টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ইটভাটাগুলোর অনিয়মের শেষ নেই। বৈধ লাইসেন্স এবং পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে এসব ইটভাটা। কেউ সংরক্ষিত বনের পাশে, ফসলি জমিতে এবং বিদ্যালয়ের পাশে গড়ে তুলেছেন ইটভাটা। কেউ পাহাড়ের লাল মাটি দিয়ে প্রস্তুত করছেন ইট, সেই ইট পোড়ানো হচ্ছে বনের কাঠ দিয়ে। এককথায় কোনো আইন মানছেন না ভাটা মালিকরা। তবুও দিব্যি চলছে এসব ইটভাটা। টাঙ্গাইল জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ঘাটাইল উপজেলায় এ বছর মোট ইটভাটার সংখ্যা ৫৬টি। এর মধ্যে মাত্র ৮টি ভাটার লাইসেন্স রয়েছে। বাকি ৪৮টি ভাটার কোনো বৈধ কাগজপত্র তথা লাইসেন্স নেই। উচ্চ আদালতে রিট করেই চালানো হচ্ছে এসব ইটভাটা। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে লাইসেন্স ছাড়া ইট প্রস্তুত করা ও পোড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। আইন অমান্য করলে ভাটা মালিককে দুই বছরের কারাদ- বা অনধিক ২০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দ-ই হতে পারে। কিন্তু আইনের কোনো তোয়াক্কা না করে পরিবেশ ছাড়পত্র ও লাইসেন্স ছাড়াই ভাটা মালিকরা ইট পোড়ানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আইন অনুযায়ী কৃষিজমি, আবাসিক এলাকা, সরকারি বা ব্যক্তিগত বন, অভয়ারণ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন, বাগান বা জলাভূমিতে ইটভাটা স্থাপন না করার বিধান রয়েছে। অথচ ঘাটাইল উপজেলার চানতারা, ধলাপাড়া, দেউলাবাড়ি, জামুরিয়া, সিংগুরিয়া, রসুলপুর, মোগলপাড়া বীরসিংহ এলাকার ইটভাটাসহ অধিকাংশ ভাটাই স্থাপন করা হয়েছে কৃষিজমি, সংরক্ষিত বন, আবাসিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংলগ্ন এলাকায়। কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো নিষেধ থাকলেও ভাটাগুলোতে অহরহ পোড়ানো হচ্ছে সংরক্ষিত বনের কাঠ। ইট প্রস্তুতের জন্য পাহাড়ের লাল মাটি ও ফসলি জমির মাটি ব্যবহারের বিধান না থাকলেও তা করা হচ্ছে। উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি শাহজাহান সরকার বলেন, যাদের লাইসেন্স নবায়ন নেই তারা সবাই নবায়নের জন্য আবেদন করেছেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ সাপেক্ষে জেলা প্রশাসন ইটভাটার লাইসেন্স প্রদান করেন। ঘাটাইলের অধিকাংশ ইটভাটাই পুরনো। তাই বর্তমান আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করতে পারছে না তারা। তাই নানা ভোগান্তির কারণে তারা আদালতের আশ্রয় নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করে ইটভাটা পরিচালনা করছেন।