মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

কটিয়াদীতে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ-বেত শিল্প

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি :
  • আপডেট সময় শনিবার, ১২ জুন, ২০২১

বাড়ির পাশে সাজানো রয়েছে সারিসারি বাঁশ। সেই বাঁশগুলো থেকে বাছাই করা বাঁশটি সঠিক মাপে কাটা হচ্ছে। তারপর সেই বাঁশ থেকে তোলা হচ্ছে চিকন বেতি। সকাল থেকেই বাঁশ কাটা, বেতি তোলা আর সেই বেতি দিয়ে ওড়া, খাঁচা, ঢোলা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ফেকামারার ঢুলিকান্দা গ্রামে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। বাঁশ দিয়ে তৈরি পণ্য পরিবেশ বান্ধব হলেও বিকল্প প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে, পণ্যের ন্যায্য দাম না পাওয়া, ক্রেতার সংকটে দিন-দিন বিক্রি কমছে বাঁশ ও বেতের তৈরির জিনিসের। আর করোনার কারনে গ্রামীন মেলা ও হাট-বাজার বন্ধ থাকায় সেই বিক্রি তলানিতে নেমেছে। ফলে চরম অস্তিত্ব রক্ষার সংকটে ভোগচ্ছে এখানকার বিখ্যাত বাঁশ-বেত শিল্প। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ওই গ্রামের প্রায় অর্ধ-শতাধিক পরিবার বাঁশ- বেত শিল্পের উপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। সংসারের যাবতীয় কাজ সামলে পরিবারের পুরুষ সদস্যের কাজে সহযোগিতা করতে দেখা যায় নারী সদস্যদের। বাঁশ দিয়ে তৈরি যাবার, ঢোলা, ডালা, চাটাই, কুলা, ওড়া, চালুন, মই, মাথাল, চাঁই, খাঁচা, ঝুড়িসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি করেই চলে তাদের জীবনসংসার। একটা সময় ছিল এই শিল্পে জড়িত ছিলেন কয়েক’শ শ্রমিক। সকাল থেকে বাঁশ কাটার আওয়াজ শুরু হতো এই গ্রামের সর্বত্র। একদিকে করোনা, লকডাউন অন্যদিকে প্লাস্টিক পণ্যের ছড়াছড়িতে সেই চিরচেনা শব্দ অনেকটাই স্তব্দ হয়ে গেছে। স্বাভাবিক নিয়মে সংসারে টান পড়েছে এই পেশায় জড়িতদের। সুখের সেই দিন আর নেই। আবার কবে তাদের মুখে হাসি ফুটবে এখন সেদিকে তাকিয়ে এই পেশায় নিয়োজিত সকলে। এই পেশার সাথে জড়িত আবু তাহের(৭০) জানান, আগে এলাকার ঝোঁপঝাড়ে বেত পাওয়া যেত। এখন ঝোঁপঝাড় নেই তাই বেতও নেই। মাত্র কয়েক বছর আগেও এ অঞ্চলে বাঁশও সহজলভ্য ছিল। ৫০ থেকে ৬০ টাকায় একটি বাঁশ কেনা যেত। এখন একটির দাম দেড়শ থেকে দুইশ টাকা। কিন্তু সেই অনুপাতে তৈরি জিনিসপত্রের দাম বাড়েনি। বাঁশ দিয়ে একটি ওড়া তৈরি করতে ৫০ টাকা খরচ পড়ে। অথচ বাজারে তা ৫০ টাকার বেশি বিক্রি করা যায় না। গত ৫৫ বছর ধরে শেঁকড় আকড়ে ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছি। করোনার আগে উপজেলা সমাজসেবা অফিস থেকে ৩০ জনকে প্রশিক্ষণ ও ১০ জনকে অনুদান দিয়েছিল । কিন্তু করোনার এই দুঃসময়ে কোন সরকারি সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ করেন তাহের। এই গ্রামের রেখা(৩৫) জানান, ধানের মৌসুম চলছে তাই যাবার ও ঢোলার কিছুটা চাহিদা রয়েছে। তাই ঢোলা তৈরি করছি। একসময় বোরো ধান মৌসুমে এখানের তৈরি ঢোলা কুমিল্লা, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, বিবাড়ীয়া সিলেট, নেত্রকোনাসহ ময়মনসিংহ হাওর অঞ্চল থেকে পাইকারা এসে কিনে নিয়ে যেত। কিন্তু বর্তমানে প্লাস্টিকের এই যুগে এর চাহিদাও কমে গেছে। এখন অভাব-অনটনে আমাদের দিন কাটচ্ছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডাঃ মোহাম্মদ মুশতাকুর রহমান বলেন, এই উপজেলার কিছু মানুষ এখনও বাঁশ-বেত শিল্পের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে। এই কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com