যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মনোনীত বাংলাদেশে দেশটির পরবর্তী রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বলেছেন, একটি গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সমগ্র অঞ্চলকেই উপকৃত করবে। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ। দু’টি দেশের জনগণের সাথে জনগণের সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে যা পারস্পরিক সহযোগিতা আরও গভীর করছে। করোনা মহামারি থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধারে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। স্থানীয় সময় বুধবার সিনেট ফরেন রিলেশনস কমিটির সদস্যদের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। সিনেট পিটার হাসের মনোনয়ন নিশ্চিত করলে তিনি ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারের উত্তরসূরি হবেন।
পেশায় কূটনীতিক পিটার হাস বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরে অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিষয়ক বিভাগে উপ সহকারী মুখ্য সচিবের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি এর আগে ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের মুম্বাই মিশনে কাজ করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র প্রায় পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশের নির্ভরযোগ্য বন্ধু এবং অংশীদার উল্লেখ করে পিটার হাস বলেছেন, গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সমগ্র অঞ্চলকে উপকৃত করবে এবং রাষ্ট্রদূত পদটি নিশ্চিত হলে আমি এমন নীতিমালা নিয়ে এগিয়ে নেবো যা বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে উন্নত করবে এবং একটি মুক্ত, উন্মুক্ত, পরস্পর সংযুক্ত, প্রতিরোধক্ষম ও নিরাপদ অঞ্চলে পরিণত করবে। দুই দেশ অর্থনৈতিক উন্নয়ন, শান্তিরক্ষা, জলবায়ু সংকট মোকাবিলা, জনস্বাস্থ্য এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের টেকসই সমাধান খুঁজে বের করতে একসঙ্গে কাজ করেছে।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে পিটার হাস বলেন, তিনি ২০২৩ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ জোরদার করতে এবং মানবাধিকার রক্ষা ও সুরক্ষার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানোর বিষয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্টের কাজ চালিয়ে নিয়ে যেতে চান।
মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করে। মানবিক সহায়তার প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র বৃহত্তম আন্তর্জাতিক দাতা হিসেবে সমর্থন করেছে।
রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পেলে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে সমন্বয় করে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাজ অব্যাহত রাখবেন এবং (যে যেখানেই থাকুন না কেন) রোহিঙ্গাদের মানবাধিকারের সুরক্ষার পক্ষে সোচ্চার থাকবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দেন।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু এবং স্বাস্থ্য যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি পর্যবেক্ষণ করে তিনি বলেন, দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক শক্তিশালী এবং ক্রমবর্ধমান, যা এই বছর ইউএসবাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ দেশটির প্রযুক্তি ও জ্ঞানের মাধ্যমে এবং স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বাজার ভিত্তিক সংস্কার প্রচার করে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছতে সহায়তা করে। বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যাকসিন সহায়তার বিষয়ে তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধারে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ কোভ্যাক্স এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র এখন পর্যন্ত বাংলাদেশক ১ কোটি ১৫ লাখ করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ অনুদান দিয়েছে এবং আগামী মাসগুলোতে আরও ভ্যাকসিন অনুদান প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা।