রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
বিজয় ছিনিয়ে নিতে ষড়যন্ত্র চলছে: নজরুল ইসলাম খান পতিত আ’লীগ সরকারের কবল থেকে ভিক্ষুকরাও রেহাই পায় নাই : ডা. শফিকুর রহমান জাতির মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই : তারেক রহমান ব্যবসায়ী ওয়াদুদ হত্যা: সাবেক ডিসি মশিউর সাত দিনের রিমান্ডে ভারতে ‘অবৈধ’ শেখ হাসিনা, এখন কী পদক্ষেপ নেবে ভারত দেশবাসী তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছে ফোন নম্বর মুখস্থ থাকাই কাল হলো তোফাজ্জলের? আরও কিছু সংস্কার কমিশন করার পরিকল্পনা আছে : নাহিদ মুসল্লিদের প্রতিরোধের মুখে স্বৈরাচারী হাসিনার নিযুক্ত খতিব রুহুল আমিনের পলায়ন আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া দেশের জন্য অশনিসংকেত: অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার

ইসলামে সৌন্দর্য ও রুচিবোধ

মো: আবদুল গনী শিব্বীর:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ইসলাম কেবল ধর্মের নাম নয় বরং পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থার নাম। জীবনসংক্রান্ত সব বিষয়ে ইসলামের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। ইসলামে রয়েছে সৌন্দর্য ও রুচিবোধের দারুণ এক সমন্বয়। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জীবন, সুরুচির অনুপম অনুশীলন সত্যিই ইসলামকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জীবনব্যবস্থার আসনে সমাসীন করেছে। এক কথায় মানুষের আচার আচরণ, জীবন ধারণের বৈচিত্র্যতা, খাবার দাবারসহ সব কিছুতেই রয়েছে সৌন্দর্য ও রুচিবোধের সমন্বয়।
ইসলাম ধর্মে ব্যক্তিজীবনের বাহ্যিক কিংবা অভ্যন্তরীণ সব ধরনের সৌন্দর্য ও রুচিবোধের গুণাগুণ বা বৈশিষ্ট্যাবলি অর্জনের ব্যাপারে বেশ তাগিদ দেয়া হয়েছে। মানুষের অভ্যন্তরীণ অন্তরাত্মা ও দৃষ্টিভঙ্গি যদি সুন্দর বা পরিচ্ছন্ন বা রুচিকর না হয় তাহলে বাহ্যিক সৌন্দর্য মূল্যহীন হয়ে পড়ে। একজন দেহাবয়বে সুন্দর ব্যক্তির মন মানসিকতা যদি নীচু হয়, তার কথাবার্তা যদি কর্কশ হয়, তার আচরণ যদি হিংস্র কিংবা নিকৃষ্ট পশুর আচরণের মতো হয়, যদি তার মধ্যে মানবীয় আচার আচরণের বিপরীতে দানবীয় আচার আচরণ প্রকাশ পায়, পোশাক পরিচ্ছেদে নোংরামি প্রকাশ পায়, খাবার দাবার গ্রহণেও অভদ্রতা প্রকাশ পায় তাহলে সুন্দর দেহ কিংবা সুন্দর চেহারার মানুষের এরকম রুচিকে কেউই সুরুচি বলবে না। অপরিচ্ছন্ন জীবন যাপনে অভ্যস্ত ব্যক্তির জীবন ধারণের অনাকাক্সিক্ষত এ অসুন্দর অভ্যাসকে কেউই ‘সৌন্দর্য’ বা ‘রুচিবোধ’ বলবে না। ইসলাম ব্যক্তির বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ জীবনে সৌন্দর্য অর্জন, সুরুচির অনুশীলন, সর্বাবস্থায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর অটল থাকার ব্যাপারে জোর তাগিদ দিয়েছে। পবিত্র কুরআন ও সহিহ সুন্নাহে স্পষ্ট ও সুনিপুণ ভাষায় এ সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং যাহারা পবিত্র থাকে তাহাদেরও ভালোবাসেন (সূরা আল বাকারাহ : আয়াত : ২২২)। তিনি আরো বলেন, ‘হে মুমিনগণ! যখন তোমরা সালাতের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করিবে এবং তোমাদের মাথা মসেহ্ করিবে এবং পা গ্রন্থি পর্যন্ত ধৌত করিবে; যদি তোমরা অপবিত্র থাকো, তবে বিশেষভাবে পবিত্র হবে। তোমরা যদি পীড়িত হও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেহ শৌচস্থান থেকে আসে, অথবা তোমরা স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গত হও এবং পানি না পাও তবে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করবে এবং তা দিয়ে তোমাদের মুখমণ্ডল ও হাত মাসেহ্ করিবে। আল্লাহ্ তোমাদেরকে কষ্ট দিতে চান না; বরং তিনি তোমাদের পবিত্র করিতে চান ও তোমাদের প্রতি তার অনুগ্রহ সম্পন্ন করিতে চান; যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো’ (সূরা আল মায়েদা : আয়াত : ০৬)। সত্যিকার অর্থে ইসলাম তার অনুসারীদের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণভাবে সৌন্দর্যমণ্ডিত করতে চায়, পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন জীবনে অভ্যস্ত করতে চায়। ইসলামের নির্দেশনা অনুসারে আমরা জানতে পারলাম যে, তাওবা অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে আর পবিত্রতা ব্যক্তির বাহ্যিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, ব্যক্তিকে দেহমনে পরিশুদ্ধ ও পরিচ্ছন্ন করে সর্বোপরি ব্যক্তিকে আল্লাহর পরম প্রিয় করে তোলে।
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম, যা মানবজাতির জন্য রহমত। কেবল বিশ্বাসীদের জন্য নয়, বরং বিশ্বাসী অবিশ্বাসী সবার প্রতিই ইসলামের সৌন্দর্য ও রুচিবোধে অর্জন ও অনুশীলনের নির্দেশনা। ইসলাম ব্যক্তির বাহ্যিক পোশাক পরিচ্ছদে সৌন্দর্য প্রকাশ ও রুচির সমন্বয়কে দারুণভাবে উৎসাহ প্রদান করেছে। পবিত্র কুরআনে এসেছে, আল্লাহ পাক বলেন, ‘তোমার পোশাক পরিচ্ছদ পবিত্র রাখো’ (সূরা আল মুদ্দাসসির : আয়াত : ৪)। তিনি আরো বলেন, ‘হে মানবজাতি! আমি তোমাদের জন্য পোশাকের ব্যবস্থা করেছি, তোমাদের দেহের যে অংশ প্রকাশ করা দোষণীয় তা ঢাকার জন্য এবং তা সৌন্দর্যেরও উপকরণ। বস্তুত তাকওয়ার যে পোশাক সেটাই সর্বোত্তম। এসব আল্লাহর নির্দেশনাবলির অন্যতম, যাতে মানুষ উপদেশ গ্রহণ করে (সূরা আল আরাফ : আয়াত : ২৬)। হাদিস শরিফে এসেছে : ‘আল্লাহ সুন্দর। তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন’ (মুসলিম শরিফ, হাদিস : ৯১)। ইসলামী শরিয়তে নারী-পুরুষের পোশাক পরিচ্ছদের সুনির্দিষ্ট বিধিবিধান রয়েছে, সে মোতাবেক নারী-পুরুষের পোশাক ও পরিচ্ছদের মাধ্যমে রুচিবোধ ও সৌন্দর্য প্রকাশ করা। তবে পোশাকের মাধ্যমে আভিজাত্য প্রকাশের নামে অশ্লীলতার প্রচার প্রসার কিংবা অপচয় করা কিংবা অহঙ্কার প্রদর্শন করা, এসব কিছুকে ইসলাম হারাম হিসেবে গণ্য করেছে। এ প্রসঙ্গে হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘বিলাসিতা পরিহার করো। আল্লাহর নেক বান্দারা বিলাসী জীবনযাপন করো না’ (মুসনাদে আহমাদ : হাদিস : ২২১০৫)। তিনি আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি (অহঙ্কার নিয়ে) দুনিয়াতে প্রসিদ্ধির পোশাক পরবে আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন তাকে লাঞ্ছনার পোশাক পরাবেন। অতঃপর তাকে অগ্নিদগ্ধ করা হবে’ (সুনানে আবু দাউদ : হাদিস : ৪০২৯)। হাদিস শরিফে আরো এসেছে, রাসূল সা: অভিসম্পাত করেছেন ওই পুরুষকে যে নারীর পোশাক পরে এবং ওই নারীকে যে পুরুষের পোশাক পরে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪০৯৮) মূলত এ হাদিসের মাধ্যমে অশ্লীলতার ধারক বাহকদের সতর্ক করা হয়েছে। মুহাদ্দিস, নোয়াখালী কারামাতিয়া কামিল মাদরাসা, সোনাপুর, নোয়াখালী




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com