শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
জব্দ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর রিট আরেক হত্যা মামলায় সাবেক বিচারপতি মানিককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে মানহানির মামলায় খালাস পেলেন তারেক রহমান উৎপাদনে ফিরলো কর্ণফুলী পেপার মিল ২০৫০ সালের মধ্যে ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, দলবল নিয়ে ঘুরছেন পার্কে পিআইবির নতুন ডিজি ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের এমডি এম আবদুল্লাহ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পোশাক শিল্প আইন আপনার হাতে তুলে নেয়ার কারো কোনো অধিকার নেই :স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল

সত্যের দিশারি

মাওলানা সাদেক আহমদ সিদ্দিকী:
  • আপডেট সময় সোমবার, ৪ অক্টোবর, ২০২১

মুহাম্মাদ সা:-কে মহান আল্লাহ মানব জাতির হিদায়াতের জন্য পাঠিয়েছেন। পবিত্র কুরআনের সূরা আলে-ইমরানের ১৬৪ নং আয়াতে আছে, ‘আল্লাহ তায়ালা ঈমানদারদের ওপর অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের মাঝে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নবী পাঠিয়েছেন। তিনি তাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন। তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও কাজের কথা শিক্ষা দেন। বস্তুত তারা ছিল পূর্ব থেকেই পথভ্রষ্ট।’ রাসূল সা: তাঁর ঘরে রাতে কুরআন মাজিদ তিলাওয়াত করতেন।
একবার কুরাইশদের নেতৃস্থানীয় সর্দার আবু সুফিয়ান বিন হারব, আবু জাহল বিন হিশাম ও আখনাস বিন শুরাইক রাসূল সা:-এর তিলাওয়াত শুনতে উদগ্রীব হয়ে পড়ে। তারা রাতে গোপনে বাসস্থান থেকে বেরিয়ে আসে। তিনজন পৃথকভাবে অতি সন্তর্পণে রাসূল সা:-এর ঘরের দিকে অগ্রসর হয়। প্রত্যেকে একে অন্যের ব্যাপারে অনবহিত ছিল। রাসূল সা:-এর ঘরের কাছে পৌঁছে তারা তিনজন পৃথক পৃথক স্থানে বসে সারা রাত কুরআন তিলাওয়াত শুনতে থাকে। এভাবে সকাল হয়ে যায়। সকালে প্রত্যেকে নিজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সময় পরস্পরের সাথে দেখা হয়ে যায়। এতে তারা লজ্জিত হয় এবং একে অন্যকে দোষারোপ করে। কিন্তু পরের রাতেও তারা পবিত্র কুরআনের তিলাওয়াত শোনার আকর্ষণে উৎসুক হয়ে রাসূল সা:-এর ঘরের কাছে যায় এবং তিনজন তিন কোনায় বসে তিলাওয়াত শুনতে থাকে। খুব ভোরে ফিরতি পথে তিনজনের আবারো দেখা হয়ে যায়। তখন তারা একে অন্যকে দোষারোপ করে এবং এ কাজ থেকে বিরত থাকার কথা বলে ফিরে যায়। তৃতীয় রাতে তাদের অন্তরে পবিত্র কুরআন শোনার আগ্রহ আরো বৃদ্ধি পায়। তাই তিনজনই ঘরে থাকতে না পেরে আবার রাসূল সা:-এর ঘরের কাছে গিয়ে লুকিয়ে বসে পড়ে। আর সারা রাত তিলাওয়াত শুনতে থাকে। সকালে ঘরে যাওয়ার পথে আবারো তিনজন মুখোমুখি হয়ে যায়।
এবার তারা একে অপর থেকে মুখ লুকাতে থাকে। এরপর পরস্পর আর কখনো না আসার প্রতিজ্ঞা করে ঘরে ফিরে যায়।
রাসূল সা:-এর চাচা আবু তালিব ঈমান না আনলেও সবসময় তিনি আল্লাহর রাসূলের সহযোগিতা করতেন। একপর্যায়ে কুরাইশের লোকেরা আবু তালিবের কাছে এসে বলতে লাগল, ‘আপনার ভাতিজা তো সীমা ছাড়িয়ে গেছে। সে আমাদেরকে মজলিসে ও ইবাদতখানায় কষ্ট দেয়া শুরু করেছে। কাজেই ওকে বাধা দিন।’
আবু তালিব আকিলকে বললেন, ‘মুহাম্মদকে আমার কাছে নিয়ে এসো’। আকিল গিয়ে রাসূল সা:-কে বললেন, ‘আপনাকে আমার চাচা ডাকছেন’। তিনি আসার পর আবু তালিব বলেন, ‘প্রিয় ভাতিজা তোমার গোত্রের এই লোকজন আমার কাছে এসেছে। এরা বলছে, তুমি নাকি তাদের মজলিসে ও উপাসনালয়ে তাদের মন্দ বলো। তুমি তাদেরকে কষ্ট প্রদান থেকে বিরত হও।’ রাসূল সা: আকাশের দিকে ইশারা করে কুরাইশদের লোকদের বললেন, ‘তোমরা কি এই সূর্য দেখছ’? তারা বলল, ‘হ্যাঁ’। তখন তিনি বললেন, ‘তোমরা যদি সূর্যের একটি রশ্মিও নিয়ে আসো, তবুও আমি তোমাদের দ্বীনের দাওয়াত দেয়া থেকে বিরত থাকতে পারব না।’ আবু তালিব কুরাইশ সর্দারদের বললেন, ‘আমার ভাতিজা কখনো কোনো ভুল কথা বলে না। তাই তোমরা চলে যাও।’
বাস্তবিক পক্ষে মহানবী সা: ছিলেন সত্যের দিশারী। তিনি আল্লাহর রাসূল ও সর্বশেষ নবী। তাঁর পরে আর কোনো নবী-রাসূলের আগমন ঘটবে না।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে মহানবী সা:-এর সুন্নত ও তরিকা মতো চলার তাওফিক দান করুন। আমিন। লেখক: মুহতামিম, জামিয়া মদিনাতুল উলুম ভাটারা, ঢাকা।, খতিব, মালিবাগ বায়তুল আজিম শহীদী জামে মসজিদ, ঢাকা।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com