সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছে দেশী-বিদেশী চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড। ২৬ দিন এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিতসা শেষে গত ৭ নভেম্বর বিকালে বিএনপি চেয়ারপারসন গুলশানের বাসায় ফেরার পর তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের এই কথা জানান। তিনি বলেন, এবারো এভারকেয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিতসকরা উনার সুচিকিৎসার জন্য উনার ফার্দার ম্যানেজমেন্ট, ফার্দার ফলোআপ এবং পরবর্তি চিকিতসা একটি মাল্টি ডিসেপ্ল্যানারী এডভান্স ডেভেলপ সেন্টার দেশের বাইরে যেকোনো ভালো কান্ট্রিতে গিয়ে নিতে বলেছে। অর্থাত এটা বুঝতে হবে উনার যে এবারের চিকিৎসা সত্যিকার অর্থেই ‘সি নিডস ভেরি গুড কোয়ালেটেটিভ মেডিকেল ট্রিটমেন্ট’।
এক্ষেত্রে উনার পরিবারের সদস্যরাও এবং দেশবাসীর ন্যায় অন্যান্য্ সবাই চায় এবং উনি (খালেদা জিয়া) নিজেও আশা করেন যে সত্যিকার অর্থে উনার সুচিকিতসা প্রয়োজন। সেজন্য আপনাদের মাধ্যমে উনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন যে, উনি যেন সুচিকিতসা পরবর্তিতে আবারো আপনাদের মাঝে ফেরত আসতে পারেন। গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’র প্রবেশের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তার ব্যক্তিগত চিকিতসক অধ্যাপক জাহিদ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘২৬দিন পর আজকে তিনি বাসায় ফিরে এসেছেন। আমরা পরম করুনাময় আল্লাহতা‘লার কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। তিনি এখন ভালো আছেন।’ ‘আপনাদের সকলকে তার জন্য দোয়া করায় আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। আপনাদের মাধ্যমে আবারো আমি সকল দেশবাসীর কাছে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে দোয়া করার আহবান জানাচ্ছি।’
অধ্যাপক জাহিদ হোসেন বলেন, ‘উনাকে গত ১২ তারিখ হাসপাতালে নেয়ার পর মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিতসকরা অনুভব করে উনার আরো বিস্তৃত পরীক্ষা নিরীক্ষা প্রয়োজন। সেই অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়। একটি বিষয় অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে লক্ষ রাখতে হবে উনি বিভিন্ন রোগে আগে থেকেই আক্রান্ত ছিলেন এবং আছেন।’ ‘উনার সুচিকিৎসা গত চার বছর যাবত উনি যখন জেলখানায় ছিলেন সেখানে সত্যিকার অর্থে সুচিকিতসার সুবন্দোবস্ত সরকারের পক্ষ থেকে করা হয়নি। এই অবস্থায় উনার সুচিকিতসা অত্যন্ত জরুরী। সেজন্য উনার সুচিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে মাল্টি ডিসিপ্ল্যানারি ডেভেলপ সেন্টারে করার জন্যে এবারো এভার কেয়ারের হসপিটালের চিকিতসকরা শুধু নয়, দেশী বিদেশী চিকিতসকদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড উনাকে পর্মার্শ দিয়েছেন দেশের বাইরে উনার পরবর্তি চিকিতসা গ্রহন করার জন্য।’ সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, শ্যামা ওবায়েদ, নাজিম উদ্দিন আলম ও ব্যক্তিগত চিকিতসক ডা. আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
গত ১২ অক্টোবর খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, তিনি কিছুদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত ২৫ অক্টোবর জানানো হয় যে, খালেদা জিয়ার শরীর থেকে নেয়া টিস্যুর বায়োপসি করা হয়েছে। এই পরীক্ষার পর তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেন। খালেদা জিয়া হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে মেডিকেল বোর্ড অধীনে চিকিৎসীন ছিলেন। ৭৬ বছর বয়েসী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া বুহ বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন।