টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কাঁঠালের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর মির্জাপুরের পাহাড়ি অঞ্চল হিসেবে খ্যাত উপজেলার আজগানা, লতিফপুর, বাঁশতৈল ও তরফপুর ইউনিয়নে প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল উৎপাদন হয়। এসব এলাকা ছাড়াও মির্জাপুর পৌরসভাসহ উপজেলার বহুরিয়া, গোড়াই, ভাওড়া, ভাদগ্রাম, জামুর্কী, মহেড়া, ফতেপুর, আনাইতারা ও ওয়ার্শী ইউনিয়নে কাঁঠালের বাগান না থাকলেও প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই গাছে প্রচুর কাঁঠাল এসেছে।
একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত মির্জাপুর উপজেলা। উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চল আজগানা, বাঁশতৈল, লতিফপুর ও তরফপুর ইউনিয়নে বিপুলসংখ্যক কাঁঠালের বাগান রয়েছে। এ অঞ্চলের কৃষকরা প্রতি বছর লাখ লাখ টাকার কাঁঠাল বিক্রি করে থাকেন।
মির্জাপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় কাঁঠালের হাট বসে মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল বাজার। শুক্রবার সাপ্তাহিক হাট হলেও জাতীয় ফল কাঁঠাল বিক্রির জন্য এ বাজারে সপ্তাহে দুদিন হাট বসানো হয়।
কাঁঠাল কিনতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা আসেন এ হাটে। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা লকডাউন থাকায় এবার আগের মতো বেশি ব্যবসায়ী আসতে পারছে না। অন্য বছরের মতো ব্যবসায়ী আসতে পারলে আরও বেশি দামে কাঁঠাল বিক্রি হতো বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।
বাঁশতৈল বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ হাটে ২ কেজি থেকে ৫ কেজি ওজনের কাঁঠাল সর্বোচ্চ ৫০ টাকা, ৬ কেজি থেকে ১৫ কেজি পর্যন্ত ১০০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ১৫ কেজির ওপরে প্রতিটি কাঁঠাল ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার (২১ জুন) সরেজমিন বাঁশতৈল বাজারে ঘুরে দেখা যায়, হাটে প্রচুর পরিমাণে কাঁঠাল আমদানি হয়েছে। ক্রেতাও পর্যাপ্ত রয়েছে। দামেও খুশি কৃষকরা।
অভিরাম গ্রামের আলমাছ মিয়া বলেন, বাড়ির সামনে দিয়ে পাকা রাস্তা। এ কারণে কাঁঠাল নিয়ে হাটে আসতে পেরেছি। দামও ভালো পেয়েছি। গ্রামের কৃষকরা রাস্তার কারণে কাঁঠাল নিয়ে হাটে আসতে পারছেন না।
বাঁশতৈল হাটে পাইকারি কাঁঠাল কিনতে আসা নেত্রকোনার কালমাকান্দা উপজেলার বাবোমারা গ্রামের ব্যবসায়ী রফিক চান বলেন, ঢাকার উত্তর বাড্ডাতে পাইকারি সরবরাহ দিতে তিনি প্রায় এক হাজার কাঁঠাল কিনেছেন। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, মির্জাপুরের পাহাড়ি অঞ্চলে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর কাঁঠালের উৎপাদন কম হয়েছে। তবে কৃষক দাম ভালো পাচ্ছে বলে তিনি জানান।