খনার বচনে বলা আছে- “যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজার পুণ্য দেশ।” জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী নারী ছিলেন খনা। বচন রচনার জন্যেই তিনি বেশি সমাদৃত, মূলতঃ তার ভবিষ্যতবাণীগুলোই খনার বচন নামে বহুল পরিচিত। খনার কৃষি বিষয়ক বচন ‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজার পুণ্য দেশ’ নিয়ে এবার দেশে যে মাঘের শেষে বর্ষণ হয়ে গেলো সে বিষয়ে আমাদের কৃষি বিশেষজ্ঞরা কি বলেছেন সেটি শুনি-
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, খনার বচনে ছিল যে মাঘের শেষে বৃষ্টি হলে উপকার হওয়ার কথা। আমরাও মনে করছি, এই বৃষ্টিপাত কৃষকের ফসলের উপকারে আসবে। গম, ভুট্টা ও সরিষার ফলন ভালো হবে। বর্তমানে বোরো ধান রোপণ শুরু হয়েছে। সেসব ক্ষেতে এই বৃষ্টি কাজ দেবে। তবে বৃষ্টির সঙ্গে হালকা বাতাসে সরিষা ও ভুট্টার যেসব গাছ হেলে পড়েছে সেগুলো উঠে দাঁড়াতে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে। তবে ক্ষতি হবে না। যেসব আলুক্ষেতে পানি জমেছে সেসব ক্ষেতের পানি নামিয়ে দিতে হবে। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ জমির পানি নেমে গেছে। আগামী কয়েকদিন ক্ষেত থেকে আলু না তোলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে আলুর তেমন ক্ষতি হবে না।
দিনাজপুরে শৈত প্রবাহ চলাকালিন শীতের শেষ মৌসুমে দুই দিনের বৃষ্টিতে গম, ভুট্টা ও সরিষার বেশ উপকার হবে। বোরো বীজতলার জন্য বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল বলে কৃষি বিভাগ মনে করছেন। তবে এই বৃষ্টিতে রবি মৌসুমের ফসল আলু চাষিদের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে খানিক।
কৃষি বিভাগের সূত্রটি জানায়, কৃষকরা আশঙ্কা করলেও এই বৃষ্টিপাত আলুর তেমন ক্ষতি করবে না। তবে বেশ উপকার হবে গম, ভুট্টা ও সরিষা ক্ষেতের। পাশাপাশি বোরো বীজতলারও উপকার হবে।
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক পংকজ কুমার গুহ জানান, এই বৃষ্টিপাতের ফলে জেলার প্রায় ৪০০ হেক্টর আলুক্ষেতে পানি জমেছে। অনেক জমির পানি নেমে গেছে। অন্যান্য আলু জমিগুলোর পানি নামিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে কৃষষেরা মাঠে কাজ করছে। কৃষি কর্মকর্তাগণ যেসব ক্ষেতে পানি রয়েছে সেসব ক্ষেতের আলু এই সময়ে না তোলার পরামর্শ দিয়েছেন ।