ফরিদপুরে অভাবই কেড়ে নিলো সাব্বিরের প্রাণ, বাবা মা হারালো তাদের সন্তান এবং উপার্জনের সম্বল এক মাত্র রিকসাটি। সাব্বিরের দরিদ্র রিকশাচালক পিতার অভাবের সংসার। তিন বেলা পেট পুরে খাবারই জোটেনা। তারপর আবার পড়ালেখার খরচ। তাই স্কুল আর পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে প্রতি শুক্রবার বাবার রিকশা চালিয়ে যা আয় হতো এ দিয়েই চলতো সাব্বির বিশ্বাস (১৫) এর পড়ালেখা। কিন্তু সেই রিকশাই যেন তার জীবনে কাল হলো। শনিবার সকালে ফরিদপুর সদরের ইশান গোপালপুর-দয়ারামপুর এলাকার একটি ঘাস ক্ষেত থেকে সাব্বির বিশ্বাসের হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত সাব্বির ফরিদপুর সদর উপজেলার চরমাধবদিয়া ইউনিয়নের আছিরুদ্দিন মুন্সিরডাঙ্গী (কালুর বাজার) এলাকার বাসিন্দা। সে আলমগীর বিশ্বাসের ছেলে। মায়ের নাম সাজেদা বেগম। সাব্বির পদ্মারচর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। এলাকাবাসী, পুলিশ ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে রিকশা নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয় সাব্বির। পরে রাতে বাড়িতে না ফেরায় পরিবার-পরিজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করতে শুরু করে। পরের দিন শনিবার সকালে একটি ঘাসের ক্ষেতে সাব্বিরের মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। নিহত সাব্বিরের বাবা আলমগীর বিশ্বাস বলেন, শুক্রবার সকালে আমার সাথে তার শেষ কথা হয়। সাব্বির বলে- বাবা আমার খাতা-কলম ও স্কুলের টাকা দরকার, সবমিলিয়ে ৭ থেকে ৮থশ টাকা লাগবে। আজকে স্কুল বন্ধ, আমি রিকশা নিয়ে বের হলাম যা আয় করতে পারি আর বাকিটা তুমি দিও। তারপর সে রিকশা নিয়ে বেরিয়ে আর ফিরে আসেনি। শুক্রবার বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করি। তারপর শনিবার সকালে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আমার ছেলেও নেই, আমার রিকশাও নেই। আমার সব শেষ। সাব্বিরের চাচা মোঃ সোহেল বিশ্বাস বলেন, আমাদের যৌথ পরিবার। সাব্বির পড়ালেখায় খুব মনযোগী ছিলো। নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতে মাঝে মাঝে রিকশা চালাতো। আর এটাই তার জীবনে কাল হলো। ধারণা করা হচ্ছে রিকশা ছিনিয়ে নিতেই তাকে হত্যা করা হয়ছে। এ বিষয়ে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, খবর পেয়ে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ওই ব্যাটারি চালিত রিকশাটি ছিনতাই করতেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।