২৫ দিনের ব্যবধানে চতুর্থ বার পদ্মাসেতুর পিলারে ধাক্কা দিয়েছে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটের ফেরী। সর্বশেষ আজ সকালেও কাকলী নামের একটি ছোট ফেরী ধাক্কা দিয়েছে সেতুর ১০ নম্বর খুটিতে। এমন অবস্থায় পদ্মাসেতুর সুরক্ষায় মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটটি শরীয়তপুরের মাঝিরকান্তিতে স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। আজ পদ্মাসেতু এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ঘাট স্থানান্তরের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের পাশাপাশি শরীয়তপুরের মাঝিরকান্দি ঘাটও পরিদর্শন করেন প্রতিমন্ত্রী।
পদ্মাসেতুর পিলারে ফেরী ধাক্কা দেয়ার ঘটনাটি ব্যাপকভাবে আলোচনায় আসে গত ২৩ জুলাই। ওইদিন রো রো ফেরী শাহজালাল ধাক্কা দেয় সেতুর ১৭ নম্বর পিলারে। ঘটনার দিনই একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন। ২৫ জুলাই দুর্ঘটনার কারণ, দায়-দায়িত্ব ও সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করে কমিটি। সুপারিশে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটটি শরীয়তপুরের মাঝিরকান্তিতে স্থানান্তরের সুপারিশ করা হয়। গতকাল শুক্রবার পদ্মাসেতু এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা অনেক বড় কথা। এ সেতুতে আঘাত যেন আমাদের হূদয়ে আঘাত। এতে হালকা আঘাত লাগলেও আমরা এটাকে হালকাভাবে দেখছি না। আমরা এতে বিব্রত হচ্ছি। দায়িত্বে উদাসীনতার কারণগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পরিদর্শকালে অন্যদের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেকসহ পদ্মাসেতু প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত. গত ২০ জুলাই পদ্মাসেতুর একটি পিলারে ধাক্কা দিয়েছিল রো রো ফেরী শাহমখদুম। ২৩ জুলাই সেতুর ১৭ নম্বর পিলারে ধাক্কা দিয়েছিল রো রো ফেরী শাহজালাল। ওই ঘটনায় পিলারে তেমন কোনো ক্ষতি না হলেও আহত হয়েছিলেন ফেরীর অন্তত ২০ জন যাত্রী। পরে ফেরী শাহ জালালের চালককে (মাস্টার) সাময়িক বরখাস্ত করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)। ঘটনা তদন্তে বিআইডব্লিউটিসির একজন পরিচালককে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়। কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয় ২৫ জুলাই। প্রতিবেদনে দুর্ঘটনার জন্য ফেরীর মাস্টার ও হুইল সুকানীকে দায়ী করা হয়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে বাংলাবাজার ঘাটটি মাঝিকান্দি অথবা পুরনো মাওয়া-বাংলাবাজারে স্থানান্তর, সেতুর পিলারে রাবারের ফেল্ডার স্থাপন এবং শক্তিশালী ইঞ্জিন ক্ষমতার জলযান চালানোর সুপারিশ করে। পরবর্তীতে ২৯ জুলাই ঘটনার সরেজমিন তদন্তের জন্য আরেকটি কমিটি গঠন করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
গত ৯ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টার দিকে সেতুর ১০ নম্বর পিলারে ধাক্কা দিয়েছি রো রো ফেরী বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর। এই ঘটনায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটের ফেরী শাহ জালালের চালককে (মাস্টার) সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিআইডব্লিউটিসি। পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে বিআইডব্লিউটিসির একজন পরিচালককে প্রধান করে চার সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।