স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘সরকার কিংবা কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত টোল বা রাজস্ব নির্ধারিত টার্মিনাল থেকেই আদায় করতে হবে। যত্রতত্র যানবাহন দাঁড় করিয়ে কোনও চাঁদা আদায় করা যাবে না। পরিবহন শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দিতে হবে।’ গতকাল রবিবার (২০ জুন) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সড়ক পরিবহন টাস্কফোর্স এর সভা শেষে তিনি এসব কথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’র সভাপতিত্বে এই আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরই মধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকিগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করবো সে জন্য আমরা একটা কর্মপন্থা নির্ধারণ করেছি। সেগুলো নিয়ে পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা করবো।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে আমরা লক্ষ্য করেছি রিকশা ও ভ্যানে ব্যাটারি চালিত মটর লাগিয়ে রাস্তায় চালানো হচ্ছে। এগুলোতে ব্রেকের সিস্টেমও দুর্বল ও অপ্রতুল। এগুলো যখন হঠাৎ ব্রেক করে তখন প্যাসেঞ্জারসহ উল্টে যায়। এই দৃশ্য আমরা দেখেছি। হাইওয়েগুলোতেও রিকশা-ভ্যান চলে আসছে। এগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আদেশ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে সারাদেশে পাঠানো হবে। নসিমন-করিমন ও ইজিবাইকগুলো যাতে বড় রাস্তায় আসতে না পারে এবং শেষ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে বন্ধ করে দেওয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। প্যাডেল চালিত রিকশা ও ভ্যান সম্পর্কে আমরা বলছি না’
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘একজন করে ফোকাল পয়েন্ট থাকবে চারটি মন্ত্রণালয়ে। সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য তারা একটা কর্মপদ্ধতি বের করে আমাদের পরবর্তী বৈঠকে অবহিত করবে।’ ‘স্থানীয় সরকার পরিচালিত সিটি করপোরেশন কিংবা অনুমোদিত টার্মিনাল ছাড়া অন্য কোথা থেকে কেউ চাঁদা আদায় করতে পারবে না। রাস্তায় দাঁড় করিয়ে কেউ চাঁদা নিতে পারবে না। নির্ধারিত স্থান থেকেই তাকে চাঁদা কিংবা টোল নিতে হবে।’Íবলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী আরও বলেন, ‘যারা পরিবহন শ্রমিক আছেন তাদের মালিকপক্ষ থেকে নিয়োগপত্র দিতে হবে। আজকের বৈঠকে তারা উভয়পক্ষই ছিলেন। খুব দ্রুত এই বিষয়টি তারা বাস্তবায়ন করবেন বলে জানিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি মোটরসাইকেলে তিন-চার জন করে উঠছেন। এ জন্য প্রায়ই তারা দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন বা কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছেন। মোটরসাইকেলে কোনোভাবেই চালকসহ দুই জনের বেশি যেন উঠতে না পারেন সেজন্য পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সারাদেশের দুর্ঘটনাগুলোর কারণগুলো নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। আজকের বৈঠকে বুয়েটের বিশেষজ্ঞরাও ছিলেন। তারা সার্ভে করে আমাদের একটা বিস্তারিত প্রতিবেদন দেবেন। অনিবন্ধিত যেসব মোটরসাইকেল চলে, সেগুলোকেও নজরদারিতে আনা হবে। নিবন্ধন ছাড়া যাতে কোনও যানবাহন রাস্তায় চলতে না পারে।’ সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ঘটনা বাড়েনি। তবে দুর্ঘটনা হচ্ছে। এসব দুর্ঘটনার অনেকগুলো কারণ আমরা চিহ্নিত করেছি। সেগুলো কমানোর জন্যই আমরা কাজ করছি।’ তিনি বলেন, ‘চাঁদা বাণিজ্যের কথা আমি বলবো না। তবে পৌরসভা সিটি করপোরেশনের যে টোল বা রাজস্ব দিতে হবে। সেটা কত টাকা নেবে, কীভাবে নেবে সেটা নির্ধারণ করা হবে। মালিক-শ্রমিকরা সমিতির মাধ্যমে যে চাঁদা নিয়ে থাকেন সেটাও নির্ধারিত রয়েছে। সেই টাকাও টার্মিনাল ছাড়া অন্য কোথা থেকে নেওয়া যাবে না।’