মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

দেশের মানুষ বুর্জোয়া রাজনীতির প্রতারণা ও দুঃশাসনে অতিষ্ট : মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, বামপন্থী শক্তির উত্থানই চলমান রাজনৈতিক সংকট থেকে দেশকে রক্ষা করতে পারে। মানুষের শান্তি নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় বামপন্থীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। গত শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর নাট্যমঞ্চে সিপিবি দ্বাদশ কংগ্রেসে তিনি এ কথা বলেন। সারা দেশ থেকে আগত প্রতিনিধি, পর্যবেক্ষক ও সমর্থকদের উপস্থিতিতে জাতীয় পতাকা ও কাস্তে-হাতুড়ি খচিত পার্টির লাল পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সিপিবির দ্বাদশ কংগ্রেসের উদ্বোধন হয়। শুরুতেই দ্বাদশ কংগ্রেস প্রস্তুতি কমিটির সাংস্কৃতিক উপ-পরিষদ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে। এরপর শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
উদ্বোধনী অধিবেশনে পার্টির ২২৪ জন ভেটারেন কমরেডকে (দায়িত্বশীল নেতা) সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বিকেলে মহানগর নাট্যমঞ্চে কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এই অধিবেশন শেষ হবে। সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সমাবেশে বক্তৃতা করেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবি সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান ও সহিদুল্লাহ চৌধুরী, বাাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের আবুল হাসান রুবেল, কংগ্রেস প্রস্তুতি পরিষদের চেয়ারম্যান লক্ষ্মী চক্রবর্তী প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম দেশের বর্তমান পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দ্বিদলীয় ধারার বাইরে দেশের সব কমিউনিস্ট, বামপন্থী প্রগতিশীল, প্রকৃত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও শক্তিকে পরিবর্তনের জন্য বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশকে সমাজতন্ত্র-গণতন্ত্র-ধর্মনিরপেক্ষতার স্বাধীন জাতীয় বিকাশের ধারায় পরিচালিত করে ৯৯ শতাংশ মানুষের ঘরে সুখ শান্তি নিরাপত্তা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশকে বাঁচাতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের মানুষ বুর্জোয়া রাজনীতির প্রতারণা ও দুঃশাসনে অতিষ্ট। তারা মুক্ত হতে চায়। এই অসহনীয় পরিস্থিতির অবসান ঘটাতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করতে হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ক্ষমতাসীনরা সমর্থন হারিয়েছে। অথচ গোষ্ঠীগত লুটপাটের স্বার্থে এবং কৃত অপরাধের বিচার থেকে রেহাই পেতে তারা জবরদস্তিমূলকভাবে ক্ষমতা দখল করে আছে। জনসমর্থন ও দলীয় রাজনৈতিক শক্তির ওপর নির্ভর করার বদলে আমলাতন্ত্রসহ রাষ্ট্রযন্ত্রকে অবলম্বন করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ নানা কালাকানুন জারি করে মানুষের কণ্ঠ স্তব্ধ করে রাখা হয়েছে। গুম খুন জেল-জুলুমের সন্ত্রাসের শাসন কায়েম করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, দেশে এখন ভয়ানক রাজত্ব চলছে। সামরিক কর্তৃত্বকে রক্ত দিয়ে প্রতিহত করে আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলাম। গণতন্ত্রকে আজ হরণ করা হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে নির্বাচনী প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে।
সিপিবি সভাপতি বলেন, এক শতাংশ লুটেরা শ্রেণি আজ নিয়ন্ত্রণ করছে দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি। বাজার অর্থনীতি জন্ম দিয়েছে বাজার রাজনীতি। চলছে বাণিজ্যিকীকরণ বনায়ন প্রদর্শন ভোগবাদ। একইসঙ্গে চলছে হালুয়া-রুটির রাজনীতির দাপট। হিসাবের ফলশ্রুতিতে নীতি-আদর্শ সামাজিক মূল্যবোধের বিপজ্জনক অধোগতি ঘটে চলেছে। হত্যা-খুন-ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ বেড়ে চলেছে।
তিনি বলেন, মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ বেশ কিছুদিন ধরেই এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাকে তার তৎপরতার প্রধান ক্ষেত্র বানিয়েছে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলো উপমহাদেশে তাদের নিয়ন্ত্রণ আরো নিরঙ্কুশ করতে চায়। বাংলাদেশ ও বঙ্গোপসাগর তাই তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ টার্গেট অঞ্চল হয়ে উঠেছে।
তিনি আরো বলেন, সরকার ভারতের স্বার্থের কাছে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে। এমনকি দুই দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের যে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে তাতে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
সিপিবি সূত্র জানায়, কংগ্রেসে সারা দেশ থেকে ৪৮৯ জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। সিপিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চার বছর পরপর কংগ্রেস অনুষ্ঠানের বিধান থাকলেও করোনা মহামারির কারণে এক বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে বিদেশি প্রতিনিধিগণ শারীরিকভাবে উপস্থিত না থাকলেও ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, চীন, ভিয়েতনাম, জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, কিউবা, ব্রিটেন, ইরান, ফিলিস্তিনসহ অর্ধশতাধিক দেশের ভাতৃপ্রতীম পার্টিসমূহ কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে বার্তা পাঠিয়েছে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com