ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে বিক্ষোভ উত্তাল হয়ে উঠেছে রাশিয়া। তবে প্রতিবাদীদের মুখ বন্ধ করতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে পুতিন প্রশাসন। আক্রমণ ও বিক্ষোভের প্রথম দিনই গ্রেফতার করা হয়েছে অন্তত ১ হাজার ৭০০ জনকে। খবর স্কাই নিউজের। বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভোরে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে রুশ সেনারা। এর পরপরই রাস্তায় নেমে আসেন প্রতিবাদীরা। এদিন মস্কোতেই আটক করা হয়েছে অন্তত ৯৫৭ বিক্ষোভকারীকে।
সেন্ট পিটার্সবার্গ ও ইয়েকাটেরিনবার্গের রাস্তায় নেমে পুতিনের প্রতি ক্ষোভ জানিয়েছেন শত শত মানুষ। প্রতিবেশী দেশে আক্রমণের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও।
মস্কোর একটি সরকারি থিয়েটারের পরিচালক ইয়েলেনা কোভালস্কায়া ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, একজন খুনির জন্য কাজ করা ও তার থেকে অর্থ নেওয়া সম্ভব নয়। ইয়েকাতেরিনা কুজনেৎসোভা নামে এক প্রকৌশলী বলেছেন, এটি আমার জীবনের সবচেয়ে লজ্জাজনক ও ভয়ানক দিন। আমার দেশ আক্রমণকারী। তিনি বলেন, আমি পুতিনকে ঘৃণা করি। মানুষের চোখ খোলার জন্য আর কী করতে হবে?
মানবাধিকার কর্মী মেরিনা লিটভিনোভিচ ইউক্রেনে সহিংসতার প্রতিবাদে রুশ নাগরিকদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি ফেসবুকে এক ভিডিওবার্তায় বলেছেন, আমরা, রাশিয়ার জনগণ, পুতিন যে যুদ্ধ শুরু করেছেন তার বিরুদ্ধে। এই যুদ্ধে আমাদের সমর্থন নেই। এটি আমাদের পক্ষ থেকে হচ্ছে না।
তবে সমালোচক ও প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে রুশ কর্তৃপক্ষ। তাদের হাতে বন্দি ব্যক্তিদের মধ্যে লিটভিনোভিচও রয়েছেন। এরই মধ্যে বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী লেভ পোনোমাভিভ একটি পিটিশন শুরু করেছেন, যাতে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সই করেছেন ৩ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রুশ কর্তৃপক্ষের কাছে একটি খোলা চিঠি পাঠিয়েছেন অন্তত ২৫০ সাংবাদিক। আরেক চিঠিতে সই করেছেন প্রায় ২৫০ বিজ্ঞানী। এছাড়া, মস্কোসহ বিভিন্ন শহরের প্রায় ২০০ মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিল সদস্য আগ্রাসনবিরোধী তৃতীয় চিঠিতে সই করেছেন।