বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই সরকার পকেটমার সরকার। পরপর দু’বার সরকার জনগণের পকেট কেটেছে; একবার ডিজেল-তেলের দাম বাড়িয়ে, দ্বিতীয়বার বাসের ভাড়া বৃদ্ধি করে।’ এসময় তিনি দাবি করেন, ‘এটা (দাম বাড়ানো) পাতানো খেলা, সাজানো খেলা।’ গতকাল সোমবার (৮ নভেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে বিএনপির মহাসচিব এসব কথা বলেন। জ্বালানি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে বিএনপি ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কমিটির আয়োজনে এ কর্মসূচিতে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘সরকারের চরিত্রই হচ্ছে লুট করা। এরা একদিক দিয়ে জনগণের পকেট কাটছে, অন্যদিকে নিজেদের পকেট ভারী করছে। তারা জনগণের কথা চিন্তা করে না। প্রতেকদিনই মানুষের গরিবী বাড়ছে সেদিকে তাদের নজর নাই।’
‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারছে না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আজ ইউপি নির্বাচন হচ্ছে। আওয়ামী লীগ নিজেরা-নিজেরাই মারামারি করে। ভোট কেন্দ্রে মানুষ ভোট দিতে যায় না, তারা নিজেরাই ভোট দিয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষকে জাগিয়ে তুলতে হবে। এই সরকার যতদিন থাকবে, ততদিন মানুষের ভোগান্তি বাড়বে। তাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণকে মাঠে নামাতে হবে।’ এসময় জ্বালানি তেল ও বাস-লঞ্চের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে আগামী ১০ নভেম্বর দেশের মহানগর ও ১২ নভেম্বর দেশের জেলা-জেলায় বিক্ষোভের ডাক দেন বিএনপির এই নেতা।
ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ : জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি দেশের মানুষের জীবনযাত্রাকে ঝুঁকিতে ফেলছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া। গত রোববার (৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সচেতন জনতার মঞ্চ আয়োজিত ‘জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী সরকারি সিদ্ধান্ত ডিজেল, কেরোসিন, এলপিজি’র মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে তিনি এ কথা বলেন। ন্যাপ মহাসচিব বলেন, তেল বিপণন কোম্পানি প্রায় চার হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। কারণ সে সময় আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেশ কম ছিল। গত সাত বছর আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কম থাকার পরও দেশে দাম না কমিয়ে সরকার ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি মুনাফা করেছে। সেই মুনাফার টাকা কোথায়? সেই মুনাফার একটা অংশ এখন ভর্তুকি হিসেবে দিলেও দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতো না।
মোস্তফা বলেন, তেল পাচার হয়ে যাওয়া অজুহাত মাত্র। মনে রাখতে হবে, তেল পকেটে করে পাচার করা যায় না। আর জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন নেওয়া পুলিশ, বিজিবি কেন পাচার রোধ করতে পারে না? বাজারে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির সময়ে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি আগুনে ঘি ঢালার শামিল। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি মানুষের ওপর নতুন নিপীড়ন এবং তা অত্যাচারের শামিল।
তিনি বলেন, সরকার সম্প্রতি সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি করে জনগণের জীবনযাত্রাকে সীমাহীন সংকটের মুখে ফেলেছে। বৈশ্বিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির দোহাই দিয়ে পরিবহন ও শিল্পখাতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পেট্রোলিয়াম পণ্য ডিজেল ও কেরোসিনের মূল্য ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এরই মধ্যে বিপুল জনগোষ্ঠী কর্মসংস্থান হারিয়ে প্রান্তিক পর্যায়ে চলে গেছে। এ অবস্থায় নতুন করে মূল্যস্ফীতি সৃষ্টি হলে জনগণের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। এটা গ্রামীণ কৃষিনির্ভর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি সীমিত আয়ের শহুরে মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রাকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলবে।
ন্যাপ মহাসচিব আরও বলেন, দুর্নীতি ও লুটপাটে নিমজ্জিত সরকার এ লভ্যাংশ কোনো জনবান্ধব কর্মসূচিতে ব্যয় করছে না। বরং মেগা প্রকল্পে বিনিয়োগের নামে লুটপাটের মহোৎসবে নিয়োজিত করছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য হ্রাসের পরিপ্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম না কমিয়ে আগে থেকেই সরকার জনগণের ওপর জুলুম করেছে। এখন নতুন করে মূল্যবৃদ্ধির অপকৌশল গ্রহণ করছে, যা জনগণ কোনোভাবেই মেনে নেবে না।
মঞ্চের সমন্বয়কারী ও বাংলাদেশ জাতীয় লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের মহাসচিব মুহম্মদ আতাউল্লাহ খান, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, সচেতন জনতার মঞ্চের সদস্য সচিব ড. এ আর খান, ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ, বিডিপি’র সভাপতি শামসুল আলম চৌধুরী সুরমা, সোনার বাংলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন-অর-রশিদ, তৃণমূল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব কবি রোকসানা আমিন সুরমা, জাতীয় জাগো নারী ফাউন্ডেশনের সভাপতি রেহেনা আকতার রেনু, বাংলাদেশ ন্যাপ নেত্রী মিতা রহমান, জাস্টিস পার্টির চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মজুমদার, ইসলামী ঐক্যজোটের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা শওকত আমীন, কল্যাণ পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এ এফ ওবায়দুল্লাহ মামুন, বিসিপি চেয়ারম্যান এম এম আনিছুর রহমান দেশ, স্বদেশি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন ভুইয়া, মানবাধিকার সংগঠক আমিছুর রহান রুবেল প্রমুখ।