত্রছায়ায় থেকে কাজ করবেন। তবে তার দায়িত্ব কম নয়। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের বাইরে। ত্রিপুরাসহ উত্তর পূর্বে এই চেষ্টাটা হয়েছিল। এখন তার ছিটোফোটাও আর অবশিষ্ট নেই। তৃণমূলের পরের কাজ হতে পারে ত্রিপুরা। তারপর উত্তর পূর্বের অন্য রাজ্য। অভিষেকের সুবিধা হলো, তিনি বাংলা, ইংরাজি, হিন্দি তিনটে ভাষাতেই দক্ষ। দিল্লির রাজনীতির সাথেও পরিচিত। প্রশান্ত কিশোরের সাহায্য ও পরামর্শ তিনি পাবেন। মমতা তাকে গাইড করবেন। তবে কয়লা কেলেঙ্কারি ও বিদেশ থেকে সোনা আনার মতো অভিযোগ তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আছে। কয়লা নিয়ে সিবি আইয়ের জেরার মুখেও তার স্ত্রীকে পড়তে হয়েছে। সেই সব অভিযোগ থেকেও তাকে বের হয়ে আসতে হবে। সূচনাটা ঠিক আছে। তবে এখনো অনেকটা পথ হাঁটতে হবে অভিষেককে। সূত্র : ডয়চে ভেলে




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com