করোনা ভাইরাসের কারণে ১৬ মাস ধরে দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। ফলে দেশের প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থীর পড়াশোনা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়েছে। ইউনিসেফ ও ইউনেসকো সম্প্রতি বলেছে, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য আর অপেক্ষা করা যায় না।’
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, এখন শিক্ষার সংকট বিশ্বব্যাপী। ইউনিসেফ-ইউনেসকো অতি সম্প্রতি বলেছে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে, শিক্ষার সংকট বিপর্যয়কর হতে পারে। তারা আরও বলেছে, স্কুল খুলে দিলে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা কম। সবকিছু বিবেচনায় খুলে দেওয়া দরকার। কিন্তু দেশে এখন সংক্রমণের যে হার এবং এখন মৃত্যুর সংখ্যাও যা, তাতে এই মুহূর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। এটি নিশ্চয়ই সবাই মনে করেন। আর এখন করোনার ডেলটা ধরনের পর অনেক শিশুও আক্রান্ত হচ্ছে। এটিও বিবেচনায় রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা তখনই খুলে দিতে পারব, যখন মনে করব এখন আশঙ্কা অনেক কম। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিও মোটামুটি একটি অবস্থায় নিয়ে আসতে পারি, যখন তাদের মাধ্যমে পরিবারে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে না। সংক্রমণের হার কিছুটা কমে গেলে হয়তো প্রস্তুতি নিয়ে খুলতে পারব।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরাও মনে করি যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক অবস্থায় শ্রেণিকক্ষের পাঠদানে ফিরিয়ে নিতে পারব, ততই মঙ্গল। আমরা এখন অনলাইন টিভির মাধ্যমে পাঠদান, অ্যাসাইনমেন্ট এগুলোর কোনোটিই শ্রেণিকক্ষের আদর্শ বিকল্প নয়। শ্রেণিকক্ষের পাঠদানের অনেক সুফল রয়েছে। শুধু সামনাসামনি শিক্ষকের সঙ্গে আদান-প্রদান, বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে শেখাÍশুধু এসব সুফল রয়েছে তা–ই নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যখন শিক্ষার্থী আসে, তখন তার শারীরিক ও মানসিক বিকাশে স্বাভাবিক যে সুযোগ থাকে, সেই সুযোগ থেকেও শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে। এটি বোঝার জন্য, জানবার জন্য নিশ্চয়ই দাতা সংস্থার মন্তব্যের প্রয়োজন পড়ে না। করোনা পরিস্থিতিতে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে।
সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, ৩১ জুলাই পর্যন্ত ছুটি আছে। যদিও সরকার ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আবারও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটিও স্বাভাবিকভাবে বাড়বে। এর মধ্যে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে বিষয়টি আরও স্পষ্ট যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আপাতত আর খুলছে না।