দেশের জনসংখার প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু। তাদের পূর্ণাঙ্গ বিকাশের ওপরই নির্ভর করছে দেশ ও সমাজের অগ্রযাত্রা। কিন্ত শিশুরাই নানাভাবে বঞ্চিত হচ্ছে তাদের অধিকার থেকে। করোনা মহামারিতে সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে তাদের, তবুও দমে নেই। শিশুদের মাঝে আগাম গণতান্ত্রিক চর্চার প্রস্তুতি হিসাবে ন্যাশনাল চিল্ড্রেন টাস্ক ফোর্স (এনসিটিএফ) আগামীতে নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ে উৎসব মূখর পরিবেশে আয়োজন করে বার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন। সভাপতি তানজিলা জামান শেফার সভাপতিতে উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে গত শনিবার সকাল ১০ থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত নির্বাচন ও সভা অনুষ্ঠিত হয়। শেষে বিকেল ৫ টায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষনা করা হয়। এই কমিটি আগামী দুই বছর সিবিডিপি ও প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সহায়তায় শিশু সুরক্ষা ও মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে কাজ করবে। ন্যাশনাল চিল্ডেন’স টাস্কফোর্স এনসিটিএফ সারাদেশ ব্যাপী শিশুদের দ্বারা পরিচালিত শিশুসংগঠন। এই শিশু সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা হয়েছে এই নির্বাচনের মাধ্যমে। নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন বেতাগী প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুল ইসলাম মন্টু, সহকারী নির্বাচন কমিশনার ছিলেন, সাধারণ সম্পাদক লায়ন মো: শামীম সিকদার ও দপ্তর সম্পাদক অলি আহম্মেদ। নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন সিবিডিপির নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন মিরাজ, বিষখালী পত্রিকার সম্পাদক আব্দুস সালাম সিদ্দিকী ও ওয়াই মুভস প্রকল্পের কমকর্তা মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন। নির্বাচনে ডেলিগেট হিসেবে ৭০ জন শিশু সবাই তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে। এ নির্বাচনের শুরুতে প্রাথমিক পর্যায় শিশুরা স্ব-স্ব প্রার্থী তাদের প্রার্থীপদ ঘোষনা করে ভোটারদের কাছে তার পক্ষে রায় দেওয়ার যুক্তি তুলে ধরে সরাসারি ভোট প্রার্থনা করে। তারপর অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে ৪ টি বুথে ভোট গ্রহণ করা হয়। এসব বুথে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িযে শিশুরা পছন্দের প্রার্থীকে ব্যালট পেপারে নাম লিখে নির্বাচন কমিশনের সামনে রাখা ব্যালট বাক্সে ভোট প্রয়োগ করে। সাধারণ সম্পাদক ইসরাত জাহান লিমা ও শিশু সাংসদ আরিফুল ইসলাম মান্নার পদে কোনো প্রতিদ্বন্দিতা না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এই পদের প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়। বাকি ৯ জন তাদের পদে সরাসারি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়। ভোট গণনা শেষে যে সর্বোচ্চ ভোট পান তাঁকে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত বলে ঘোষনা এবং বিজয়ীদের হাতে ফলাফল তুলে দেওয়া হয়। এ সময় বিজয়ী ও বিজীত প্রার্থীরা তাদের প্রতিক্রিয়ায় নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে এক অপরকে অভিনন্দন জানায়। ভোটার মুবীন ফরাজী ও সাদিয়া মল্লিক তাদের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এ বয়সে ভোট দিতে পেরে খুবই খুশি। নতুন সাধারন সম্পাদক ইসরাত জাহান লিমা বলেন, শিশুদের মাঝে গণতন্ত্রের চর্চা ছোটোবেলা থেকেই হওয়া উচিত। সভাপতি খাইরুল ইসলাম মুন্না বলেন, শিশুবয়েসেই এ ভাবে ভোট নিতে পারাটাও অন্যরকমের এক আনন্দ।