বর্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে যশোর শিক্ষাবোর্ড। প্রবেশ পথ থেকে শুরু করে গোটা ক্যাম্পাসে হাঁটু পানি জমে আছে। ড্রেন নির্মাণের জায়গায় দোকানঘর তৈরি করায় গত ২০ বছর ধরে এ অবস্থার চলে আসছে। এতে স্বাভাবিক কাজকর্ম চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়ছেন বোর্ডের শ’শ’ কর্মকর্তা-কর্মচারী। সাথে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে নানা কাজে আসা লোকজনও। সমস্যা সমাধানে বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি চালাচালি করেও কোনো সমাধান হচ্ছে না। যশোর শিক্ষাবোর্ড ক্যাম্পাসের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে প্রাচীর ঘেঁষে দোকানঘর তৈরি করা হয়েছে। জেলা পরিষদের এই জায়গা দিয়ে ড্রেন হওয়ার কথা। কিন্তু সেমিপাকা দোকানঘর হওয়ার কারণে গত ২০ বছর ধরে ড্রেন করা যাচ্ছে না। ফলে, আশপাশের উঁচু এলাকার সমস্ত পানি বোর্ড ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পুরো বর্ষা মৌসুম জলাবদ্ধ করে রাখছে। সরেজমিন দেখা গেছে, প্রধান সড়কের পাশ থেকে শুরু করে পুরো বোর্ড ক্যাম্পাস ডুবে আছে। কোথাও হাঁটু পানি। আবার কোথাও তারও বেশি। প্রতিনিয়ত ঢেউ খেলে যাচ্ছে। প্রধান সড়ক থেকে ভ্যানে করে যেতে হচ্ছে বোর্ডের ভবনগুলোতে। যাওয়া-আসায় প্রত্যেকের ১০ টাকা কওে ভ্যান ভাড়া হচ্ছে। শরিফুল নামে একজন ভ্যানচালক বলেন, ‘পানি ঠেলে মানুষকে অফিসে তুলে দিই। বিনিময়ে যে যা দেয় তাই নিই।’ ভ্যান না থাকলে পানিতে ভিজে যাতায়াত করা লাগছে। দীর্ঘ সময় জমে থাকা পানি এক প্রকার বিষাক্ত হয়ে গেছে। নূর হোসেন নামে বোর্ডের একজন কর্মচারী বলেন,‘পানিতে নামলেই চুলকায়।’ নারীদের যাতায়াতে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এই ক্যাম্পাসে থাকা সোনালী ব্যাংক ও পোস্টঅফিসে আসা লোকজনকেও দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ভাই ভাই হোটেলটি সরিয়ে দিলেই শ’শ’ মানুষের জনদুর্ভোগ লাঘব হবে। কিন্তু সেই কাজটি দীর্ঘ ২০ বছরে জেলা পরিষদ করতে পারেনি। অথচ অবৈধভাবে এখানে এই ভাই ভাই হোটেল নির্মাণ করা হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান ডক্টর প্রফেসর মোল্লা আমীর হোসেন বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। জনদুর্ভোগের বিষয়টি আমলে নিচ্ছে কোনো দপ্তরই। চিঠি দিতে দিতে হতাশ বোর্ড চেয়ারম্যান এখন দুর্ভোগের চিত্রটি ফেসবুকে লাইভ করছেন সমাধানের আশায়। তিনি জানান, ভাই ভাই হোটেলের কারণে একদিকে বোর্ড ক্যাম্পাস জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। অপরদিকে, ওই হোটেলের সমস্ত বর্জ্য বোর্ডের প্রাচীরের মধ্যে ফেলা হয়। যে কারণে দুর্গন্ধে তার কোয়ার্টারে বসবাস করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। তিনি এই অবস্থার উত্তরণের জন্যে জেলা প্রশাসক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ বিষয়ে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুলের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘উকিল কমিশন করে জায়গা মেপে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভাই ভাই হোটেলের পক্ষে আদালতে মামলা করেছে। ওরা মামলায় ঠিকমতো হাজিরা দেয় না। শুধু সময় নেয়। মামলা নিষ্পত্তি হলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’