মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট দমিয়ে বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনুন : সেলিম উদ্দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১০ মার্চ, ২০২২

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, আল্লাহ তায়ালাই রিযকের মালিক এবং তিনি সকল জীবের জন্যই পর্যাপ্ত বরাদ্দ রাখেন। তাই বাজারে নিত্যপণ্যের সংকট হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও বাজার সিন্ডিকেটের কারণেই দেশে নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে এবং মূল্যস্ফীতি এখন অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। ফলে দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। দেশে নিত্যপণ্যের পর্যাপ্ত মওজুদ থাকলেও সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এতে প্রমাণ হয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে সরকার সংশ্লিষ্টদের বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে।
তিনি অবিলম্বে দুর্নীতি ও সিন্ডিকেট দমন করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই সকল সমস্যার সমাধান করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে এক বিক্ষোভ-পূর্ব সমাবেশে এসব কথা বলেন।
সমাবেশটি উত্তর বাড্ডা ব্রিজের নিচে অনুষ্ঠিত হয় এবং সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে গুলশান লিংক রোডের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দিন মোল্লা ও ডা: ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য হেমায়েত হোসাইন, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, জামাল উদ্দীন, শিবিরের ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের সভাপতি সাব্বির আহমদ, উত্তরের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য মু: আতাউর রহমান সরকার, মেজবাহ উদ্দীন নাঈম, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিল ও কুতুব উদ্দীন প্রমুখ। সেলিম উদ্দিন বলেন, সরকারের রহস্যজনক নীরবতার কারণেই আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার অজুহাত দেখিয়ে রিফাইনারি কোম্পানিগুলো হঠাৎ করে ভোজ্যতেলের সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। শুধু সরবরাহ সংকটের কারণেই মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে লিটারপ্রতি সয়াবিনের দাম গড়ে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। ফলে প্রতিলিটার সয়াবিন ১৮৫ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মূলত, রিফাইনারি কোম্পানিগুলো চাহিদা মতো তেল সরবরাহ করছে না। প্রতিদিন ১, ২ ও ৫ লিটার মিলিয়ে ৮ শ’ থেকে হাজার লিটারের চাহিদা থাকলেও কোম্পানি থেকে ৩ শ’ থেকে ৪ শ’ লিটারের বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। তেল লুকিয়ে রেখে মূল্যবৃদ্ধির অভিযোগও উঠেছে সরবারাহকারীসহ বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু এসব অনিয়মের সাথে সরকার সংশ্লিষ্টরা জড়িত থাকার কারণেই সরকার তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না। তিনি বলেন, মূলত, সরকারের উদাসীনতার কারণেই সার্বিক মূল্য পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতি হয়েছে। বাজারে পেঁয়াজ ৬৫ টাকা, আদা ৮৫ টাকা, চায়না রসুন ১০০ টাকা, দেশী রসুন ৭০ টাকা, শুকনা মরিচ ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সবজি ৮০-১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ঢেঁড়স-করলার দাম ঠেকেছে ১২০ টাকায়, বরবটি ১৬০ টাকা। লাউশাক, পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক, কচু শাকসহ সবধরনের শাকের বাজার এখন সাধারণ মানুষের লাগালের বাইরে। ফলে জনদুর্ভোগ এখন চরমে উঠেছে।
তিনি আরো বলেন, দেশে মূল্যস্ফীতি এখন সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। চাল, ডাল, তেল, আটা, লবণ, চিনি, পেঁয়াজ, ডিম, গোস্ত ও তরিতরকারি সহ সবকিছুতেই অগ্নিমূল্য। সরকার এক মাসের ব্যবধানে আবার নতুন করে এলপি গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনদুর্ভোগ ব্যাপকভাবে বেড়ে গেলেও সরকারের মন্ত্রীরা জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে বলে পরিহাস শুরু করেছেন। তাই এই গণবিরোধী সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি গণপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনে যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
মহানগরী আমির বলেন, সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতেই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরকারের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করা হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের রক্ষাকবজ কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করে কথিত নির্বাচনের নামে ভোটচুরির মহড়া প্রদর্শন করা হচ্ছে। তিনি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দলনিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় রাজপথে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মাধ্যমে জনগণই নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতায় দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি, অনিয়ম ও সিন্ডিকেটের কারণেই দেশে নিত্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি হয়েছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজসহ সবকিছুতেই অগ্নিমূল্যের ফলে জনদুর্ভোগ এখন চরমে উঠেছে।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেই। এসব অনিয়মের সাথে সরকার সংশ্লিষ্টরা জড়িত থাকার কারণেই সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। চরম অব্যবস্থাপনার ফলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতায় দেশে এখন নীরব দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, বিনাভোটের অনির্বাচিত সরকারের কাছে দেশের মানুষের জন্য কোনো দায়বদ্ধতা নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচিত জনগণের সরকারের কোনো বিকল্প নেই। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত চাল, ডাল, তেল পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ইত্তেফাক মোড়ে এক সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহ-সেক্রেটারি মুহা: দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান ও শামছুর রহমান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য কামাল হোসাইন, আব্দুস সালাম, ড. আব্দুল মান্নান প্রমুখসহ বিভিন্ন থানা জামায়াতের আমির ও সেক্রেটারিবৃন্দ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com