প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ডিমেনশিয়া রোগীদের জন্য বিশেষ নীতিমালা তৈরির দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ রিটায়ারমেন্ট হোমস, আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশ এবং কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডার বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে এক গোলটেবিল আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়। বিশ্ব আলঝেইমারস দিবস উপলক্ষে ‘ডিমেনশিয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আমাদের করণীয়’ শিরোনামে এই আলোচনা সভা হয়।
আলোচনা সভায় আলঝেইমারস সোসাইটি অব বাংলাদেশের জেনারেল সেক্রেটারি মো. আজিজুর হক বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডিমেনশিয়া রোগীদের বিষয়ে নির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এর কোনও নীতিমালা নেই। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার কাছে দাবি, তিনি যেমন প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে এগিয়ে এসেছেন, তেমনি ডিমেনশিয়া রোগীদের বিষয়ে বিশেষ নীতিমাল তৈরি করবেন।’
আজিজুর হক বলেন, ‘আমরা ২০০৬ সাল থেকে বাংলাদেশে বিশ্ব আলঝেইমারস দিবস পালন করে আসছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য মানুষকে এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া। ডিমেনশিয়া অনেকগুলো রোগ-লক্ষণের সমষ্টি। ডিমেনশিয়া শব্দটি এমন একটি অবস্থাকে বোঝায় যার ফলে মস্তিষ্কের বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমে ধীরে ধীরে অবনতি ঘটে, যেমন: স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়া, চিন্তা ও চেতনার পরিবর্তন, কিছু বলতে গিয়ে সঠিক শব্দ খুঁজে না পাওয়া বা অন্যের কথা বুঝতে অসুবিধা হওয়া, ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন এবং সামাজিক কর্মকা- থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া। ব্যক্তি বিশেষে ডিমেনশিয়ার প্রাথমিক রূপ ভিন্ন হলেও সর্বশেষ অবস্থায় আক্রান্ত ব্যক্তিগণ নিজের শারীরিক যতœ নিজেরা করতে পারেন না এবং জীবনের সব ক্ষেত্রে পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েন। ধীরে ধীরে সমস্ত কার্যক্ষমতা চলে যায় আর বেঁচে থেকেও মৃতের জীবন যাপন করতে হয় তাদের।’ তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে মনে করেন ডিমেইনসন একটি মানুষিক রোগ। তাই এটি কেউ প্রকাশ করতে চায় না যে, তার ফ্যামিলির লোকজনকে কেউ পাগল হিসেবে জানুক। অনেকে আবার মনে করে এটি শুধু বয়স হলেই হয়ে থাকে। কিন্তু এই রোগে তরুণরাও আক্রান্ত হতে পারে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাপান-বাংলাদেশ ফেন্ডশিপ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. সরদার এ নাইমসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।