সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ন

গ্লুকোমা কেন হয়? এর লক্ষণ ও প্রতিকারের উপায় কী?

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০২২

গ্লুকোমা হলো চোখের একটি ব্যাধি। যা আপনার চোখের অপটিক নার্ভকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এই নার্ভের মাধ্যমেই আমরা চোখে দেখি। গ্লুকোমা সাধারণত ঘটে যখন চোখে তরল তৈরি হয় ও চোখের ভেতরে চাপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। যদি সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা করা না হয় তাহলে গ্লুকোমা দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিতে পারে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ হলো গ্লুকোমা। তবে দুঃখজনক হলো বেশিরভাগ রোগীই এই রোগ নির্ণয়ে বেশ দেরি করে ফেলেন। যেহেতু রোগটির তেমন গুরুতর কোনো লক্ষণ নেই, তাই রোগীও টের পান না সহজে। চোখের ভিজ্যুয়াল ফিল্ড (ভিএফ) বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়া পর্যন্ত গ্লুকোমা রোগ শনাক্ত করা যায় না।
প্রতি বছর ৬-১২ মার্চ পালন করা গ্লুকোমা সপ্তাহ। বিশ্ব গ্লুকোমা অ্যাসোসিয়েশনের বৈশ্বিক উদ্যোগে পালিত হয় দিবসটি। গ্লুকোমা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ও প্রত্যেককে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করাতে উৎসাহ যোগানো হয় এ দিবসে।
গ্লুকোমা কেন হয়? ‘গ্লুকোমার সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো বংশগত। অর্থাৎ পরিবারে কারও এই রোগ থাকলে অন্যান্যদেরও হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।’ এমনটিই জানান ভারতের গুরগাঁওয়ের ফোর্টিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সিনিয়র কনসালটেন্ট গ্লুকোমা সার্জন ডা. শিবাল।
এই রোগের অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে আছে ট্রমা বা যে কোনো অস্ত্রোপচার। যারা চশমা পরেন তাদেরও এই অবস্থা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। ডায়াবেটিস রোগী ও যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদেরও গ্লুকোমা হওয়ার ঝুঁকি বেশি। স্ট্রেরয়েড ব্যবহারের মাধ্যমে গ্লুকোমা প্রতিরোধযোগ্য বলে জানান এই চিকিৎসক। দীর্ঘক্ষণ মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহারের মাধ্যমেও কি গ্লুকোমা হতে পারে? এ বিষয়ে চিকিৎসক জানান, ‘এর থেকে গ্লুকোমা হওয়ার ঝুঁকি নেই। তবে বেশি সময় স্ক্রিন টাইম শুষ্কতা, মাথাব্যথা, চোখের স্ট্রেনের কারণ হতে পারে। শিশুদের চশমা বা অদূরদর্শীতা (মায়োপিয়া) হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।’
গ্লুকোমা কত প্রকার? ডা. শিবাল জানান, গ্লুকোমার দুটি বিস্তৃত প্রকার আছে। একটি হলো ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমা, যার অগ্রগতি বেশ ধীর। অন্যটি হলো তীব্র অ্যাঙ্গেল-ক্লোজার গ্লুকোমা, যা দ্রুত অগ্রসর হয়। ভারতীয় ও দক্ষিণ এশীয়দের মধ্যে অ্যাঙ্গেল-ক্লোজার গ্লুকোমা হওয়ার ঝুঁকি বেশি, যা অন্ধত্বের কারণ।
তবে এর ভালো দিক হলো এ ধরনের গ্লুকোমার চিকিৎসা আছে। নিরাময়মূলক লেজার চিকিৎসা গ্লুকোমার অগ্রগতি প্রতিরোধ করতে পারে। অন্যদিকে ওপেন-অ্যাঙ্গেল গ্লুকোমার রোগীদের আজীবন চিকিৎসায় থাকতে হয়।
গ্লুকোমা প্রতিরোধে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। তবে স্টেরয়েড আই ড্রপ ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। কারণ এ ধরনের আই ড্রপ চোখের স্বাস্থ্যে নেতিবাচকভাবে প্রভাব ফেলে।
নিয়মিত চোখ পরীক্ষার মাধ্যমে সহজেই শনাক্ত করা যায় গ্লুকোমা। তবে অনেকেই তা করেন না। বিশেষ করে ৪০ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য বছরে অন্তত একবার চোখ পরীক্ষা করানো জরুরি বলে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। পরিবারে গ্লুকোমার ইতিহাস থাকলে সেক্ষেত্রে আরও সতর্ক হতে হবে। সূত্র: দ্য হেলথ সাইট




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com