সত্যজিৎ রায় অস্কারজয়ী বিশ্বনন্দিত এমনই একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা যাকে বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অন্যতম একজন হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। গত ২১ মে ছিলো বিশ্ববরেণ্য এই চলচ্চিত্র নির্মাতার শততম জন্মদিন। তার জন্মদিনে তার প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে গেলো ২৬ আগস্ট প্রকাশিত হলো ‘অপরাজিত সত্যজিৎ’। এটি প্রকাশ করেছে ভারতের কলকাতা’র কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মাস কমিউনিকেসন সেন্টার। সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ মুক্তি পেয়েছিলো ১৯৫৫ সালের ২৬ আগস্ট। তাই সত্যজিৎ রায়ের জন্মের ১০০ বছর পূর্তিতে বইটি প্রকাশ করা হলো প্রথম সিনেমার মুক্তির দিনটিতে। পৃথিবীর আটটি দেশ যেমন বাংলাদেশ, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, জাপান, জার্মানি, কানাডা ও ভারত বর্ষের ৫৫ জন বিশিষ্ট লেখক এই বইটিতে লিখেছেন।
বাংলাদেশ থেকে একমাত্র নন্দিত নায়িকা ববিতাই এই বইটিতে লেখার সুযোগ পেয়েছেন শুধুমাত্র সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ সিনেমায় অভিনয়ের সুবাদে। বইটির ভূমিকা লিখেছেন সত্যজিৎ’র চলচ্চিতত্রের আরেক নায়িকা শর্মিলা ঠাকুর। এমন একটি বইয়ের অংশ হতে পেরে এবং বইটিতে সত্যজিৎ’কে নিয়ে কিছু লিখতে পেরে ভীষণ গর্বিত ববিতা। কানাডা থেকে মুঠোফোনে ববিতা তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন,‘বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা’তে কাজ করে আমি নিজেকে সৌভাগ্যবতী মনে করি। বাংলাদেশের একজন মেয়ে হিসেবে সারা বিশবে আমি পরিচিতি লাভ করেছি শুধুমাত্র তার সিনেমাতে অভিনয় করেই। তার জন্যই আমি বার্লিন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, মস্কো’সহ আরো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করেছি।
আমার দেশ আজও আমাকে নিয়ে সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্রে কাজ করার জন্যই গর্ব অনুভব করে। এখনো আমার বাড়ির প্রতিটি জায়গায় মানিক দা’র (সত্যজিৎ রায়) ছবি। তিনি আমার আপনজন। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি তার ছবি ছবিগুলো এখানো বেশ আগ্রহ নিয়ে একাগ্রচিত্তে দেখি। আত্মীয়স্বজনকে বলেছি আমার মৃত্যুর পর আমার বাড়ি যেন বিক্রি বা ভাড়া না দেয়া হয়। মানিক দা’র এই স্মৃতিগুলো আমি আমার ভক্তদেরও চিরদিন দেখাতে চাই। পরিশেষে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা ভালোবাসা রইলো কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড কমিউনিকেসন সেন্টার’র তাদের প্রতি যারা বইটি প্রকাশ করেছেন ভীষণ আন্তরিকতা নিয়ে।’ এদিকে ববিতা বর্তমানে কানাডাতে তার একমাত্র ছেলে অনিকের কাছে আছেন। শিগগিরই তিনি আমেরিকা যাবেন তার ভাইদের সঙ্গে দেখা করতে। সেখানে তিনি তার নিয়মিত চেকআপও করাবেন বলে জানিয়েছেন। সেখান থেকে আবার তিনি ফিরে যাবেন ছেলের কাছে কানাডায়। তারপর অনিকের সঙ্গে কথা বলে দেশে আসার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিবেন।