সমস্ত রাজনৈতিক দলকে ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আসুন আমরা দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ রাজনৈতিক কর্মী রাজনীতিক নেতা কারো নিরাপত্তা নেই। তাই আসুন, আমাদের দেশকে রক্ষা করার জন্য, মানুষকে রক্ষা করার জন্য, স্বাধীনতার যেই আকাঙ্ক্ষা তা পূরণ করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হই। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে আরেকটি যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করে। গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে কেয়ারটেকার নাম করে মইনুদ্দিন ও ফখরুদ্দিনের যে সরকার এসেছিল। তাদেরও লক্ষ্য ছিল একটাই বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ করা এবং গণতন্ত্রহীন একটি রাষ্ট্র তৈরি করা; তাই তারা করেছে। ২০০৮ সাল থেকে তাদের সাথে যোগসাজশ করে, চক্রান্ত করে বাংলাদেশকে রাজনৈতিকহীন করে ফেলেছে, গণতন্ত্রহীন করে ফেলেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন দেশে কোনো জবাবদিহিতা নেই। আর জবাবদিহিতা নেই বলেই যথেষ্ট দুর্নীতি করছে, চুরি করছে, ডাকাতি করছে, মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিচ্ছে, সম্পদ বিদেশে পাচার করছে এবং গণ-মানুষের উপর অত্যাচার করছে এভাবে মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।
তিনি বলেন, মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। আজকে যারা টিসিবির ট্রাকের পেছনে দাঁড়ায় ন্যায্য মূল্যে পণ্য ক্রয় করার জন্য তাদের কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। কৃষকের পণ্যের মূল্য বাড়েনি, তাদের কোনো উন্নতি হয়নি। শ্রমিক ভাইয়ের মজুরি বাড়েনি, তাদেরও কোনো উন্নতি হয়নি। আজকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হকার, তাদেরও কোনো উন্নতি হয়নি। আজকে উন্নয়ন হয়েছে যারা আওয়ামী লীগের সাথে ক্ষমতার ভাগাভাগি করে লুটপাট করছে। বিএনপি বিদেশীদের কাছে ধরনা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপি বিদেশীদের কাছে ধরনা দিয়ে ক্ষমতায় আসেনি। বিএনপি জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। পরে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে প্রত্যেকবার এই দল ক্ষমতায় এসেছে জনগণের ভালোবাসা নিয়ে। আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ২০০৬ সালে ১/১১’র অবৈধ সরকার প্রতিষ্ঠা হলে বড় গলায় বলেছিলেন এই সরকার আমাদের আন্দোলনের ফসল। তখন আপনারা বলেছিলেন তাদের সমস্ত কাজ বৈধ-অবৈধ হোক আমরা বৈধতা দিয়ে দেব। তারা বৈধতা দিয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দীর্ঘ দিন আটক করে রাখা হয়েছে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে আমাদের ছয় শ’র উপরে নেতা-কর্মীকে গুম করা হয়েছে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল সালাম, গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।