বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের আশ্রয়নের বাসিন্দারা জীবন সংগ্রামে পরাজিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। আশ্রায়নের এসব বাসিন্দারা দীর্ঘদিন তাদের নূন্যতম সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাদের দীর্ঘদিনের দাবি আশ্রয়নটি সংস্কার ও সাইক্লোন সেল্টার নির্মান। সরেজমিনে জানা গেছে , ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর পরবর্তী এ ইউনিয়নের হেড়মা মিস্ত্রীডাঙ্গা গ্রামে সরকারিভাবে ৪ একর জমির ওপর এ আশ্রয়ন কেন্দ্রটি নির্মিত হয়। ভিটে মাটি বিহীন ৯০ পরিবারের ঠাই হয়েছে এ কেন্দ্রে। দীর্ঘ ১৩ বছরের এ আশ্রয়ন কেন্দ্রের মানুষগুলোর জীবন যাত্রার মানের কোন পরিবর্তন হয়নি। পাণীয় জলের জন্য নির্মিত ৪টি টিউবওয়েল টি অকেজো। ২টি টিউবওয়েল চুরি হয়ে গেছে। স্যানিটারী লেট্রিন অনেক আগেই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে রয়েছে। প্রতিটি কক্ষের পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। ঘূর্ণিঝড় আইলা, বুলবুল সর্বশেষ ইয়াসে উঠিয়ে নিয়েছে অনেক কক্ষের টিনের চালা। কোনমতে পলিথিন টানিয়ে বর্তমানে ২৫ টি পরিবার পরিবার ছেলে মেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ঝড়-বৃষ্টি রোদে এসব পরিবারে দুঃচিন্তার অন্ত থাকেনা। অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় এ কেন্দ্রটি। আশ্রয়নের বাসিন্দা বৃদ্ধা সাফিয়া বেগম(৭০), জাহানারা বেগম(৩৫), ফজলুর রহমান খান(৫৫), পাখি বেগম(৪৫), মালেক হাওলাদার(৬০), কামাল হাওলাদার(৬৫), ছালাম শেখ(৫০)সহ অনেকে জানান, আমাদের কষ্ট ও দুঃখের কথা শোনার কেউ নেই। অতিরিক্ত জোয়ারের ঘরে থাকে হাটুপানি। তখন চাল চুলা থাকে বন্ধ। বন্যা এলে ২-৩ গ্রামের মধ্যে নেই কোন সাইক্লোন শেল্টার কিংবা পাকা ভবন। দুই কিলোমিটার পায়ে হেটে খাবার পানি সংগ্রহ করতে হয়। ইউনিয়নের ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম ও ফজলুর রহমান বলেন, আশ্রয়ন কেন্দ্রটি নির্মাণের পরে আর কোন সংস্কার হয়নি। জরুরি ভিত্তিতে এটি সংস্কার হওয়া প্রয়োজন। ইউপি চেয়ারম্যান মোরশেদা আক্তার বলেন, আশ্রয়ন কেন্দ্রটি জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার না হলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, তেলিগাতি আশ্রয়ন প্রকল্পের জরাজীর্ণ বিষয়টি শুনেছি। শুধু তেলিগাতি আশ্রয়ন কেন্দ্রটি নয় সব আশ্রয়ন সংস্কারের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয় সহ সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের দপ্তরে তালিকা প্রেরন করা হবে।