ইউক্রেনের উপর হামলার পর রাশিয়াকে একঘরে করার দাবি তুলেছিল ক্রীড়া দুনিয়া। ওই দাবিকে মান্যতা দিয়ে অবশেষে কড়া পদক্ষেপ নিলো বিশ্ব ফুটবল পরিচালনাকারী সংস্থা ফিফা এবং ইউরোপিয়ান ফুটবল পরিচালনাকারী সংস্থা উয়েফা। সোমবার রাতে দুই ফুটবল সংস্থা যৌথ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, রাশিয়া জাতীয় দল এবং ক্লাবগুলো কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারবে না। যার অর্থ এবছর কাতার বিশ্বকাপে দেখা যাবে না গতবারের আয়োজক পুতিনের দেশকে। ইউরোপা লিগ থেকে ছিটকে গেল স্পার্টাক মস্কোও। শুধু তাই নয়, যে সব রাশিয়ান সংস্থা চ্যাম্পিন্স লিগের স্পনসর, তাদের সাথেও সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উয়েফা।
পোল্যান্ড, সুইডেন, চেক প্রজাতন্ত্র আগেই জানিয়ে দিয়েছিল যে তারা রাশিয়ার সাথে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলবে না। ফ্রান্স কাতার বিশ্বকাপ থেকেই রাশিয়ার অপসারণের দাবি তুলছিল। প্রবল চাপের মুখে কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হলো ফিফা। বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাশিয়া ফুটবলের কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলতে পারবে না। একই সিদ্ধান্তের পথে হেঁটেছে আন্তর্জাতিক ওলিম্পিক কমিটিও (আইওসি)। তারা জানিয়েছে, ওলিম্পিক গেমস, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় রাশিয়া নির্বাসিত থাকবে। তবে রুশ ক্রীড়াবিদরা যাতে পুতিন সরকারের কৃতকর্মের ফল না ভোগেন, তার জন্য বিশেষ দরজাও খোলা থাকছে। সেক্ষেত্রে অ্যাথলিটদের স্বাধীনভাবে কিংবা ‘রাশিয়ান ওলিম্পিক কমিটি’র ব্যানারে এই সব আসরে অংশ নিতে হবে। আইওসি’র স্পষ্ট বার্তা, ‘ওলিম্পিক গেমসের লক্ষ্যই হচ্ছে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা। রাশিয়া ও বেলারুশের যুদ্ধংদেহী মনোভাব কোনো মতে বরদাস্ত করা হবে না। তাই আন্তর্জাতিক ক্রীড়ার আসর থেকে এই দুই দেশকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইওসি’র কার্যনির্বাহী সমিতি।’
উল্লেখ্য, ডোপ কেলেঙ্কারির জেরে টোকিও গেমসে নির্বাসিত ছিল রাশিয়া। সে দেশের ক্রীড়াবিদদের খেলতে হয়েছিল ‘রাশিয়ান ওলিম্পিক কমিটি’র প্রতিনিধি হিসেবে। ফিফা এবং আইওসি’র পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে চাপ বাড়াবে পুতিন সরকারের উপর। আগামী ২৪ মার্চ ঘরের মাঠে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলার কথা ছিল রাশিয়ার। ম্যাচটি জিতলে একই ভেন্যুতে সুইডেন অথবা চেক রিপাবলিকের মুখোমুখি হতো তারা। কিন্তু ফিফা সিদ্ধান্তের পর রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের আর কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে না। উল্লেখ্য, ১৯৯২ সালে বলকান যুদ্ধের জন্য আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে যুগোস্লাভিয়াকে নিষিদ্ধ করেছিল ফিফা এবং উয়েফা। পোল্যান্ড ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান সেজারি কুলেসজা বলেন, ‘এমন কঠোর সিদ্ধান্ত প্রয়োজন ছিল। পোল্যান্ড কোনোভাবেই রাশিয়ার সাথে খেলবে না। প্রতিপক্ষের নাম বদল হলেও আমাদের মনোভাব অপরিবর্তিত থাকবে।’ রাশিয়ার বিরুদ্ধে না খেলার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে আলবেনিয়াও। সূত্র : বর্তমান