পেট্রোবাংলা কর্তৃক গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাবকে অযৌক্তিক, অমানবিক, অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ভারসাম্যহীন এবং জনস্বার্থ ও গণবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করে তা নাকচ করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান বরাবর দেয়া একটি চিঠিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এ দাবি জানান। বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে গ্যাসের গণশুনানিতে অংশ নিয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বিএনপি মহাসচিবের স্বাক্ষরিত চিঠিটি হস্তান্তর করেন। চিঠিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গ্যাসের দাম ফের বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে পেট্রোবাংলা। এই মূল্য বৃদ্ধির ফলে যে জনদুর্ভোগ বাড়বে এবং সীমিত আয়ের সাধারণ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে নাভিশ্বাস উঠবে, তা বলাই বাহুল্য। করোনার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই বাজারে প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যখন আকাশচুম্বী। টিসিবির স্বল্পমূল্যের ট্রাকে যখন নি¤œবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের দীর্ঘ লাইন, ঠিক এই মুহূর্তে গ্যাসের দাম না কমিয়ে বরং বাড়ানোর সুপারিশে আমরা বিস্ময় প্রকাশ করছি। গত নভেম্বরেই বাড়ানো হলো জ্বালানি তেলের দাম। ইতোমধ্যে বাজারে জ্বালানি তেলের দাম অস্থির হয়ে উঠেছে। এলএনজির ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে ভৌতিকভাবে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিভিন্ন বিকল্প উপায়ে গ্যাসের মূল্য সমন্বয়ের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও সরকার সেদিকে যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, জনস্বার্থ ও জনকল্যাণ উপেক্ষা করে কেবলমাত্র মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা হবে কেন? উচ্চমূল্যে গ্যাস বিক্রির ফলে বিগত কয়েক বছরে এ খাত থেকে সরকারের আয় বেড়েছে কয়েক হাজার কোটি, অর্থাৎ দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। তাই জনগণের মনে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, তবে কেন এই গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তা অযৌক্তিক, অমানবিক, জনস্বার্থ ও গণবিরোধী। তারা ভুল তথ্য তুলে ধরে এই প্রস্তাব দিয়েছে। কারণ গ্যাস কোম্পানিগুলো লোকসানে নেই। একটি কোম্পানি ছাড়া (আরপিজিসিএল), এ সকল কোম্পানিই ভাল মুনাফা করেছে। তাছাড়া বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম এতোটা বাড়েনি যে এভাবে অসত্য তথ্য দিয়ে জনগণের পকেট কাটতে হবে। বিএনপি দাবি জানাচ্ছে, বৃহত্তর জনস্বার্থে পেট্রোবাংলা তথা সরকার কর্তৃক প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির বর্তমান প্রস্তাব নাকচ করা হোক।