মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহর আমন্ত্রণে আজ বুধবার সরকারি সফরে মালদ্বীপ যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ভিভিআইপি ফ্লাইট দুপুর ১২টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করবে। একই দিন বিকেল ৩টা (স্থানীয় সময়) ফ্লাইটটি মালদ্বীপের রাজধানী মালে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। সেখানে মালদ্বীপের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সফরে দুই দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বন্দীদের স্থানান্তর এবং দ্বৈত কর এড়ানোর বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারকসহ (এমওইউ) চারটি চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে।
এগুলো হলো দ্বৈত কর পরিহার এবং আয়ের ওপর করের ক্ষেত্রে আর্থিক ফাঁকি প্রতিরোধের চুক্তি, যুব ও ক্রীড়া উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক, যোগ্যদের নিয়োগের বিষয়ে এমওইউ। বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পেশাদার এবং সমঝোতা স্মারক (নবায়ন)। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সফরে মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দেয়া ১৩টি সামরিক যান মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হবে। ২৩ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানাবেন। সেখানে তাকে গার্ড অব অনার দেয়া হবে। এ সময় মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের সাথে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা চুক্তিতে স্বাক্ষর করবেন। ২৩ ডিসেম্বর বিকালে প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপের জাতীয় সংসদ পিপলস মজলিসে ভাষণ দেবেন। সন্ধ্যায় শেখ হাসিনার সম্মানে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডির আয়োজনে রাষ্ট্রীয় ভোজসভায় যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। ২৪ ডিসেম্বর মালে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেয়া একটি কমিউনিটি সংবর্ধনায় ভার্চুয়ালি যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
সফরকালে মালের হোটেল জেন-এ মালদ্বীপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল নাসিম, দেশটির জাতীয় সংসদ পিপলস মজলিসের স্পিকার মোহাম্মদ নাশিদ এবং প্রধান বিচারপতি উজ আহমেদ মুথাসিম আদনান বাংলাদেশ সরকার প্রধানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী ২৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন উপভোগ করছে বাংলাদেশ: ভুটানের রাজা
ভুটানের রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুক বলেছেন, বাংলাদেশ সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছে। শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো সাম্প্রতিক চিঠিতে তিনি বলেছেন, আপনার বিজ্ঞ ও নিবেদিতপ্রাণ নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফলভাবে কোভিড মহামারি মোকাবিলা করেছে এবং স্থিতিশীলতা ও উন্নয়ন অব্যাহত রেখেছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানিয়েছেন, মুজিববর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। ভুটানের চতুর্থ রাজা চিঠিতে আরও বলেছেন, মুজিববর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আমি আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন এবং ‘তাশি ডেলেক’ জানাতে চাই।
রাজা জিগমে সিংগে ওয়াংচুক বলেন, বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে বিদ্যমান ঘনিষ্ঠ ও বিশেষ সম্পর্ক এবং বন্ধুত্ব প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার সরকার যে অবদান রেখেছে তার জন্য ভুটানের সরকার ও জনগণ আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ।