মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

বেক্সিমকোর কাছে ব্যাখ্যা চাইল ঔষধ প্রশাসন

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০২২

নাপা খেয়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, দায়ী হতে পারে ‘নকল ওষুধ’ 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ‘নাপা সিরাপ’ সেবনে দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়ে উৎপাদক প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। গত শনিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও পরিচালক আইয়ুব হোসেন। তিনি বলেন, যে ওষুধ খেয়ে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে, আমরা এখনো সুস্পষ্ট করে বলতে পারছি না সেটি কাদের। হতে পারে সেটি নকল, আবার বেক্সিমকো ফার্মাসিটিক্যালসেরও হতে পারে।
আইয়ুব হোসেন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে আমরা এখনই কোনো মন্তব্য করব না। যেহেতু বেক্সিমকোর নাম এসেছে, আমরা তাদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছি। তারা জানিয়েছে বিষয়টির ইনভেস্টিগেশন (তদন্ত) শেষে আমাদের জানাবে। তিনি আরও বলেন, দোকান থেকে যে ওষুধটি কেনা হয়েছিল, সেটির স্যাম্পল (নমুনা) আমরা আগামীকাল পাব। ভুক্তভোগীর কাছে সেটি রয়েছে। সেটি আমাদের হাতে এলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে। সেইসঙ্গে আমরা ওষুধেরও নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব।
অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, আমরা পুলিশের সঙ্গেও কথা বলেছি। দুই শিশুর মরদেহের পোস্টমর্টেম করে তারাও আমাদের প্রতিবেদন দেবে। সব মিলিয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য উপাত্ত যখন আমাদের হাতে আসবে তখন প্রধান কারণ জানা যাবে। এর আগে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের আরেক পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, নাপা ওষুধ খেয়ে মারা যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। কেন মারা যাবে? নাপা তো একটি ভালো ওষুধ।
তিনি বলেন, ওষুধের কোয়ালিটি কন্ট্রোল সিস্টেম মেনেই নাপা তৈরি করা হয়। কয়েক যুগ ধরে এ ওষুধ বাংলাদেশে চলে আসছে। এমনকি বাংলাদেশে হয়তো এমন কোনো মানুষ নেই, যিনি নাপা খাননি।
তিনি আরও বলেন, আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। বিষয়টির তদন্ত চলছে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ওষুধটি নকল বা মেয়াদোত্তীর্ণ হতে পারে। এ বিষয়ে নাপা সিরাপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য ফোন করা হলেও তারা সাড়া দেননি। গত ১০ মার্চ রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের ইয়াছিন খান (৭) ও মোরসালিন খান (৫) নামের দুই শিশু মারা যায়। তাদের মা লিমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, নাপা খাওয়ার পর তারা মারা গেছে। ওই ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মহিউদ্দিনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন ও ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. রফিক-উস-ছালেহীন। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুপুর সাহাকে প্রধান করে তিন সদস্যের পৃথক আরেকটি পরিদর্শন কমিটি করা হয়েছে।
নাপা খেয়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, দায়ী হতে পারে ‘নকল ওষুধ’: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে নাপা সিরাপ সেবনে দুই শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ দেশব্যাপী চাঞ্চল্যের জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনার পর সিরাপটি বিক্রি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় জেলা কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি। বিষয়টি তদন্তে ইতোমধ্যে দুটি পৃথক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মারা যাওয়া শিশুদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা বলছেন, জ্বরে আক্রান্ত হলে পাশের একটি ফার্মেসি থেকে নাপা সিরাপ এনে তাদের খাওয়ানো হয়। এরপর বমি করতে করতে একপর্যায়ে মারা যায় তারা।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের নাপা সিরাপ সেবনে মারা যাওয়ার সুযোগ নেই। ব্যবহৃত ওষুধটি নকল অথবা মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
এ বিষয়ে কথা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক ও জাতীয় ওষুধনীতি ২০১৬ প্রণয়ন উপ-কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এবিএম ফারুকের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার শিশুদেরও নাপা সিরাপ খাওয়াই। নাতি-নাতনিসহ আত্মীয়-স্বজনের সন্তানরাও খায়। ব্যক্তিগতভাবে আমি অনেকগুলো ওষুধ কোম্পানি পরিদর্শন করেছি। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসে গিয়ে দেখেছি, তারা যে সরঞ্জাম ও কাঁচামাল নিয়ে কাজ করে, সেগুলোতে খুবই কঠোরভাবে মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এবিএম ফারুক বলেন, যে ওষুধ খেয়ে দুটি বাচ্চা মারা গেল, সেটির নমুনা যদি আমাদের কাছে আসেÍ তখন হয়তো আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলতে পারব। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। তারা ধারণা করছে, ওষুধটি নকল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, নাপা ওষুধ খেয়ে মারা যাওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। কেন মারা যাবে? নাপা তো একটি ভালো ওষুধ। ওষুধের কোয়ালিটি কন্ট্রোল সিস্টেম মেনেই নাপা তৈরি করা হয়। কয়েক যুগ ধরে এ ওষুধ বাংলাদেশে চলে আসছে। এমনকি বাংলাদেশে হয়তো এমন কোনো মানুষ নেই, যিনি নাপা খাননি।
তিনি বলেন, আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। বিষয়টির তদন্ত চলছে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ওষুধটি নকল বা মেয়াদোত্তীর্ণ হতে পারে। এ বিষয়ে নাপা সিরাপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য নেওয়ার জন্য ফোন করা হলেও তারা সাড়া দেননি।
বেক্সিমকোর নাপা সিরাপের ব্যবহার নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘প্যারাসিটামলটি জ্বর, সর্দি জ্বর, ইনফ্লুয়েঞ্জা, মাথা ব্যথা, দাঁতে ব্যথা, কানে ব্যথা, শরীর ব্যথা, স্নায়ু প্রদাহজনিত ব্যথা, ঋতুস্রাবজনিত ব্যথা, মচকে যাওয়া ব্যথা, অন্ত্রে ব্যথা, পিঠে ব্যথা, অস্ত্রোপচার পরবর্তী ব্যথা, প্রসব পরবর্তী ব্যথা, প্রদাহজনিত ব্যথা এবং শিশুদের টিকাপরবর্তী ব্যথায় কার্যকর। এটি বাতজনিত ও অস্টিওআর্থ্রাইটিসজনিত ব্যথা এবং অস্থিসংযোগ সমূহের অনমনীয়তায় কার্যকর।’
তবে, ওষুধটির কিছু মিথষ্ক্রিয়া রয়েছে। “রবিচুরেট জাতীয়, বিষণ্নতারোধী ট্রাইসাইক্লিক জাতীয় ওষুধ গ্রহণকারী এবং অ্যালকোহল পানকারী রোগীদের ক্ষেত্রে অধিকমাত্রায় সেবন প্যারাসিটামলের বিপাক কমে যেতে পারে। খিঁচুনিরোধী ওষুধ এবং স্টেরয়েডজাতীয় জন্মনিরোধকের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার লিভার এনজাইমকে প্রণোদিত করে। ফলে এ জাতীয় ওষুধের সাথে একত্রে গ্রহণে ‘ফার্স্ট-পাস’ বিপাক ত্বরান্বিত হয় এবং প্যারাসিটামলের কার্যকারিতা ব্যাহত হয়।”
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘রক্তের উপাদানের ওপর যৎসামান্য প্রভাব থাকলেও সাধারণত প্যারাসিটামলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুবই কম। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অগ্নাশয়ের প্রদাহ, চামড়ায় ফুসকুড়ি ও অন্যান্য অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে।’ গত ১০ মার্চ রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের ইয়াছিন খান (৭) ও মোরসালিন খান (৫) নামের দুই শিশু মারা যায়। তাদের মা লিমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, নাপা খাওয়ার পর তারা মারা গেছে।
ওই ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মহিউদ্দিনকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন ও ফেনীর সিভিল সার্জন ডা. রফিক-উস-ছালেহীন। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ একরাম উল্লাহ জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্ত করে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।
এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুপুর সাহাকে প্রধান করে তিন সদস্যের পৃথক আরেকটি পরিদর্শন কমিটি করা হয়েছে।- ঢাকা পোস্ট




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com