মোহরানা স্ত্রীর অধিকার। এ অধিকার থেকে নারীকে বঞ্চিত করা জুলুম ও অন্যায়। সম্মানসূচক ও সামর্থ্য অনুযায়ী মোহরানা হওয়া উচিত। হানাফি মাজহাব মতে, মোহরানা ১০ দিরহামের কম হতে পারবে না। ১০ দিরহামের পরিমাণ বর্তমান হিসাবে পৌনে তিন ভরি খাঁটি রুপা। আর মোহরানা স্বামীর সামর্থ্যের ঊর্ধ্বে হতে পারবে না। স্ত্রীর বংশের ও তাঁর সমমানের মেয়েদের মোহরানার পরিমাণ বিবেচনা করাও গুরুত্বপূর্ণ এবং ইসলামনির্দেশিত। মোহরানার সর্বোচ্চ কোনো পরিমাণ ইসলাম নির্ধারণ করেনি। (বাদায়েউস সানায়ে : ২/২৭৫, মিরকাতুল মাফাতিহ : ৬/৩৫৮)
উম্মে হাবিবা (রা.) ছাড়া নবী (সা.)-এর অন্য স্ত্রীর মোহরানা ছিল পাঁচ শ দিরহাম, যা প্রচলিত হিসাব অনুযায়ী ১৩১.২৫ ভরি খাঁটি রুপা বা তার সমপরিমাণ বাজারমূল্য। যেহেতু পরিমাণ নির্ধারণে ইসলামী বিশেষজ্ঞদের ভেতর সামান্য মতবিরোধ রয়েছে, তাই সতর্কতামূলক পূর্ণ ১৫০ ভরি ধরাই ভালো। উম্মে হাবিবা (রা.)-এর মোহরানা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পক্ষ থেকে হাবশার বাদশাহ নাজ্জাশি আদায় করেছিলেন চার শ দিনার, যা বর্তমান হিসাবে দেড় শ ভরি খাঁটি স্বর্ণ। অন্য বর্ণনা মতে, চার শ দিরহাম রুপা। (মুসলিম, হাদিস : ১৪২৬, তিরমিজি, হাদিস : ১১১৪, আবু দাউদ : ২১০৮, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ১৬৩৮৬) স্ত্রীর সম্মান ও স্বামীর সাধ্যানুযায়ী মোহরানা ধার্য করা সুন্নত। শুধু মোহরে ফাতেমিকেই সুন্নত মনে করা সঠিক নয়। তবে মোহরে ফাতেমি ধার্য করা বরকতময় ও উত্তম। বিশুদ্ধ মতানুযায়ী মোহরে ফাতেমির পরিমাণ পাঁচ শ দিরহাম তথা ১৩১.২৫ ভরি (এক কেজি ৫৩০.৯০০ গ্রাম) খাঁটি রুপা অথবা এর বাজারমূল্য। সতর্কতামূলক ১৫০ তোলা খাঁটি রুপার কথা বলা হয়ে থাকে। (মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদিস : ২৭৪২; ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ৩/২১৫; ফাতাওয়ায়ে রহিমিয়া : ৮/২৩১)